ভারতের মহারাষ্ট্রের আলোচিত শনি শিঙ্গনাপুর মন্দিরে নারীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্দিরটির কর্তৃপক্ষ। মুম্বাই হাই কোর্টের আদেশ এবং নারী আন্দোলন কর্মীদের লাগাতার বিক্ষোভের মুখে ৪০০ বছরের প্রচলিত প্রথা ভাঙার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় তারা। মন্দির কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়, এখন থেকে নারীদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে না বা উৎসাহও দেওয়া হবে না। এর অর্থ কার্যত মন্দিরটিতে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে।
গত বছর থেকে নারীদের প্রবেশ নিয়ে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর এলাকার শনি শিঙ্গনাপুর মন্দির আলোচনায় আসে। সেবার এক নারী কৌশলে মন্দিরটিতে প্রবেশ করে পূজা করলে এক পুরোহিত মন্দিরকে ‘শুদ্ধ’ করতে বড়সড় যজ্ঞের আয়োজন করে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক এই প্রথার প্রতিবাদ জানিয়ে ‘ভূমাতা রণরঙ্গিনী ব্রিগেড’ জানুয়ারিতে ঘোষণা দিয়ে মন্দিরটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে। ওই সময় কয়েকশ নারী খালি পায়ে মন্দিরের দিকে রওয়ানা হলে অনেক দূরেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ। পরে সংগঠনটি আদালতের আশ্রয় নেয়।
১ এপ্রিল ওই মামলার রায়ে মুম্বাই হাই কোর্ট বলেছে, মন্দিরে প্রবেশ করা নারীদের মৌলিক অধিকার এবং সরকারকে (নারীদের) এই অধিকার রক্ষা করতে হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও মুম্বাই হাই কোর্টের এ আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। নারীদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দিলে ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিষয়েও সতর্ক করা হয়।
রায়ের পরদিন ভূমাতা রণরঙ্গিনী ব্রিগেডের প্রেসিডেন্ট ত্রুপ্তি দেশাইয়ের নেতৃত্বে একদল নারী মন্দিরটিতে প্রবেশের চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা তাদের বাধা দেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে পুলিশ আন্দোলনকারী নারীদের জোর করে মন্দির এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়। ওই সময় নারী আন্দোলনকারীরা মন্দিরে প্রবেশ করতে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। মন্দির কর্তৃপক্ষও হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলে জানায়। ভারতের আরও কয়েকটি মন্দিরে নারীদের প্রবেশ করতে না দেওয়ার প্রথা প্রচলিত আছে।
/এমপি/