X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঠান্ডা নরক || তারেক শবনম

মূল উর্দু থেকে অনুবাদ : সালেহ ফুয়াদ
২১ মে ২০১৯, ০৮:০০আপডেট : ২১ মে ২০১৯, ১৫:২৯

ভারতীয় তরুণ গল্পকার তারেক শবনম-এর জন্ম জম্মু-কাশ্মীরে। পেশায় সরকারি চাকুরিজীবী। তারেক শবনম উর্দু ও ইংরেজি ছোটকাগজ ও দৈনিকের সাহিত্যপাতায় লিখে থাকেন। তার লেখায় প্রধানত সামাজিক ও রাজনৈতিক সৌন্দর্য ও সমস্যা গল্পের রূপে ধরা দেয়। ‘গুম শুদাহ দৌলত’ এখন পর্যন্ত প্রকাশিত তার একমাত্র গল্পগ্রন্থ। ‘ঠান্ডা নরক’ গল্পটি তার ‘ঠান্ডা জাহান্নাম’ গল্পের বাংলা অনুবাদ। 

ঠান্ডা নরক || তারেক শবনম হুঁশ ফেরার পর বিশাল নিজেকে একটি জনমানবহীন স্থানে বরফের ভেতর বিধ্বস্ত অবস্থায় আবিষ্কার করে। ঠান্ডার তীব্রতায় হাত-পা অবশ হয়ে গেছে। প্রচণ্ড ব্যথায় শরীরের প্রতিটি অঙ্গের এমন দশা হয়েছে যে, মনে হচ্ছে যেন শরীরের সমস্ত রক্ত নিঙড়ে বের করে ফেলা হয়েছে। গা’টা সামান্য নড়ানোর চেষ্টা করে সে।

‘হায় রে আমার বন্দুক!’—শরীরের সঙ্গে শক্ত করে বাঁধা পাউচের দিকে চোখ পড়তেই মুখ থেকে আপসে বেরিয়ে আসে। পেরেশান হয়ে অত্যন্ত বিরক্তি নিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যথা আর অত্যাধিক দুর্বলতার কারণে দাঁড়াতে পারে না। আরো কিছুক্ষণ পড়ে থাকার পর ধীরে ধীরে গায়ে কিছুটা বল ফিরে পায়। যদিও তুষারপাত ইতোমধ্যে থেমে গেছে, সুর্যের তেজও কিছুটা বেড়েছে তবু শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। চারদিকে ভয়ঙ্কর শূন্যতা ছেয়ে আছে। বহুদূর পর্যন্ত কোনো মানুষের নামগন্ধটিও নেই। চারদিকটা পরখ করে নিজেকে মৃত্যুর মুখোমুখি আবিষ্কার করে। অত্যন্ত হতাশা ও দুশ্চিন্তা সত্ত্বেও শরীরটাকে একটু চাঙ্গা করার জন্য পাউচে বাঁধা শুকনো খাবার বের করে মুখে পুরে। স্মরণ করার চেষ্টা করে কী কেয়ামতটাই না মাথার উপর দিয়ে ঘটে গেছে।

সকাল থেকেই শীতকালীন তুষারপাতের সঙ্গে হিম বাতাসের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। আসমান জুড়ে ঘন-কালো মেঘ। আলো এতটাই কম ছিল যে, সকাল এগারোটাতেই মনে হচ্ছিল সন্ধ্যা নেমে এসেছে। চারদিকে এক অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর গর্জন! চারপাশের দ্রুত এই পরিবর্তন বিশালের উপর আশ্চর্য প্রভাব ফেলে। শক্ত বরফ দিয়ে ঘেরা বাঙ্কারে বসে ভেন্টিলেটর দিয়ে আসমানের এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখছিল বিশাল। অফিসারের ভয়ার্ত গলা তার মনোযোগ খানখান করে ভেঙে দেয়।

‘বিশাল!’

‘ইয়েস স্যার!’

‘এনি প্রবলেম?’

‘নো স্যার!’

