দূষণ, মানসিক চাপ এবং ক্ষতিকারক জীবনধারা বিভিন্নভাবে আমাদের চুলের ক্ষতি করছে। এছাড়া রাসায়নিকযুক্ত প্রসাধনীর কারণেও চুল হারাচ্ছে স্বাভাবিক সৌন্দর্য। চুলের সঠিক বৃদ্ধি এবং চুল পড়া কমানোর জন্য ভেষজ প্রতিকারগুলোর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। কারণ এগুলো যেমন কার্যকর, তেমনি নেই ক্ষতিকর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও। মজবুত ও শক্তিশালী চুলের ৫ ভেষজ যত্ন সম্পর্কে জেনে নিন।
১। রিঠা
চুলের যত্নে বহু শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে রিঠা। এটি চুল এবং মাথার ত্বককে ময়লা এবং অন্যান্য দূষণকারী উপাদান থেকে রক্ষা করে ও পরিষ্কার করে কার্যকরভাবে। পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। চুলের যত্নে নিয়মিত রিঠা ব্যবহার করলে চুল হয় মসৃণ, সিল্কি এবং ঝলমলে। কোয়ার্টার কাপ রিঠা চূর্ণ করে ২ কাপ কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। পরদিন দ্রবণটি ফুটিয়ে ঠান্ডা করুন। পুরোপুরি ঠান্ডা হলে ছেঁকে চুলে ঢালুন। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন মাথার ত্বক। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
২। আমলকী
ভিটামিন সি, আয়রন, ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যারোটিন, গ্যালিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আমলকী চুলের যত্নে অনন্য। এটি চুল পড়া এবং চুলের অকালে ধূসর হওয়া রোধ করে। ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের ফলিকলে পুষ্টি জোগায় এবং চুল শক্তিশালী করে। আয়রন, ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং গ্যালিক অ্যাসিড মাথার ত্বক এবং চুলের গোড়া গভীরভাবে পরিষ্কার করতে এবং মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালনকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। প্রয়োজন মতো আমলকীর গুঁড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এই পেস্ট চুল ও চুলের গোড়ায় লাগান। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।
৩। মেথি
মেথি হতে পারে চুলের বিভিন্ন সমস্যার কার্যকর প্রতিকার। মাথার ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে উপাদানটি। খুশকি, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে দূরে রাখার পাশাপাশি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে মেথি। ক্ষতিগ্রস্থ চুলের ফলিকল মেরামত এবং চুলের পুনঃবৃদ্ধিতেও সহায়তা করে এটি। মেথি সারারাত পর্যাপ্ত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন বেটে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল।
৪। শিকাকাই
শিকাকাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি চুলের ফলিকলগুলোকে উদ্দীপিত করতে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। মাথার ত্বকে প্রাকৃতিক তেলের ভারসাম্য বজায় রাখে শিকাকাই। এছাড়া খুশকি, চুলকানি ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে। শিকাকাই গুঁড়ার সঙ্গে প্রয়োজন মতো পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ভেজা চুলে শ্যাম্পুর মতো লাগান এই পেস্ট। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
৫। নিম
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে নিমের। খুশকি, একজিমা, সোরিয়াসিস, তৈলাক্ত মাথার ত্বক, শুষ্ক এবং চুলকানি ইত্যাদি সমস্যায় নিম চমৎকার কার্যকর। নিম পাতার গুঁড়ার সঙ্গে পানি মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। চুলের গোড়ায় এই পেস্ট লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে।
তথ্য: স্টাইল অ্যাট লাইফ