আয়না-নগর
অশ্রু গড়িয়ে পড়লো তার ভ্রমর চোখ থেকে
চোখ কি জানে নোনা স্বাদের মানে
মিথ্যা আয়নায় যদি মুখ দেখো ও পড়শি
কি করে দেখতে পাবে
নিজেকে।
সেই পাখি
উড়ে গেলো দূর বনে দারুণ শীতের নদী
পার হয়ে
কোথাও রক্তের ঝোরা
ঝরে...
জলের ফুল
আমার শব্দগুলো হোক না আজ ফুলরেণু
মাখিয়ে দেই তোমার কপোলখানি
ইচ্ছেগুলি মেলবে বুঝি
ডানা
নরম উদাস হাওয়ায় যাবে ভেসে
হাওয়ার নদী হাওয়ার লুকোচুরি
ইস তোমাকে যাক না ছুঁয়ে
এসে।
ঢেলে দেই
এই রৌদ্রশাসিত দুপুরে, একা
ভেজা বকুলের মতো নির্জন
আমার ক্রন্দনগুলো ঢেলে দেই
পথের রেখায় আর শুকনো পাতার কারুকাজে।
ভাবিনি কখনো কোনোদিনও
এমন পলকা বাতাসে
মুছে যাবে সমস্ত ফুলবন।
পাখিযাপন
একটা ফুলের পাপড়িও যদি আমার উপর এসে পড়ে
আমি অবশ হয়ে পড়ে থাকি
একটা নির্জন বাতাসও যদি আমার কানের কাছে এসে কিছু বলতে চায়, আমি কান পাতি
এর চেয়েও গভীর কোনো দুঃখের সুরে
জানি না কোন পাখি বয়ে এনেছে এই নক্ষত্রজন্মের সুগন্ধি, ঠোঁটে করে, খড়কুটোর সাথে
জানি না কেন এমন মন কেমন করে, কেবল মন কেমন করে।
চন্দ্রস্মৃতি
শহুরে চাতালে আলো আসে কখনো-সখনো
দু-একটা পাতা পড়ে টাইলসের ব্যালকনিতে সবুজ হলুদ
তখন আমার খুব পূর্বজন্মের কথা মনে পড়ে
মায়ের ক্লান্ত মুখ, বাবার মধুক্ষরা সৌম্য দৃষ্টি
হায় আর কত জনমের নদী বুকে করে বয়ে নিলে
আমি আবার দেখতে পাবো নিজেকে
আত্মার বাঁধন খুলে দিয়ে
দেখতে পাবো নিজের ভেতরে অঙ্গার হয়ে যাওয়া
আমার স্বরূপ।
ইশারা
নিভে আসছে আলো, ধীরে ধীরে
মুদে আসছে কোলাহল, পাখির ডাক
কোথাও কি কোনো নবজন্মের ইশারা তৈরি হচ্ছে?