‘গুড! হুঁশিয়ারির সঙ্গে ডিউটি করো। আমাদের সীমানায় কোনো একটি পাখিও যেন ডানা ঝাঁপটাতে না পারে!’

‘ইয়েস স্যার!’

রাজের দিকে সিগারেট বাড়িয়ে দিয়ে নিজেও আরেকটা ধরায়। ভেন্টিলেটর দিয়ে বাইরে তাকিয়ে গভীর চিন্তায় পড়ে যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই ভয়ঙ্কর জায়গাটাতে বহু দিন পর্যন্ত জীবনের কোনো চিহ্ন ছিল না। মাটি, পানি, বৃক্ষ-লতা, পশু-পাখি, জন্তু-জানোয়ার, কীট-পতঙ্গ—কিছুই ছিল না। এক কথায় এখানে কোনো ধরনের পোকামাকড় পর্যন্ত ছিল না। এমনকি সূর্যের আলোর দেখাও খুব কমই পাওয়া যেত। ঠাণ্ডার তীব্রতা এতটাই যে, গরম পানির গ্লাস মুখ পর্যন্ত নিতে না নিতেই জমে বরফ হয়ে যেত। জায়গাটায় বাতাসের এতই অভাব যে, একজন সুস্থ মানুষের পক্ষেও শ্বাস নেওয়াটা রীতিমতো কঠিন। এখানে বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হয়। মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিশেষ গরম কাপড়ে ঢেকে রাখার পরও ঠাণ্ডার কামড় থেকে রেহাই মেলে না। দেহের সঙ্গে নিশ্বাসের সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার জন্য চিবুকের নিচে হরদম আঙ্গিঠি (বিশেষ ধরনের সেঁকার হিটার) রাখতে হয়। খাবার-দাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনে জমাট বরফকে চুলা জ্বালিয়ে গলিয়ে নিতে হয়। শৌচকর্মের পর মাটির ঢেলা অথবা ডিজেল দিয়ে দ্রুত শরীর পরিষ্কার করতে হয়। নতুবা মুহূর্তের ভেতর ময়লা জমাট বেঁধে যায়। এভাবেই একেকজন প্রহরীর পেছনে রোজ রোজ লক্ষাধিক রুপি ব্যয় হয়ে যায়। অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ও প্রশিক্ষিত জোয়ান বিশালের মনে প্রায়ই একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায়, যেখানে বিপদ ও নিঃসঙ্গতা সব সময় কাঁধের উপর দীর্ঘশ্বাস ফেলছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীর মাথার উপর মৃত্যুর ভয়ানক ছায়া হরদম নৃত্য করছে, আধুনিক ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার এই যুগে এসেও এমন খতরনাক ও নিষ্ঠুর স্থানে কোটি কোটি রুপি ব্যয় করে কেন হাজার হাজার প্রহরীদের ফেলে রাখা হয়েছে! বিশেষ করে যখন দেশের নাগরিকদের কাছে এখনো উন্নত চিকিৎসা, শিক্ষা ও অন্যান্য মৌলিক উপকরণ সহজলভ্য নয়, যখন লাখ লাখ মানুষ রুটি, কাপড় আর মাথার উপর এক টুকরো ছাদের জন্য মাথা কুটে মরছে! বিপরীত দিকে আরেকটি দেশ, যার অর্থনৈতিক অবস্থা এই দেশের চেয়েও আরো করুণ, যে দেশের জনগণ দারিদ্র্য, ক্ষুধা এবং অর্থের জন্য বেঘুরে মরছে সে দেশটির প্রহরীরাও প্রতিটি মুহূর্তে অঢেল অর্থ নষ্ট করে যাচ্ছে। বাহ্যত দু’দলকেই স্ব-স্ব দেশের হেফাজতের জন্য ওখানে মজুদ করে রাখা হয়েছে। কিন্তু জায়গাটাকে বিশালের কখনো দেশের জন্য হুমকি মনে হয়নি। দু’দিকের প্রহরীদের মাঝে কখনো কোনো যুদ্ধ বাঁধেনি, এমনকি তাদের মাঝে পরস্পরের প্রতি কোনো দুশমনিও চোখে পড়েনি। বরং সুযোগ মিললে দু’তরফের প্রহরীরাই হাই-হ্যালোও করে নেয়। চোখে চোখ ফেলে একে অন্যের কাছে কখনো কখনো জিজ্ঞেস করে বসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভয়ঙ্কর উপত্যকায় আমরা আসলে আছি কী উদ্দেশ্যে? তাদের কারো কাছেই এই জিজ্ঞাসার কোনো উত্তর নেই!

