X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

ত্রিপোলির কাছেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হাফতার বাহিনীর

বিদেশ ডেস্ক
১৫ জানুয়ারি ২০২০, ১০:২৭আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:৫১

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির কাছেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা খলিফা হাফতারের বাহিনী। মঙ্গলবার রাতে লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের সামরিক মুখপাত্র মুহাম্মাদ কুনুনু এক বিবৃতিতে এ হামলার খবর নিশ্চিত করেছেন। ত্রিপোলির কাছেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হাফতার বাহিনীর
মুহাম্মাদ কুনুনু জানিয়েছেন, ত্রিপোলির দক্ষিণে সালাহ আল-দিন ও রামলা এলাকায় এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোমধ্যেই অঞ্চলটিতে হাফতার বাহিনীর ভাড়াটে সেনাদের মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রিপোলির আকাশে উড্ডয়ন করছে হাফতার বাহিনীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংযুক্ত আরব আমিরাতের ড্রোন।

মুহাম্মাদ কুনুনু বলেন, হাফতার বাহিনীকে জবাব দিতে সরকারি বাহিনী যথেষ্ট শক্তিশালী। তবে সরকার বেসামরিক লোকজনকে সংঘর্ষের সময় অঞ্চলটি থেকে চলে আসা লোকজনকে বাড়িতে না ফেরার আহ্বান জানিয়েছে।

গত নয় মাস ধরে লিবিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার ও হাফতার বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। সম্প্রতি তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দেশটির জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার। কিন্তু মঙ্গলবার চুক্তি স্বাক্ষর না করেই মস্কো ছাড়েন খলিফা হাফতার।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, খলিফা হাফতার ও তার বাহিনী যদি লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত রাখে, তাহলে তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেবে আঙ্কারা। কেননা, লিবীয় স্বজনদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। মঙ্গলবার রাশিয়া ও তুরস্কের উদ্যোগে অস্ত্রবিরতি চুক্তি হাফতার নাকচ করে দেওয়ার পর তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, লিবিয়ার সঙ্গে তুরস্কের ঐতিহাসিক ও সামাজিক সম্পর্ক রয়েছে। আঙ্কারা হস্তক্ষেপ না করলে হাফতার পুরো দেশটি দখল করে ফেলতো। আগামী রবিবার লিবিয়া পরিস্থিতি নিয়ে বার্লিনে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের বৈঠকে অংশ নেবে তুরস্ক।

জানুয়ারির গোড়ার দিকে ত্রিপোলিতে সেনা মোতায়েনের জন্য একটি প্রস্তাব পাস করে তুরস্কের পার্লামেন্ট। আমিরাত সমর্থিত হাফতার বাহিনীর হামলা মোকাবিলায় লিবিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত অনুরোধ পাওয়ার পর ওই প্রস্তাব পাস করে তুর্কি পার্লামেন্ট।

জীবনযাপনের মানের দিকে থেকে তেলসমৃদ্ধ লিবিয়া একসময় আফ্রিকার শীর্ষে ছিল। স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ছিল পুরোপুরি রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তবে যে রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা ওই ঐশ্বর্য নিশ্চিত করেছিল, সেটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ২০১১ সালে যখন পশ্চিমা সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন হয়। তারপর থেকে লিবিয়ায় চলছে সীমাহীন সংঘাত। গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর ত্রিপোলিতে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মনোনীত সরকার রয়েছে। ওই কর্তৃপক্ষকে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার বা জিএনএ নামে অভিহিত করা হয়। তবে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে রয়ে গেছে। পশ্চিমাঞ্চলে জিএনএ-এর কর্তৃত্ব থাকলেও পূর্ব ও দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চল হাফতার বাহিনী এলএনএ-এর দখলে। ২০১৯ সালের এপ্রিলে এ বাহিনী লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

প্রায় পাঁচ বছর ধরে লিবিয়ায় দুটি সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে একটি সরকারকে সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশ। আরেকটি ফিল্ড মার্শাল হাফতারের নেতৃত্বাধীন। ত্রিপোলির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে জাতিসংঘ। তুরস্ক, ইতালি ও যুক্তরাজ্য এ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। আর হাফতার বাহিনীর সমর্থনে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, রাশিয়া, ফ্রান্স, মিসর ও সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে (জিএনএ) সমর্থন করে এবং শান্তি আলোচনার আহ্বান জানায়। কিন্তু ২০১৯ সালের এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খলিফা হাফতারকে ফোন দিয়ে লিবিয়ার ব্যাপারে ‘যৌথ স্বপ্নের’ কথা বলেন।

/এমপি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
কঙ্গোতে হামলাকারী এম২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত রুয়ান্ডা: জাতিসংঘ
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে পদদলিত হয়ে ২৯ শিক্ষার্থী নিহত
মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন বিমান বাহিনীর ১২৫ সদস্য
সর্বশেষ খবর
আ.লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ সদস্য আটক
আ.লীগ নেতার বাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ সদস্য আটক
হিজরি সনের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক গভীর যে কারণে
হিজরি সনের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক গভীর যে কারণে
চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২
চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল