মেডিক্যাল অফিসার (ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক) নিয়োগের যোগ্যতা সংক্রান্ত মতামতের চিঠি বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিদফতর ঘেরাও করেছে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীতে এই অধিদফতর ঘেরাও করলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে অধিদফতরের মূল ফটকে সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তারা বৈষম্যের শিকার। স্বতন্ত্র কাউন্সিল ছাড়া তাদেরকে চিকিৎসা পেশায় সুনির্দিষ্ট পরিচিতি ও পেশাগত রেজিস্ট্রেশন অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। তারা বলেন, এবার আমরা দৃশ্যমান সিদ্ধান্ত চাই।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতির স্বীকৃত ছাত্র। আমাদের সনদ, ইন্টার্নশিপ, অ্যাকাডেমিক ট্রেনিং এমবিবিএসের সমমান ধরা হলেও এখনও পেশাগত সম্মান প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে চাকরি থেকে উচ্চশিক্ষা সব জায়গায় আমরা বঞ্চিত।
শিক্ষার্থীদের মতে, বাংলাদেশে প্রাচীন ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থা একদিকে যেমন লোকজ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসার নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ উৎস, অপরদিকে তা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার একটি ঐতিহ্যবাহী অঙ্গ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজও এই চিকিৎসা পদ্ধতি বৈষম্য, অবহেলা ও নীতিগত অনিয়মের শিকার।
গত ৩০ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের জন্য ইউনানি এবং আয়ুর্বেদিক বোর্ড থেকে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করতে হবে।
ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের আরও দুটি দাবি হলো— একটি পৃথক আইন প্রণয়ন এবং ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় স্বতন্ত্র কাউন্সিলর গঠন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, গত ৩০ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একপাক্ষিক ও পেশাগত মর্যাদাবিরোধী চিঠি শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভ্রান্তি ও সংকট তৈরি করেছে। এটি একটি ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীর নগ্ন চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ।
এদিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলতে পাঁচজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের কয়েকজন কর্মকর্তা। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে তাদের কর্মসূচি আরও কঠোর হবে এবং তা ধারাবাহিকভাবে চলবে।