X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর ৯ শিক্ষার্থীকে হলে তুলেছে প্রশাসন 

রাবি প্রতিনিধি
০১ জুলাই ২০২২, ২৩:৫৩আপডেট : ০২ জুলাই ২০২২, ০২:৩১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে অবৈধভাবে থাকা শিক্ষার্থীদের নামিয়ে ১৮ বৈধ শিক্ষার্থীদের তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।  শুক্রবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় ৯ জনকে তাদের বৈধ সিটে তোলা হয়েছে। বাকিদের তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে সিট দখল করে থাকা অবৈধ শিক্ষার্থীদের নামাতে বেগ পেতে হচ্ছে হল প্রশাসনকে। 

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা  ও হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক এবং সোহরাওয়ার্দী হল প্রাধ্যক্ষ ও হাউস টিউটররা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের হলে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

হল সূত্র ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৯৪টি আসন খালি হয়। এরপর হল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে ও ভাইভা নিয়ে অ্যাকাডেমিক ফলাফল এবং অন্যান্য বিবেচনায় ৬৬ জন শিক্ষার্থীকে হলে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে এই ৬৬ জনের মধ্যে মাত্র ২২ জনকে সিটে তুলতে পেরেছে হল প্রশাসন। এখন পর্যন্ত ৯৪টি আসনের বিপরীতে ৭২টি দখল হয়ে আছে। বৈধভাবে যাদের আসন দেওয়া হয়েছে, তারাও অনাবাসিক দখলদারদের হুমকিতে সিটে উঠতে ভয় পাচ্ছেন। এমনকি তাদের হল থেকে নামিয়ে দেওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। সিটগুলোর দখলে থাকা অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে তজড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এর পরিপ্রক্ষিতে গত ২৩ জুন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা একটি নোটিশের মাধ্যমে হলে অবস্থান করা অনাবাসিক, বহিরাগত ও অন্য হলের শিক্ষার্থীদের ২৯ জুনের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কোনও শিক্ষার্থী তার সমস্যার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ২৮ জুনের মধ্যে অভিভাবকসহ হল প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্ত অনুযায়ী কেউ দেখা করেননি।  এমনকি অনাবাসিক কোনও শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত নেমেও যাননি। পরবর্তীতে শুক্রবার বিকাল ৪টায় বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ঘোষণা  অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বিকাল ৩টা থেকে হলের বারান্দায় বিছানাপত্র নিয়ে অবস্থান নেন। 

তবে  ৫ ঘণ্টায় হলে উঠতে না পারায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে হল গেটে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।  তারা জানান, হল প্রশাসন বিকাল ৪টায় তাদেরকে সিটে তুলে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। এজন্য তারা মেস ছেড়ে আসবাবপত্র নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাদেরকে সিটে তুলে দেওয়া হয়নি, তাই তারা হল গেটে অবস্থান নিয়েছেন।

 বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাকে বিকাল ৪টায় সিটে তুলে দেওয়া হবে জানিয়েছিল। কিন্তু এখন ৮টা বাজে তাও সিটে তুলে দেওয়ার কোনও খবর নাই। রাতে কোথায় থাকবো জানি না। 

আরিফ আরও বলেন, আমার মতো অনেকে মেস ছেড়ে দিয়ে এসেছেন। এখন রাতে কোথায় থাকবে কেউ জানে না। তাই আমরা আসবাপত্র  নিয়ে হল গেটে অবস্থান নিয়েছি।

অনড় অবস্থানে ছাত্রলীগ 
বিকাল ৫টার দিকে হল গেটে আসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ। পরবর্তীতে তিনি হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর বের হয়ে  ছাত্রলীগের সভাপতি  নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, বর্তমান প্রভোস্ট স্যার সাবেক ছাত্রদল নেতা। তিনি এই হলে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধাচরণ করছে। তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হলের আবাসিকতা দেন না। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের এক কর্মীর জন্য আমি  সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু প্রভোস্ট স্যার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কর্মী শুনে তাকে হলে সিট বরাদ্দ দেননি।

শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে ৫ ঘণ্টায়ও হলে তুলতে পারেনি প্রশাসন

 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান প্রভোস্ট স্যার হলে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ নিধনের মিশনে নেমেছেন। তবে আমি ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় কোনও কর্মীকে নামতে দেওয়া হবে না। যদি কোনও কর্মীকে নামাতে হয় তবে আমাকে বহিষ্কার করেই নামাতে হবে। 

প্রাধ্যক্ষকে সংহতি জানাতে সোহরাওয়ার্দী হলে দুই শিক্ষক
এদিকে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে বৈধ শিক্ষার্থীদের সিটে তুলে দেওয়ার অভিযানের কথা শুনে প্রাধ্যক্ষকে সংহতি জানাতে সোহরাওয়ার্দী হলে আসেন দুই শিক্ষক। তারা হলেন-  আরবি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ ও  অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান।  প্রায় ঘণ্টাখানেক হলে অবস্থান করে তারা চলে যান।

এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ যে উদ্যোগ নিয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। গণমাধ্যমের সূত্রে জানতে পেরেছি। তাকে অভিযান বন্ধের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে।  আমরা এসেছি তাকে সংহতি জানাতে। আমরা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে আছি। তবে প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক বলেছেন, তারা নিজেদের মতো কাজ করছেন। তাই আমরা চলে যাচ্ছি। 

হল প্রশাসনের বক্তব্য 
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক আসতে বিলম্ব হওয়ায় শিক্ষার্থীদের হলে তুলতে বিলম্ব হয়েছে। আমরা হলে সিট পাওয়া শিক্ষার্থীদের  মধ্যে যারা এসেছিলেন সবাইকে সিটে তুলে দেবো।

 

/টিটি/
সম্পর্কিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে না মঙ্গল শোভাযাত্রা, হবে ‘কালবৈশাখী’ অনুষ্ঠান
প্রকৌশলীদের গাফিলতির কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে ধস
রাবির বি ইউনিটের ফল প্রকাশ 
সর্বশেষ খবর
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে: জাতিসংঘ
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে: জাতিসংঘ
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
বিশ্ব যকৃৎ দিবসফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
শিশু হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না: ফায়ার সার্ভিস
শিশু হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না: ফায়ার সার্ভিস
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!