চৌকিগুলোতে একবার উঁকিঝুকি মেরে অফিসার নিজের ব্যারাকে ফিরে গেলে বিশাল মুখে বাদাম পুরে হিটারে তেল ঢেলে ঢেলে বাঙ্কার উষ্ণ রাখতে ব্যস্ত সহকর্মীকে সম্বোধন করে বলে, ‘রাজ, এই সাহেবের আজ হয়েছেটা কী? অদ্ভুত কথা বলছে! এখানে শালা পশুপাখি আসবে কোথা থেকে? তুই দেখেছিস এখানে কোনোদিন কোনো পাখিকে আসতে?’

‘সাহেব বোধহয় সুন্দরী কবুতরকে স্বপ্নে দেখেছে রে! হা হা হা! দে শালা, একখান সিগারেট দে!’ রাজ কথাটা কৌতুক করে হেসে উড়িয়ে দেয়।

বিশাল প্রবল দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় দূরবীনের সাহায্যে নজরদারীতে ব্যস্ত। আচমকা আসমান থেকে বড় বড় তুষারখণ্ড ধুমধাম করে পড়তে লাগল। তুষারপাত এখানে যদিও তেমন নতুন কিছু নয় তবু আজকের আবহাওয়া এতটাই ভীতিকর যে, তুষারপাত শুরু হতেই দায়িত্বরত জোয়ান ও অফিসারদের ভেতর দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। মুহূর্তের মাঝে তুষারপাতের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বাতাস শুরু হয়। শুরু হয় মরুঝড়ের মতো ভয়ঙ্কর তুষারনৃত্য। আবহাওয়ার এমন বিধ্বংসী রূপ দেখে ভয়ে কুঁকড়ে যাওয়া অফিসাররা হাইকমান্ডকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করে। রেড এলার্টের ঘোষণা দিয়ে যে কোনো ধরনের বিপদ মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়। সমস্ত জোয়ানদের ভেতর এমন হুলুস্থুল পড়ে যায় যেন যুদ্ধের দামামা বেজে গেছে। অত্যন্ত দ্রুত বাতাসের গতি আরো ক্ষিপ্র হয়ে উঠে। সবগুলো বাঙ্কার এবং চৌকি তছনছ হয়ে যেতে থাকে। অফিসার আর জোয়ানদের ভেতর ভয়ে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়। কোনো রকম জান বাঁচানোর জন্য উপরওয়ালাকে স্মরণ করতে করতে প্রত্যেকেই দিগ্বিদিক দৌড় শুরু করে। ঝড়ো হাওয়া বিধ্বংসী তুফানের মূর্তি ধারণ করে। ওদিকে দায়িত্বরত সীমান্তরক্ষীদের চৌকিগুলোতে চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ আরো উচ্চ হয়। তাদের মালসামানা তুলার মতো বাতাসে উড়তে থাকে। বিপরীত দিকের জোয়ানদের এই দুর্দশা দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সমস্ত অফিসার ও জোয়ানেরা এক জায়গায় জড়ো হয় পরামর্শের জন্য। কিন্তু সময় তাদের এতটা সুযোগ দেয় না আর! একটি বিশাল বরফখণ্ড সীমান্ত রেখার পরোয়া না করে ঝড়ো গতিতে এসে দু’ দেশের চৌকিটৌকি এক সঙ্গে উড়িয়ে নিয়ে যায়।

