X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাকির কারণে সংকটে চবির ব্যবসায়ীরা

নবাব আব্দুর রহিম, চবি প্রতিনিধি
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:৩৩আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:৩৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দোকান, হোটেল, হলের ডাইনিং কিংবা ক্যান্টিনে টাকা বাকি রেখে না দেওয়ার অভিযোগের উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আর করোনা মহামারির মধ্যে টাকা বাকি পড়ায় অর্থকষ্টে পড়েছেন বলে অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন।

চবি ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির তথ্য মতে, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে দোকান রয়েছে ২১৫টি। এর মধ্যে রয়েছে খাবার হোটেল, চায়ের স্টল, মুদি ও স্টেশনারিসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান। এসব দোকানের প্রায় সবগুলোই শিক্ষার্থীদের বাকির ভারে জর্জরিত। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচল ১১টি হলে ১০টি ডাইনিং ও ৮টি ক্যান্টিন চালু রয়েছে। কারণে এই ব্যবসায়ীদের অবস্থা সংকটাপন্ন।

আলাওল হলের ডাইনিং ম্যানেজার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক ছাত্রের কাছেই টাকা পাবো, কিন্তু দেন না। এখন আমি বাকি দেওয়া বন্ধ করেছি, ফলে অনেকেই আর ডাইনিংয়ে খেতে আসেন না।’

গত ৯ জানুয়ারি কলা অনুষদ ঝুপড়ির নাজিম স্টোরের মালিক নাজিম উদ্দিন নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছিলেন, ‘বাকির কারণে ব্যবসা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে আমার।’ কিন্তু এর পরেও কোনও টাকা ফেরত পাননি তিনি।

নাজিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পোস্ট দিয়েছিলাম যাতে ছাত্রছাত্রীরা বুঝতে পারে আমি কষ্টে আছি। ভেবেছিলাম, কেউ কেউ সহযোগিতা করবে। কিন্তু কেউ টাকা ফেরত দেয়নি। আমার দোকানে এখন ৪০-৫০ হাজার টাকা বাকি পড়ে আছে৷ অনেকে ফেরত দেয়। কিন্তু দেখা যায়, পাবো তিন হাজার, ফেরত দেয় এক হাজার।’

উত্তর ক্যাম্পাসের সায়েদ স্টোরের দোকানদার মোহাম্মদ আবু সায়েদ বলেন, ‘পরে দেবো বলে চলে যায় অনেকে। এরপর আর টাকা পাওয়া যায় না। টাকা চাইলে উলটো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।’

চবি ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, ‘প্রতিনিয়ত নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিবেচনায় রেখে আমরা কোনও কিছুর দাম বাড়াতে পারছি না। ফলে আগের দামেই সবকিছু বিক্রি করছে দোকানদাররা। অথচ ছাত্রদের অনেকেই ক্ষমতার দাপটে বিল শোধ করে না। বাকি না দিলে জোর করে। দোকান মালিক-কর্মচারীদের অপদস্থ করে।’

তিনি বলেন, ‘দোকানিরা এখন খুবই অর্থকষ্টে রয়েছেন। ক্যাম্পাসের খাবারগুলোর মান উন্নয়ন না হওয়ার ক্ষেত্রেও এটি একটি বড় বিষয়। আমরা খুব শিগগিরই প্রক্টরের কাছে বিস্তারিত অভিযোগ জানাবো।’

এদিকে শিক্ষার্থীদের টাকা পরিশোধ না করার বিষয়টিকে নিন্দনীয় বলছেন ছাত্রনেতারা। শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি গৌরচাঁদ ঠাকুর অপু বলেন, ‘দোকানদারের সঙ্গে যদি শিক্ষার্থীর তেমন সম্পর্ক থাকে, তাহলে বাকি রাখতেই পারে। কিন্তু জোর করে খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যাওয়া উচিত নয়। আর এটা যদি ক্ষমতার প্রদর্শন হয় তাহলে সেটা আরও বেশি খারাপ কাজ। দোকানদার অতিরিক্ত দাম রাখলে সেটা নিয়ে কথা বলা যায়। কিন্তু টাকা না দেওয়া কিংবা ফাও খাওয়া একজন শিক্ষার্থীর কাছে কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

চবি ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘ব্যবসা লেনদেনের ওপর চলে। কেউ যদি দিনের পর দিন বাকি খেয়ে চলেন, সেটা অবশ্যই এটা নিন্দনীয়। বাকি নিয়ে পরিশোধ করলে সমস্যা নেই। কিন্তু বাকির টাকা পরিশোধ না করা ঠিক না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শহীদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনও অভিযোগ কখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবো।’

 

 

/আরকে/এমএএ/
সম্পর্কিত
বাসের ধাক্কায় চুয়েটের ২ শিক্ষার্থী নিহত, সহপাঠীদের আলটিমেটাম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য
ঝুলে আছে ঝুলন্ত সেতুর সংস্কারকাজ
সর্বশেষ খবর
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
সারা দেশে আরও ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
সারা দেশে আরও ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু: ‘অপরাধ আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে’
প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু: ‘অপরাধ আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে’
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম