কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ও অস্বচ্ছতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় প্রশাসনিক ভবনে সংবাদ সম্মেলনটি করা হয়। সেখানে তারা প্রশাসনকে জবাব দেওয়ার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
সেখানে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান রহিম বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুনেছি, আগে ২৫-৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ হতো, রাজনৈতিক ইন্ধনে নিয়োগ দেওয়া হতো। এখন সেভাবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করলে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারবেন না। পূর্বে নিয়োগে হস্তক্ষেপ করা ইলিয়াস, তাহের, রানা, আনিস গং-রা আর কোনও শিক্ষক নিয়োগে হস্তক্ষেপ আর করতে পারবে না। নিয়োগ পরীক্ষাটা হচ্ছে অত্যন্ত হাস্যকর পদ্ধতিতে, এই পদ্ধতি আর না থাকুক।’
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ওসমান গণি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর নিয়োগ পাওয়া প্রশাসন অনেক ভুল করছে। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে কোনও ধরনের বেইমানি আপনারা করবেন না। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নতুন করে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে মাত্র তিন জন শিক্ষক। আবার অনেক বিভাগে ১০/১৫ জন শিক্ষক, আমরা এই বৈষম্য আর চাই না। আশা করবো, প্রশাসন স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেবে। আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াইনি, আমাদের দাবিগুলো জানাতে দাঁড়িয়েছি এবং রবিবারের মধ্যে প্রশাসন সঠিক জবাব না দিলে আমরা আবার আন্দোলনে নামবো।’
আরও পড়ুন: যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করেই নিয়োগের পরীক্ষায় ডাক পেলেন সাবেক শিবির সভাপতি
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফ ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্রজনতা রাজপথে যে রক্ত ঝরিয়েছে সেটি ছিল একটু সুষ্ঠু ও সুন্দর বাংলাদেশ লক্ষ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নতুন প্রশাসন এসেছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা অতীতে দেখেছি, একজনের স্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা হয়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ যে প্রক্রিয়ায় চলছে, সেটা মান্ধাতা আমলের- কোনও স্পষ্টতা নেই। শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা নেই। নিয়োগ হওয়া পর্যন্ত কীভাবে হয়েছে আমার জানতে পারি না। আমরা বলে দিতে চাই, নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কোনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে না।’
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় শর্ত পূরণ না করেও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ডাকা হয়েছে কেন্দ্রীয় ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মোবারক হোসাইনকে।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে শিক্ষার্থীরা আগামী রবিবারের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসন এবং প্ল্যানিং কমিটিকে জবাব দেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার কথাও জানান তারা।