বিশাল বাদাম চিবাতে চিবাতে অনেক সময় ধরে ঘটে যাওয়া এই ভয়ানক ঘটনাটি স্মরণ করে। গায়ে সামান্য বল ফিরে পেলে উঠে ধীরে ধীরে কয়েক পা হেঁটে চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। কিছুটা দূরে বরফের উপর বসা একদল মনুষ্যছায়া দেখা যায়। ভারী পায়ে বরফ ভেঙে তাদের কাছে পৌঁছলে দেখতে পায় তারই একদল সহকর্মী বরফের নিচে চাপা পড়ে আহাজারি করছে। সাহস করে বিশাল এক এক করে সবাইকে বের করে নিয়ে আসে। একে অন্যকে দেখে যেন নতুন জীবন ফিরে পায়। বাদাম চিবিয়ে চিবিয়ে ও সিগারেট টেনে টেনে শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখার চেষ্টা করে। বিশেষ ধরনের গরম কাপড় পরে থাকার কারণে বরফের পানি তার শরীর স্পর্শ করতে পারেনি। নইলে সে নিজেও বরফের মতো জমে যেত। কিছুক্ষণ দম নিয়ে শলাপরামর্শ করে ওরা অন্যদেরকেও খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। তাদের এ চেষ্টা বেশ ফলপ্রসূ হয়। এক এক করে ডজনখানেক সহকর্মীর সন্ধান পেয়ে যায়। তাদের কেউ কেউ মারাত্মক আহত, কেউ কেউ বেহুঁশ।

‘আরে, দেখ দেখ দুশমন জোয়ানরা আমাদের এলাকায় নেমে এসেছে!... ওরা মেজর স্যারকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে!’ সঙ্গীদের তালাশ করতে করতে বিশালের চোখ পড়ে তার অফিসারের উপর। শত্রুপক্ষের জোয়ানরা তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

‘জলদি চলো, আমরা ওদের বদমতলব কোনোভাবেই সফল হতে দেব না!’ চট করে বিশালের দায়িত্বের কথা মনে পড়ে যায়। সাগরে ভাসলে মানুষকে দু’তীরের দিকেই নজর রাখতে হয়। বিশালও দ্রুত কৌশলী হয়ে উঠে। আহত ও বেহুঁশ সাথীদের কাছে কিছু নিরাপত্তারক্ষী রেখে দুশমনদের থাবা থেকে অফিসারদের রক্ষা করতে বাকিদের নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়ে। কিছুদূর গিয়ে দেখতে পায় শত্রুদল একটি বড় তাবু টাঙিয়েছে। ওদের ডজনখানেক জোয়ান যাদের কেউ কেউ আবার সশস্ত্র, হন্তদন্ত হয়ে এদিক ওদিক দৌড়ছে। শত্রুদের এমন সাজ ও প্রস্তুতি দেখে রক্ত গরম হয়ে উঠে বিশালের। রাগে চেহারা থমথম করে।

‘ভালো চাও তো মেজরকে ছেড়ে দিয়ে জলদি আমাদের এলাকা ছেড়ে কেটে পড়ো!’ জীবনবাজি রেখে বিশাল চিৎকার করে শত্রুদলকে বলে।

‘আপনাদের মেজর তাবুর ভেতরে রয়েছেন...এটি আমাদের এলাকা নয়!’ বিশালের হুমকি ধরতে না পেরে ওদিকের একজন জোয়ান ঠান্ডা গলায় বলে।

কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর ওরা তাবুর ভেতর প্রবেশ করে। ওদের অফিসার খাটের উপর কম্বল মোড়াবস্থায় পড়ে রয়েছে। তার পাশে নিজেদের কয়েকজন জোয়ানও রয়েছে। অন্য খাটে ‘শত্রুদলের’ও একজন দাঁড়িওয়ালা অফিসার মারাত্মক আহত হয়ে গোঙাচ্ছে। কয়েকটি রুম হিটারকে জ্বলতে দেখে বেঁচে থাকার উপলব্ধি পাওয়া যাচ্ছে। আসলে এ দিকের নিরাপত্তারক্ষীরা একটি চৌকি থেকে এই তাবুটিসহ কিছু জিনিসপত্র কোনো রকমে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

