মধ্যাহ্ন
গতকাল মধ্যাহ্নটি কেমন ছিল?
অল্প রোদ ছিল, অল্প বৃষ্টিও ছিল
খুব ঘাম ঝরছিল, ঘাম শুকিয়েও যাচ্ছিল
খুব তেষ্টা ছিল, গলা ভেজাও ছিল।
ধুলোভরা স্যান্ডেলে ছিল, কাদায় ডোবানো পাও ছিল।
কিছু মানুষ ক্লান্ত হয়ে হাঁটছিল—
আর কিছু মানুষ কাচের বাক্সে বসে তা দেখছিল।
গলির মুখে হকারটা খুব হাঁকছিল—
নিদ্রাভঙ্গে, মেয়েটি হকারকে দুষছিল।
দুরন্ত শৈশব পুকুরে ডুবছিল—
সেই পুকুরটি বৃষ্টিতে ভিজছিল।
ফেরেশতা
বাড়ির পিছনে দক্ষিণ পাশে ছিল লাশকাটা ঘরটা
দক্ষিণের জানালাটা কখনো খোলা হয়নি
কত লাশযে আসত বুড়োবুড়ি, যুবক-যুবতী কত লাশ।
ভুটুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এত লাশ দেখ ভয় লাগে না, বমি আসে না?
ভুটু আমাকে বলে, তুই কি লাশের গন্ধ পাস?
আমি বললাম, মাঝে মাঝে পাই তখন আর খেতে পারি না।
তুই কী জানিস আমি লাশ থেকে সুগন্ধ পাই, ভুটু বলে।
আমি বলি এটা কী সম্ভব না কি, সব তো পচা লাশ আসে।
ভুটু বলে, পাবি তুইও পাবি দেবশিশুর লাশ যখন আসবে তখন তোকে ডাকব।
মাতালটা বলে কি! আমি বললাম।
হঠাৎ একদিন ভোরে ভুটুর ডাকে ঘুম ভাঙল, মনে পড়ে গিয়েছিল দেবশিশুর কথা;
তড়িঘড়ি করে ভুটুর সাথে রওনা দিলাম।
লিঙ্গের বিচারে লাশটা একটা মেয়ের, যদিও লিঙ্গের বিচার করার বয়স মেয়েটির হয়নি।
ভুটু বলল, কিরে কোনো গন্ধ পাচ্ছিস? বললাম, তুমি আগরবাতি ধরিয়েছ।
নারে পাগল এতটুকু ঘর তুই খুঁজে দেখ কোথাও আগরবাতি পাবি না, ভুটু বলল।
অদ্ভুত এক সুগন্ধ নাকে লাগছে আর ফিরে যাচ্ছে, এ কি করে সম্ভব—আমি বললাম।
ও তো মানুষ না ও তো ফেরেশতা আর এ সুগন্ধ ফেরেশতার গায়ের গন্ধ, ভুটু বলল।
আর আমি ভাবছি, ওকে যারা এখানে পাঠালো তারা নিশ্চয় মানুষ!