X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

জুনে আসছে ‘সান্ধ্য মাংসের দোকান’

সাহিত্য ডেস্ক
১১ জুন ২০২৩, ১৬:০০আপডেট : ১১ জুন ২০২৩, ১৬:৫৮

শামীম হোসেনের গল্পগ্রন্থ ‘সান্ধ্য মাংসের দোকান’ জুন মাসে প্রকাশ করছে প্রকাশনা সংস্থা জলধি। প্রচ্ছদ করেছেন রাজীব দত্ত। ৮০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা।

শামীম হোসেন বলেন, গত চার বছর ধরে পাণ্ডুলিপি নিয়ে কাজ করছি। এক ভিন্ন বয়ান ও ভাষাদৃশ্যের কাজ করতে চেয়েছি গল্পগুলোর মধ্যে। আশা করি পাঠকের ভালো লাগবে।

প্রকাশক নাহিদা আশরাফী বলেন, এ বইয়ের গল্পগুলো পাঠকের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ তৈরি করবে।

তিনি আরও জানান, ঢাকার কবিতাক্যাফে, বাতিঘর, প্রথমা, কলকাতার ধ্যানবিন্দু, অনুষা এবং রকমারি ও প্রথমা ডট কমে বইটি পাওয়া যাবে।

কবি ও গল্পকার শামীম হোসেনের জন্ম রাজশাহীতে। প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থের সংখ্যা ৭টি। ২০১৫ সালে ‘ধানের ধাত্রী’ গ্রন্থের জন্য কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ও ২০১৭ সালে ‘ডুমুরের আয়ু’ গ্রন্থের জন্য বিশাল বাংলা সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।


পাণ্ডুলিপি থেকে

কালো বেড়ালের বসতি

একটা বেজি দৌড়ে ঢুকে পড়ল ঝোপের মধ্যে। হাওয়ায় কলাগাছের পাতা দুলে উঠছে। পাকা ডুমুর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে মাটির ওপর। ঘাস ও বুনো জঙ্গলে বাড়ির আশপাশ ছেয়ে গেছে। শহুরে বাড়িটিতে যেন অনেকদিন কোনো যত্নের ছাপ নেই। যে কেউ দেখলেই তা বুঝতে পারবে। মানুষবিহীন বাড়িগুলোও কেমন ফ্যাকাশে হয়ে ওঠে। ঘরের স্বাস্থ্য ভেঙে ইটগুলোকে হাড়ের মতো দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে একটা একটা করে গোনা যাবে কতগুলো ইট বাড়িটির শরীরে আছে। বাইরের পলেস্তরা খসে খোবলা খোবলা ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বাড়িটি। নড়ে না, চড়ে না। দেয়াল ঘেঁষে সাপখোপ, ইঁদুরের বাসা। হঠাৎ ঘরের মানুষগুলো কোথায় যে উধাও হয়ে গেছে সেই রহস্য আজও উন্মোচিত হয়নি।

পৃথিবীতে সূর্য ওঠে, দিন আসে। দিন গড়িয়ে রাত আসে, চাঁদ ওঠে। কখনো কখনো প্রবল জোছনায় বাড়িটি সুন্দর হয়ে ওঠে। বুনো লাবণ্য নিয়ে মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। একতলা বাড়িটির মাথার ওপর কয়েকটি পিলার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের গায়ে আর মাংস লাগেনি। ফলে দোতলা হবার গৌরব সেই বাড়ির ভাগ্যে জোটেনি। কেবল মানুষের কথার সিঁড়ি বেয়ে দুলতে থাকা কলাগাছের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসা গুমোট গন্ধ নাকে লেগে আবার মিলিয়ে যায় হাওয়ার তোড়ের ভেতর।