‘স্যার, এখন পর্যন্ত আমাদের পাঁচজন জোয়ান নিখোঁজ। দু’জন নিহত।’ বিপরীতপক্ষের একজন নিরাপত্তারক্ষী ভেতরে ঢুকে উদ্বিগ্ন হয়ে আহত অফিসারকে খবর দেয়।

‘এখানে আমরা আর কেইবা জিন্দা আছি!’ অফিসার নিজে নিজেই স্বগোতোক্তি করে।

‘স্যার, রেসকিউ অপারেশন জারি রেখে নিখোঁজ জোয়ানদের সন্ধানের সর্বাত্মক চেষ্টা করব?’

‘ইয়েস!’

‘স্যার, আমাদের মাত্র দু’জন জোয়ান নিখোঁজ রয়েছে। বাকি সবাইকে পাওয়া গেছে।’ এবার বিশালের একজন সহকর্মীও তাদের আহত অফিসারকে খবরটা দেয়।

‘স্যার, এরা আমাদের সীমানার ভেতরে ঢুকে পড়েছে।’ বিশাল অফিসারকে সতর্ক করার জন্য বলে। অর্ধচেতন অফিসার কোনো জবাব দেয় না। কিন্তু অপরপক্ষের একজন জোয়ান রাগী স্বরে বলে, ‘এটি তোমাদের নয়, আমাদের এলাকা!’

‘ঝুট! আপনারা এভাবে আমাদেরকে বোকা বানাতে পারবেন না!’ বিশালও মুখের উপর জবাব দেয়। দুই পক্ষের জোয়ানদের ভেতরে তুই-তুকারি শুরু হয়ে যায়। অথচ জলের উপর জল ঢালার পর সেই জল আবার আলাদা করার মতো অসাধ্য পরিস্থিতি এখন। কোথাও কোনো সীমানা নির্ধারক চিহ্ন বেঁচে নেই। কোনো খুঁটি, কোনো ঝাণ্ডা, কোনো সীমানারেখা, কিছুই নেই! চারদিকে শুধু বরফের উঁচু উঁচু ভয়ঙ্কর ঢিবি দেখা যাচ্ছে। মাথা তুলে একেকটা টিলা চিৎকার করে করে নিজেদের একক ও প্রতিদ্বন্দ্বিহীন সম্রাট ঘোষণা করছে। তর্ক যখন তুঙ্গে, স্ব-স্ব দেশের হেফাজতের জন্য একেকজন যখন ‘মারব, নয় মরব’ অবস্থায় উপনীত হয় ঠিক তখন সেই আহত দাঁড়িওয়ালা অফিসার, যার শ্বাস নিতে সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে, অত্যন্ত ক্ষীণকণ্ঠে নিজের জোয়ানদের সম্বোধন করে বলেন, ‘বন্ধুরা, মৃত্যুর সময় কেউ মিথ্যে বলে না। আমি সত্য বলছি, যা দেখছো এর সবই ধোঁকা, ফেরেব! এ স্রেফ মিথ্যা আমিত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াই! নতুবা এই ঠাণ্ডা নরক কোনো মানুষের স্থান হতে পারে না। কখনোই না। দেশ আজ যেন নো ম্যান্স ল্যা...ল্যা...!

কথা পূর্ণ হওয়ার আগেই অফিসারের গলা চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। অফিসারের কথা শুনে তার অধীনে থাকা জোয়ানেরা বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যায়!

//জেডএস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
উত্তর কোরিয়া সফর করলেন রুশ গোয়েন্দা প্রধান
ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলবে ১৫ ফেরি, ২০ লঞ্চ
ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলবে ১৫ ফেরি, ২০ লঞ্চ
ট্রলারের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চার জন অগ্নিদগ্ধ
ট্রলারের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চার জন অগ্নিদগ্ধ
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগবে ৪৪ মিনিট
গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগবে ৪৪ মিনিট