রাজধানীতে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় গৃহপরিচারিকা চা শ্রমিকের কন্যা প্রীতি ওরাংয়ের মৃত্যুতে দায়ীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল পাঁচটি ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রবিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই মৃত্যুকে ‘হত্যা’ দাবি করে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিক সৈয়দ আশফাকুল হক এবং তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে নেতা-কর্মীরা ‘প্রীতি হত্যার বিচার চাই’, ‘শিশুশ্রম বন্ধ কর’, ‘ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রীর বিচার চাই’, ‘জাস্টিস ফর প্রীতি’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
কর্মসূচিতে নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদি হাসান মুন্না বলেন, ডেইলি স্টারের মতো পত্রিকা যারা মানবাধিকার, গণতন্ত্রের কথা বলে তাদের নির্বাহী সম্পাদক শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িত এটি অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। প্রীতি ওরাংয়ের মৃত্যুর কাহিনি তারা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সমঝোতা করার চেষ্টাও করা হচ্ছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় ইতঃপূর্বে একজন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার কোনও সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা বিচার হয়নি। এরপরে আবার প্রীতি ওরাংয়ের হত্যাকাণ্ড বলে দেয় দেশের শিশুরা কতটা নিরাপদ! একজন সম্পাদকের বাসায় এভাবে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দেশের শিশুশ্রম আইন কতটা কার্যকর তা বোঝা যাচ্ছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দেশে শিশুশ্রম বন্ধ হয়নি। শিশুরা সুন্দর ভবিষ্যৎ পাচ্ছে না।’ তিনিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার শাহারিয়ার আলিফ।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি আবাসিক ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে ‘মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে’ বলে অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ ঘটনায় বুধবার নিহত গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের বাবা লুকেশ ওরাং বাদী হয়ে অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে এ মর্মে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আশফাকুল ও তানিয়াসহ ওই বাসা থেকে মোট ছয় জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।