কোমায় থাকা রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সাই নাভানলিকে সম্ভবত বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তাকে চিকিৎসা দেওয়া জার্মানির হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২৪ আগস্ট) বার্লিনের চ্যারিতে হাসপাতালের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্লিনিক্যাল প্রমাণে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তার শরীরে বিষক্রিয়া ঘটেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক এই নেতার অবস্থা গুরুতর হলেও তার জীবন শঙ্কার মধ্যে নেই বলেও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সকালে একটি ফ্লাইটে সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে মস্কো ফেরার সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন আলেক্সাই। এর আগে বিমানবন্দরের ক্যাফেতে তিনি চা গ্রহণ করেছিলেন। তার মুখপাত্র কিরা ইয়ারমাশ অভিযোগ করেন, চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়ে থাকতে পারে। পরে বিমানটিকে জরুরি ভিত্তিতে সাইবেরিয়ার ওমস্কে অবতরণ করানো হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর তিনি কোমায় চলে যান। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় বার্লিনের চ্যারিতে হাসপাতালে।
সোমবার জার্মানির চিকিৎসকেরা আলেক্সাই নাভানলির দেহে বিষক্রিয়ার আলামত পাওয়ার কথা জানালেও রুশ চিকিৎসকদের দাবি ছিল তার শরীরে কোনও বিষ পাওয়া যায়নি। বরং আকস্মিকভাবে সুগার লেভেল কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন। তবে তার পোশাক ও আঙুলে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত রাসায়নিক পাওয়ার কথা জানান তারা।
সোমবার জার্মানির চ্যারিতে হাসপাতালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাভানলির শরীরে যে পদার্থটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে সেটি এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। আর তা করতে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। জার্মান চিকিৎসকদের আশঙ্কা, ওই পদার্থটি সম্ভবত নাভানলির স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলেছে। প্রতিষেধক ওষুধ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কৃত্রিম কোমায় রয়েছেন রাশিয়ার এই বিরোধীদলীয় নেতা। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকেরা।
উল্লেখ্য, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক আলেক্সাই নাভানলির ওপর এ ধরনের হামলার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালেও একবার তার মুখে রাসায়নিক পদার্থ লাগিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে বিক্ষোভ আয়োজনের দায়ে ৩০ দিনের কারাবাসের সময় শরীরে মারাত্মক অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়ার শিকার হন তিনি। ওই সময়েও তিনি তার ওপর বিষ প্রয়োগের অভিযোগ আনেন।