তারপরও দিন গড়িয়ে যায়। মানুষের পরনের কাপড় ছোট হতে থাকে। কাপড় কি ছোট হয়, নাকি মানুষ বড় হয়ে ওঠে? এক সময়ের চকচকে বাড়িটি শীর্ণ রূপ পায়। বাড়ির আশেপাশে নতুন নতুন ভবন গড়ে উঠলে বাড়িটি ছোট হয়ে যায়। এক জানালার সঙ্গে আরেক জানালা গল্প জুড়ে দেয়। এক ছাদের সঙ্গে আরেক ছাদের ভাব গড়ে ওঠে। এক বাড়ির পোশাক আরেক বাড়িতে বদল হয়ে যায়। পাড়া-প্রতিবেশীর কৌতূহল দানা বেঁধে ওঠে। বাড়ি নিয়ে, ঘর নিয়ে, গাছ নিয়ে, ঘরের আসবাব নিয়ে, মানুষ নিয়ে গল্পগুলো তৈরি হয়। সেই শিশুগল্পগুলো ধীরে ধীরে ডানা মেলে। ডানায় ভর দিয়ে এক বাড়ির ঘর ডিঙিয়ে আরেক বাড়ির ঘরে প্রবেশ করে। হিসাব-নিকেশের খাতা ভরতে থাকে। নিত্যনতুন নকশায় বাড়িগুলোর রং পালটে যায়। চেনা বাড়িও মাঝেমধ্যে অচেনা ঠেকে। কলিংবেলের ডাক বুনো জঙ্গলে ঘেরা বাড়িটির দরজায় এসে লাগে। মানুষের কৌতূহল ক্রমেই বাড়তে থাকে, ঝোপের মধ্যে থেকে বেরিয়ে বেজিটি ঘরের মধ্যে ঢোকে।

ফ্যান ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ থেমে গেলে ঘরের মধ্যে গুমোট গন্ধটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। ঘরে আসার পর বেশ কয়েকবার ফ্যানটা অন্তর্ধ্যানে গেছে। ঘরের নোনাধরা দেয়াল থেকে ঝুর ঝুর করে পলেস্তরা ঝরে পড়ে। পশ্চিম কোনায় স্যাঁতস্যাঁতে ছোপ ছোপ দাগ মনে করিয়ে দেয় ঘরটির শরীর একবার ঘরের মিস্ত্রীকে দেখানো প্রয়োজন। স্যাঁতস্যাঁতে দেয়ালেই ঘড়িটা টানানো। টিক টিক করে ঘোরে ঘড়ির কাঁটা। ঘড়ির টিক টিক শব্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটা টিকটিকি ঘুরতে থাকে ঘড়ির চারপাশ ঘিরে। ঘড়ির ঠিক নিচে মেঝেতে দাঁড়িয়ে আছে কাপড়চোপড় রাখার আলমিরা। তার ওপর বসে আছে চৌদ্দ ইঞ্চি টেলিভিশন। টেলিভিশনটি বন্ধ থাকার কারণে কোনো শব্দ ঘড়ির কোলাহলকে ম্লান করছে না। ডিশ লাইনের তার বেয়ে একটা ইঁদুর ঘরের ভেন্টিলেটরে পৌঁছানোর পর তাকিয়ে আছে টিকটিকির দিকে। ঘড়ির শব্দের সঙ্গে সঙ্গে টিকটিকিও ঘুরছে।

আলমিরার চার ড্রয়ার ভরতি কাপড়। প্রথম ড্রয়ার খুলতেই ল্যাপথলিনের ভুরভুরে ঘ্রাণ ধাক্কা দিয়ে গুমোট গন্ধটাকে সরানোর যুদ্ধে নামে। বিয়ের জামদানি শাড়ি, ব্লাউজ, পেটিকোট তাকিয়ে আছে অতীতে ফেলে আসা বাসরের দিকে। সালোয়ার-কামিজ, হরেক রঙের শেমিজ, ওড়না, বক্ষবন্ধনী নিজেদের মতো চুপচাপ অপেক্ষা করছে। তাদের হাত-পায়ে কোনো জোর নেই, কেবল শরীরবিহীন পড়ে থাকা ছাড়া কিছু করার আছে বলে মনে হয় না। তবে মাঝে মাঝে তাদের ইচ্ছে হয় ড্রয়ার ডিঙিয়ে ঘরে, ঘর ডিঙিয়ে বাইরে বেরোতে। দ্বিতীয় ড্রয়ারে শার্ট-প্যান্ট, পায়জামা-পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, সেন্টোগেঞ্জি, জাঙ্গিয়া একে অপরকে ধরে তাকিয়ে আছে উপরের ড্রয়ারের দিকে। তৃতীয় ড্রয়ারে হরেক রঙের ফ্রক, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট, ছোট ছোট কয়েক জোড়া জুতা, জিন্স প্যান্ট সুবোধ বালকের মতো নিচের ড্রয়ারের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। ইঁদুরটি আবারো ডিশ লাইনের তার বেয়ে টেলিভিশনের কাছে নেমে এসেছে। একটা তীক্ষ্ণè দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে টিকটিকির দিকে। ঘড়ির শব্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টিকটিকিটা আপন মনে ঘুরছে। চতুর্থ ড্রয়ার খুলতেই ছোট্ট একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করে স্বর তুললেও তার ডাকের কোনো শব্দ হলো না। পাশেই ভারি সুন্দর এক ফুটফুটে মেয়ে ফোকলা হাসি হাসছে। একটু দূরে বাঘ হা করে তেড়ে আসছে এদিকেই। তার উল্টো পাশে একটা ছাগল ভয়ে মাথা ঘুরিয়ে রেখেছে। আরো হরেক খেলনাপাতিতে ভরতি ড্রয়ার থেকে এক অদ্ভুত গন্ধ বেরিয়ে ঘরের গুমোট গন্ধ গ্রাস করার পাঁয়তারা করছে।

