কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী এবং জেলা কল্যাণ সংগঠনগুলোকে নবীনবরণ অনুষ্ঠান করার অনুমোদন দিচ্ছেন না প্রক্টর। তবে ভিন্ন কোনও আয়োজন করলে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ওই সংগঠনগুলো। এই নিয়ম বাতিলের দাবিও জানিয়েছে তারা। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, র্যাগিংয়ের আশঙ্কায় এ ধরনের অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না।
প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এক ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের আলোচিত ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। র্যাগিং নিয়ে বারবার তারা শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, নবীনদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে র্যাগিংয়ের মতো ঘটনা ঘটে। র্যাগিং হতে পারে এমন অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা এবং সংঘটিত যেন না হয় এমন বিষয় এড়িয়ে চলতে নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট।
সংগঠনগুলোর দাবি, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জেলা কল্যাণ সমিতিগুলো শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে কখনোই র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে না। বরং তারা ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করতে বিভিন্ন আয়োজন করে। এ ছাড়াও র্যাগিং প্রতিরোধে সর্বদাই সবাইকে সচেতন করে।
এদিকে, এই সিদ্ধান্ত সুস্থ সংস্কৃতি চর্চায় বাধা সৃষ্টি করবে জানান শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী ইয়াসিরুল কবির সৌরভ বলেন, ‘র্যাগিং নামক অপসংস্কৃতি বন্ধের নামে সংগঠনগুলোকে নবীন বরণ অনুষ্ঠানের অনুমতি না দেওয়া হচ্ছে না। সামাজিক সংগঠনগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা মানে অপসংস্কৃতি চর্চাকারীদের সুযোগ করে দেওয়া। এতে আরও জনসচেতনতা কমবে এবং সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা বাধাগ্রস্ত হবে। অতি দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘নবীন বরণ নামে কোনও অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়নি। আমার কাছে যে প্রোগ্রামের অনুমোদনের জন্য এসেছে আমি দিয়ে দিয়েছি। প্রক্টর অফিস থেকে কোনও নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা আমার জানা নেই।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা আছে, র্যাগিং হতে পারে এমন অনুষ্ঠান যেন এড়িয়ে চলা হয়। আমরা আশঙ্কা করছি, নবীনদের যেখানে জমায়েত করা হয় সেখানে র্যাগিংয়ের আশঙ্কা থাকে। তাই নবীন বরণ অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। কর্মশালা বা এ জাতীয় সব প্রোগ্রামের অনুমতি আমরা দিচ্ছি।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘নবীনদের বরণ নিয়ে ইতোমধ্যে আমাদের কাছে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। এই ব্যাপারে হাইকোর্টের কিছু নির্দেশনাও আছে। আমি এখন ক্যাম্পাসে নেই। তাই এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।’