ব্রিটেনে গত ৪০ বছরের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর্থিক সংকটে দেশটিতে জনকল্যাণমূলক প্রায় প্রতিটি খাতে সরকার বরাদ্দ কমাচ্ছে। এর মধ্যেই ব্রিটেনের মসজিদ ও মুসলিম স্কুলকে ধর্মীয় বিদ্বেষমুলক অপরাধ থেকে রক্ষায় ২৪.৫ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৩০.৫৭ মিলিয়ন ডলার) বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ড্যামিয়ান হিন্ডস এ ঘোষণা দেন।
এক বিবৃতিতে হিন্ডস জানান, ‘নিজ কমিউনিটিতে নিজের বিশ্বাস অনুশীলন করা একটি মৌলিক অধিকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন এ তহবিল উপাসনালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার খরচ নির্বাহে ব্যয় করা হবে। দুর্বল সম্প্রদায়ের ওপর বিদ্বেষমূলক অপরাধ কমাতে ও আমাদের পথ আরও নিরাপদ করতে তা সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’
যুক্তরাজ্য পুলিশের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২০-২০২১ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে নথিভুক্ত ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের ৪৫ শতাংশের লক্ষ্যবস্তু ছিল মুসলিম জনগোষ্ঠী।
এ ঘোষণার মাধ্যমে এখন থেকে উপাসনালয় সুরক্ষামূলক নিরাপত্তা তহবিল প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাজ্যের মসজিদগুলো নিরাপত্তারক্ষীদের বিল পরিশোধে আবেদন করতে পারবে। এ পাহারা পরিষেবা শুধু মুসলিমদের উপাসনালয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
আগ্রহী মুসলিম কমিউনিটি পাহারা পরিষেবা, শারীরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াও সিসিটিভি ও নিরাপত্তা বেষ্টনি উভয়টির জন্য আবেদন করতে পারবে।
গত ১৯ মে থেকে মসজিদ সুরক্ষা তহবিলের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় যা আগামী ১৬ জুলাই মাস পর্যন্ত চলবে।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় মুসলিম-বিরোধী বিদ্বেষ বা ইসলামোফোবিয়া পর্যবেক্ষণ ও সহায়তা পরিষেবা সংস্থা মেজারিং অ্যান্টি মুসলিম অ্যাটাক (টেল মামা)-এর পরিচালক ইমান আত্তা দেশটির সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
লন্ডনের সাউথ উডফোর্ড ইসলামিক সেন্টারের ইমাম হাফিজ নজমুল হক সোমবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গার্ডিং সার্ভিসের মাধ্যমে নিরাপত্তা সহায়তা নিশ্চিত করতে সরকারের এ ধরনের অতিরিক্ত সহায়তার উদ্যোগ খুবই প্রয়োজনীয় ও প্রশংসিত।
উল্লেখ্য,সম্প্রতি লন্ডনের একটি মসজিদে হামলায় দুজন মুসল্লি আহত হন। পূর্ব লন্ডনের শ্রীলঙ্কান মুসলিম সেন্টারে রমজান মাসে ইফতারের জন্য আসলে তাদের ওপর এ হামলা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ তদন্তের পর পুলিশ জানায়, একদল সশস্ত্র ইউরোপীয় আততায়ী এ হামলা চালিয়েছিল।