আলমিরার পাশেই ছোট্ট পড়ার টেবিল। টেবিল ভরতি বই। এক কোনায় চারুকলার খাতা। নানান রঙের পেন্সিল। টেবিলের পেছনে জানালা। বন্ধ জানালায় ঠেস দিয়ে রাখা বিভিন্ন ধরনের বইপত্র। তাদের দেহের ওপর জমেছে ধুলোবালির আস্তরণ। জানালার গ্রিলে মাকড়সা বুনেছে জাল। একটা স্যাভলনের খালি বোতল, কোকাকোলার খালি ক্যান একপাশে অল্প জায়গা দখল করে নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেছে। জানালার ঠিক উপরে দেয়ালে টানানো রয়েছে একটি ড্রয়িং। একটি তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে, পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী। নদীর ওপারে গ্রাম। ছোট ছোট বাড়িঘর। ঘরভরতি মানুষ। মানুষ-ভরতি কোলাহল। পশু-পাখি। ঘাস, লতাপাতা, গরু-বকরি, হাঁস-মুরগি। কালো ফ্রেমে বাঁধানো টিয়া রঙের দেয়ালে ঝুলে আছে আস্ত একটা গ্রাম। ঘরের ভেতর ঘর। গ্রামের ভেতর বাড়ি। বাড়ির পাশে নদী। নদীর পাশে গাছ। গাছের পাশে দাঁড়িয়ে আছে কলস কাঁখে বধূ। ছবির নিচে পড়ার টেবিল। টেবিলের ওপর রাখা আছে দুইটি মাটির ব্যাংক। কাগজ কেটে তৈরি করা ফুল। চেয়ারের ওপর শুয়ে আছে কালো বেড়াল। তার পাশেই পাতা আছে খাট।

খাটের ওপর লাল-হলুদ রঙের চাদর বিছানো। লাল-কালো কভারে মোড়ানো দুটো শিমুল তুলার বালিশ। ছোট এক বালিশের পাশে ছোট দুই কোলবালিশ আড়াআড়িভাবে রাখা। খাটের বাঁপাশের জানালা বন্ধ। ডানপাশের খোলা জানালা থেকে মাঝেমধ্যে হালকা বাতাস এসে ঘরের গুমোট গন্ধটাকে তাড়িয়ে দরজার ওপাশে নিয়ে গেলেও একটু পরে পুনরায় ফিরে এসে ঘরের মধ্যে ঘুরতে থাকে। এই গুমোট গন্ধের ভেতরেই খাটের ওপর তিনটি আত্মা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে জানালার টিয়া-কমলা রঙের পর্দা নাড়িয়ে তোলে। রাত যতই গভীর হয় গুমোট গন্ধের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আত্মারা নিজেদের শরীর খোঁজায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পাশের বাড়ির জানালা দিয়ে সঙ্গমের শীৎকার ধ্বনি এ ঘরের জানালা দিয়ে মিহিভাবে প্রবেশ করে প্রথম ও দ্বিতীয় ড্রয়ারের পোশাকগুলোর কামনা জাগিয়ে দেয়। আত্মারা তখন নিজেদের শরীর খোঁজার অভিপ্রায়ে ড্রয়ারগুলোর হাতল ধরে টান মারে। পোশাকগুলো শরীরের জন্য অপেক্ষা করে। কয়েকটি তেলাপোকা খাটের পায়াতে শুড় সেঁধিয়ে নিজেদের শক্তির কসরত করতে থাকে।

