এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু শনাক্তে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের নির্ধারিত ফি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত বছরের নির্ধারিত ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান সই করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু নির্ণয়ের এনএস-১, আইজিজি ও আইজিএম পরীক্ষার ফি ৫০ টাকা। তবে বেসরকারি হাসপাতালে এসব পরীক্ষার ফি হবে ৩০০ টাকা। আর সিবিসি পরীক্ষার ফি ৪০০ টাকা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সরকারি হাসপাতালের জন্যও দেওয়া নির্দেশনায় বলেছে, ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ফির সময় বাড়ানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর সব ধরনের পরীক্ষার মূল্য ৫০ টাকা করার নির্দেশ ছিল। এই ফির মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলো। আগের নির্দেশনায় এই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল।
এর আগে, ২০২২ সালের নভেম্বরে ডেঙ্গু রোগীদের এনএস-১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার খরচ সরকারি হাসপাতালের জন্য ১০০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে তৎকালীন সরকার। তার আগে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হতো। তাছাড়া গত বছরের জুলাইয়ে ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় এক মাসের জন্য সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে তা বাড়িয়ে এই বছরের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিঠিতে সরকার নির্ধারিত এই ফি’র বেশি অর্থ নিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি করা হয়েছে।
আলাদা আলাদা চিঠিতে একই দিনে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য মোট ৪ দফা নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
‘বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা বিষয়ক নির্দেশনা’ শীর্ষক চিঠিতে বলা হয়, ডেঙ্গু পরীক্ষা ও এ সংক্রান্ত রক্ত পরীক্ষার জন্য বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কোনও অবস্থাতেই নির্ধারিত এই ফির থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা যাবে না। যদি এর ব্যত্যয়ের কোনও অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ডেঙ্গু পরীক্ষায় এনএস-১ ও আইজিজি এবং আইজিএম পরীক্ষার ফি ৩০০ করে আর রক্তের সিবিসি ৪০০ করে নির্ধারণ করে দেওয়া হলো।
আরেকটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। জেলার সদর হাসপাতালে শয্যা সংখ্যার বিপরীতে বর্তমানে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে। এ অবস্থায় সেখানে ৪ জন চিকিৎসককে পদায়ন করার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আর এক চিঠিতে অধিদফতর বলেছে, বরগুনা জেলায় রোগী এবং মৃত্যু বাড়ছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অধিকাংশক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগী দেরি করে হাসপাতালে এসেছেন। যার কারণে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে।
এ অবস্থায় ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এবং আক্রান্ত রোগীদের দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে সচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপক আকারে প্রচারণা চালানোর জন্য যথাযথ কার্যকর গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।