যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের দায়িত্ব পালন নিয়ে আত্মবিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, প্রতিটি ‘বৈধ’ ভোট গণনার পর দ্বিতীয় দফায়ও ট্রাম্পই সরকার গঠন করবেন। এমন মন্তব্যের মধ্য দিয়ে দৃশ্যত তিনি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিজয় প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। একপর্যায়ে নিজের আগের বক্তব্য থেকে কিছুটা সরে এসে সুর নরম করেন তিনি।
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পম্পেও বলেন, আমার আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে, আমাদের ট্রানজিশন ভালো হবে। আমরা এটি নিশ্চিত করবো যে, ২০ জানুয়ারি দুপুরে যিনিই হোয়াইট হাউজে অফিস করবেন তার জন্য সবকিছু প্রস্তুত থাকবে; যেন তিনি আমেরিকানদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে পারেন।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে পম্পেও বলেন, দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের ট্রানজিশন হবে মসৃণ। যদিও সমালোচনার মুখে পরে দৃশ্যত ওই বক্তব্য থেকে সরে আসেন তিনি।
ট্রাম্পও এখন পর্যন্ত নির্বাচনের ফল মেনে না নেওয়ার বিষয়ে অনড় রয়েছেন। তিনি বলেছেন, আইনি পথেই এর ফায়সালা হবে। তবে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ট্রাম্পের আইনি ব্যবস্থার হুমকিতে কিছুই থেমে থাকবে না।
ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিভিন্ন রাজ্যে ট্রাম্প শিবিরের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন বলেন, কোনও কিছুই ক্ষমতা হস্তান্তরকে থামিয়ে রাখতে পারবে না। যাই ঘটুক না কেন, ২০ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে; সে ব্যাপারে এরইমধ্যে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের নির্বাচনের ফল মেনে না নেওয়া বিব্রতকর।
এদিকে রয়টার্স/ইসপোস পরিচালিত এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্প নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুললেও যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ মানুষ এটি বিশ্বাস করেন না। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৮০ ভাগই বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিয়েছেন। এই ৮০ ভাগের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক।
২০ জানুয়ারি সম্ভাব্য শপথগ্রহণের পর নিজ প্রশাসনের অগ্রাধিকার তালিকা নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাইডেন। অন্যদিকে বাইডেনের এই ঘোষিত বিজয়কে উল্টে দিতে বড় ধরনের কোনও প্রমাণ ছাড়াই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলছেন ট্রাম্প। ভোট গ্রহণ ও ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ এনে এরইমধ্যে ট্রাম্প শিবিরের পক্ষ থেকে ডজনখানেক মামলা করা হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার কথা। এর আগেই বিদায়ী ও আসন্ন প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের কাজটি সেরে নিতে হয়। তবে ট্রাম্প এখনও হার মেনে না নেওয়ায় সেই সমন্বয়ের প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। সোমবার বাইডেন শিবির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে এখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন তারা।