ঘরের ডানপাশের জানালার ধারে কম্পিউটার টেবিল। টেবিলে বিছানো কাপড়টি ধুলোয় চিটচিটে। বেশকিছু পুরোনো সংবাদপত্র এলোমেলো। সিগারেটের প্যাকেট, দিয়াশলাই, অর্ধপোড়া কয়েল, ছাইদানি, কয়েলের স্ট্যান্ড, বাংলা অভিধান, চিনাবাদামের খোসা, চুইংগামের মোড়ক, কলমদানিতে কালিবিহীন কলম ধুলোর আস্তর মেখে নিজেরাই অচেনা হয়েছে। তার পাশেই একটি বন্ধ দরজা। দরজা বরাবর মেঝেতে পড়ে আছে একটা পুরানো বাক্স। বাক্সের ভেতর দলিল-দস্তাবেজ, পুরোনো কাগজপত্র, তেলাপোকায় কাটা শাড়ি, হাতের বালা, ইঁদুরে কাটা ছবির অ্যালবাম আগলে রেখে দিব্যি জীবিত। শুধু বাক্সের মুখে ঝুলে আছে মরিচাপড়া ছোট্ট এক তালা। বাক্সের ওপর সিনা টান করে দাঁড়িয়ে আছে জড়ানো মাদুর। বুক শেলফ ভরতি বই। কাগজপত্র। পত্রপত্রিকা। পদক-পুরস্কার। ফাইলপত্র। কুটি কুটি করে সব কেটেকুটে ইঁদুরের দখলে এখন। জংধরা টেবিল ফ্যান। সেও প্রাণ হারিয়ে বিকল।

ঘরটির দুই জানালা, দুই দরজা। এক জানালা-দরজা বন্ধ অপর দুটি খোলা। ফলে রাতদিন সমান। আধো-আঁধার সবসময়। খোলা দরজার ডানপাশে রাখা ড্রেসিংটেবিল। বিশাল আয়না ধরে আছে বহু চেহারা। অনেক স্মৃতি বুকে নিয়ে সেও ফ্যাকাশে হয়েছে। চিরুনি, লিপিস্টিক, পারফিউম, স্নো, পাউডার, মালা, ক্লিপ, রাবার, হাতঘড়ি, অলিভ ওয়েল, নারিকেল তেল, সরিষার তেল, শেভিং ক্রিম, রেজার, কাচের বালা, মতির দুল, নাকফুল, ভ্যাসলিন, চশমা, নেলকাটার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পশ্চিম কোনার স্যাঁতস্যাঁতে দেয়ালে কেবল ঘড়িটি সচল।

দরজার ওপাশে তিনজোড়া স্যান্ডেল। পাপোশ। ছেঁড়াফাটা কয়েকজোড়া জুতা। ঝাটা-বাড়ুন। ঘরমোজা ন্যাকড়া। পাটের ঝুলঝাড়ু। দরজা লাগোয়া বাথরুম। বালতি-বদনা শ্যাওলা ধরা। রেজার, শেভিং ক্রিমের কৌটায় জং ধরে প্রাচীন কোনো মূল্যবান বস্তুতে পরিণত হয়েছে। হারপিক ও ব্রাশ পাশাপাশি রাখা এক কোনায়। দাঁতমাজা তিনটি ব্রাশ, টুথপেস্ট গোল হয়ে বসে গল্পে মশগুল। বাথরুমের দরজার কিনারে রাখা জুতার বাক্স থেকে বেরিয়ে এলো ম্যাজিক বুক। প্রথম পাতা খুলতেই এক কিশোর টগবগে ঘোড়ায় চড়ে দাপিয়ে গেল ঘরের আঙিনা। কলাগাছের ঝোপের ভেতর থেকে ভেসে এলো বাঘের গর্জন। ট্যাংক নিয়ে চলছে যুদ্ধের মহড়া। ডুমুরগাছের ডালে বসে ডাকছে মোরগ। বিশাল এক ডলফিন লাফিয়ে পড়লো জলের ওপর। পু ঝিক ঝিক করে স্টেশন ছেড়ে গেল রেলগাড়ি। হেলিকপ্টারের লেজে বসে উড়ছে মোটু-পাতলু। ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে এলো এক কুকুর। কলাগাছ শুঁড় দিয়ে মুচড়ে দিল হাতি। শান্তির বার্তা নিয়ে উড়ে গেল কবুতর। মোটরবাইক নিয়ে শা শা করে ছুটে গেল যুবক। মানুষের দিকে বন্দুক তাক করে আছে একদল মানুষ। হামিংবার্ড খুঁজছে নিজের নীড়। বিদ্যুতের তারে ঝুলে আছে বাদুড়। যেন চোখের পলকে কেটে গেল কয়েকটি বছর। ম্যাজিক বুকের পাতায় লুকিয়ে ছিল এত এত প্রাণের সঞ্চার।

