রিমঝিম বৃষ্টিমুখর দিনে খিচুড়ি-ইলিশ খেতে কিংবা মেঘলা দিনে প্রিয় বই হাতে অবসর কাটাতে কার না ভালো লাগে! তাই বর্ষাকাল আমাদের অনেকেরই ভীষণ প্রিয় ঋতু। তবে বর্ষাকালের কিছু বিড়ম্বনাও রয়েছে। একটানা বৃষ্টিতে বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হয় ঘর-গৃহস্থালি নিয়ে। মশার উপদ্রব বাড়ার ফলে বেড়ে যায় নানা ধরনের রোগের প্রকোপও। এছাড়াও হঠাৎ আসা বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া, রাস্তায় পানি জমে ভোগান্তির শিকার হওয়ার মতো সমস্যাগুলো তো আছেই। জেনে নিন বর্ষাকালের ৫ বিড়ম্বনা ও এগুলোর প্রতিকার সম্পর্কে।
১। বাড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ
বর্ষাকালে টানা বৃষ্টি পড়তে থাকে। এতে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে বাড়ে এডিস মশার প্রকোপ। এডিস মশা ডেঙ্গু রোগের বাহক। ফলে এই সময়টায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে আশংকাজনকভাবে। সেন্টার ফর সাইকোট্রমাটোলজি অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক ডা.রিফাত আল মাজিদ জানান, এই সময় নিজ নিজ বাড়ির আশপাশ, ছাদ, বারান্দা, পরিষ্কার করিয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে এবং মশার ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করা জরুরি। আপনি নিজেরটা করে বসে থাকবেন না, আশে পাশের বাড়িওয়ালাও যেন করায় তা জানান কারন এটা করতে সে বাধ্য, একজনের অবহেলা বা নোংরা থাকার মাশুল কিন্তু আশপাশের বাচ্চাদেরকেও দিতে হবে। এই মৌসুমে পানি ভরা রাখতে হয় এমন গাছ ঘরে রাখা উচিত নয়।
২। স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়ে বাসা
ঘরবাড়ি স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়া বর্ষাকালের অন্যতম বিড়ম্বনা। এমন স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় ছত্রাক, ফাঙ্গাস ও পোকামাকড়ের আনাগোনা বাড়ে। দেয়াল থেকে খসে পড়তে শুরু করে চুনকাম। আলমারিতে রাখা পোশাকে ফাঙ্গাস দেখা দেয়। ঘরের স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর করতে দরজা জানালা খোলা রাখবেন। আলমারিতে রাখা কাপড়ের ভাঁজে দিয়ে দিন ন্যাপথালিন। এছাড়া আলমারি বা ওয়ারড্রব দেয়াল ঘেঁষে রাখবেন না। রান্নাঘরের পোকামাকড় দূর করতে প্রতিদিন ভালো করে পরিষ্কার করুন ও সপ্তাহে একদিন কীটনাশক ব্যবহার করুন। ভেজা আবহাওয়ায় চাল বা বিভিন্ন শস্যের পোকা দূর করতে কয়েকটি শুকনা মরিচ, লবঙ্গ বা তেজপাতা ফেলে দিন বয়ামের ভেতরে।
৩। কাপড় শুকাতে চায় না
দিনের পর দিন সূর্যের দেখা না মেলার কারণে ভেজা কাপড় সহজে শুকানো সম্ভব হয় না। এতে দুর্গন্ধময় ও স্যাঁতসেঁতে হয়ে পড়ে পোশাক। এই পরিস্থিতি সামলাতে কাপড় ধোয়ার পর খুব ভালো করে পানি ঝরিয়ে নিন। স্টিম আয়রন, হেয়ার ড্রায়ার কিংবা ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করে কাপড় শুকাতে পারেন। আরও কিছু পদ্ধতি মেনে রোদ ছাড়া শুকাতে পারেন কাপড়।
৪। হঠাৎ বৃষ্টির বিড়ম্বনা
অফিসে যাওয়ার পথে হুট করে আসা বৃষ্টিতে ভিজে গেছেন? এই ধরনের ভোগান্তি এড়াতে সঙ্গে অবশ্যই ছাতা রাখুন। এছাড়া জর্জেটের পোশাক পরতে পারেন। এই ফেব্রিক খুব দ্রুত শুকিয়ে যায়। রাস্তায় পানি জমে থাকে বর্ষাকালে। এই সময় তাই হিলের বদলে চটি জুতা পরুন। সম্ভব হলে অফিসে এক সেট পোশাক বাড়তি রেখে দেবেন। হঠাৎ ভিজে গেলেও যেন বদলে নিতে পারেন পোশাক।
৫। চুল ঝরে যায়
বর্ষার স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে খুশকির প্রকোপ বাড়ে। এছাড়া রোদ-বৃষ্টির কারণে বারবার ভিজে ও ঘেমে চুল আঠালো হয়ে যায়। ফলে এই সময় চুল পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। চুল ঝরঝরে রাখতে লেবুর রস লাগিয়ে রাখুন চুলে। ১০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এছাড়া আপেল সাইডার ভিনেগার, পানি ও বেকিং সোডা মিশিয়ে প্যাক তৈরি করেও লাগাতে পারেন চুলের গোড়ায়। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন কুসুম গরম পানি দিয়ে।