যখন রাত গড়িয়ে দিনের পেটে ঢুকে পড়ে কিংবা দিন গড়িয়ে রাতের পেটে ফুটিয়ে তোলে গর্ভফুল তখনও ঘরটিকে ঘিরে মানুষের কৌতূহল শেষ হয় না। কয়েক বছর কেটে গেলেও মানুষের মুখে মুখে ফেরি হয় সেই ঘরের কাহিনি। সেই ঘরে ছিল এক ফ্রিজ। ফ্রিজের ভেতর ছিল কয়েক পুঁটলি রুই মাছের পেটি, জুসের বোতল, পেপসি, পলিথিনে মোড়ানো ধনেপাতা, পটল, মিষ্টি কুমড়া, বক্সভরতি আইসক্রিম। ফ্রিজের ওপর পানি জমে তৈরি হয়েছিল ভনভনে মশার কারখানা আর ছিল তিন আত্মার বসবাস। সেই আত্মাদের ঘিরে রাখতো গুমোট গন্ধ। সেই গুমোট গন্ধের কুণ্ডলী মানুষের মনে জাগিয়ে ছিল ভয়। নোনাধরা দেয়ালে সচল ঘড়ি কেবল সময়কে ধরে রেখেছিল নিজের মতো করে। ঘড়িকে ঘিরে ঘুরতে থাকা টিকটিকি, টিকটিকির দিকে চেয়ে থাকা ইঁদুর কিংবা খাটের পায়ায় শুঁড় ঢোকানো তেলাপোকারা ঘরটিতে বানিয়ে ছিল আরাম আয়েশের ক্যারাভান।

অনেকদিন পর একরাতে সিআইডির লোকজন নতুন করে আত্মাদের শরীরের হদিশ করতে এসে ঘরে ঢুকে পেয়েছিল কালো বেড়ালের লাশ। তার ঠোঁটে তখনও লেগেছিল দুধের তরতাজা সর।

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
রাজনীতি ঠিক না হলে অর্থনীতি ঠিক হবে না: সালেহউদ্দিন আহমেদ
ড. মাহবুব উল্লাহর ‘আমার জীবন আমার সংগ্রাম’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন 
ভুটানি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
সর্বশেষ খবর
অষ্টম শ্রেণির স্কুল বাড়াতে চায় সরকার
অষ্টম শ্রেণির স্কুল বাড়াতে চায় সরকার
‘একটা দল মাথা-মুণ্ডু নেই, আজ এরে বহিষ্কার করে কাল আবার ওরে’
‘একটা দল মাথা-মুণ্ডু নেই, আজ এরে বহিষ্কার করে কাল আবার ওরে’
ভোলায় মাদ্রাসায় ও চট্টগ্রামে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান
ভোলায় মাদ্রাসায় ও চট্টগ্রামে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান
আনারসের পাতা থেকে তৈরি হবে সিল্ক জামদানি শাড়ি
আনারসের পাতা থেকে তৈরি হবে সিল্ক জামদানি শাড়ি
সর্বাধিক পঠিত
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা
এক ফ্রেমে এত ‘সুন্দরী’, স্মৃতিকাতর সকলেই!
এক ফ্রেমে এত ‘সুন্দরী’, স্মৃতিকাতর সকলেই!