X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১
আফসানা হত্যাকাণ্ড

লাশ ফেলে গেছে দুই তরুণ, সিসি টিভি ফুটেজ দেখছে পুলিশ

উদিসা ইসলাম
১৭ আগস্ট ২০১৬, ১৪:৫৭আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০১৬, ১৫:০৮

আফসানা ফেরদৌস

মিরপুরে সাইক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী আফসানা ফেরদৌস (২৪) হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পার হয়ে গেলেও এখনও হত্যারহস্য উদঘাটন হয়নি। সুরতহাল দেখে হত্যার ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেলেও পুলিশ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত একটি অপমৃত্যুর মামলা করে রেখেছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ হাসপাতাল এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করেছে। তাদের ধারণা, এ ফুটেজের সূত্র ধরে অচিরেই সেই দুই যুবককে শনাক্ত করা যাবে। এদিকে একটি অপরিচিত মোবাইল থেকে আফসানার স্বজনদের কাছে কখনও সমঝোতার প্রস্তাব, কখনও ‘বাড়াবাড়ি না করতে’ হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

চলছে সমঝোতা প্রস্তাব ও হুমকি

আফসানার স্বজনরা জানান, তাদের কাছে নানারকম ফোন আসছে পরিস্থিতি সমঝোতা করে নেওয়ার জন্য। তাদের অভিযোগ, এই ঘটনায় তেজগাঁও কলেজের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন সম্পৃক্ত। তার চাচাতো ভাই একাধিকবার টেলিফোনে সমঝোতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আফসানার মা বলেন, রবিনের মাও এরই মধ্যে ফোন করে তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাদের ঢাকায় আসার জন্যও বলেছেন। এদিকে স্বজনরা বলছে, অপরিচিত ফোন নম্বর থেকে তাদের ‘বাড়াবাড়ি না করতে’ হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এদিকে রবিনের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তার সবগুলো নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

কীভাবে লাশ হাসপাতালে এলো

গত শনিবার বিকেলে দুইজন যুবক সিএনজিতে করে আফসানাকে নিয়ে হাসপাতালের আসে। তবে জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তির জন্য স্ট্রেচার নিয়ে আসতে বলে তারা সিএনজির ভাড়া মেটাতে যাচ্ছে বলে সটকে পড়ে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী বলেন, কেউ রোগী রেখে পালাবে এমন মনে হয়নি, আর জরুরি রোগী দেখে আমরা ভেতরে এনে তাদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু ভেতরে আর কেউ আসেনি।

এদিকে, কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন, হাসপাতালে আনার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

পরিবার লাশ পেলো যেভাবে

আফসানার মামা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক তৌফিক ইলাহী বলেন, রাত দুটোর দিকে আমরা কাফরুল থানায় যাই। সেখানে সেসময় লাশের বিষয়ে বলার মতো কেউ ছিল না। আমরা ফেসবুক থেকে আফসানার ছবি তাদের দেখিয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করি। এসময় থানায় একজন জানান, লাশ দেখেছেন এমন একজন আছেন। তাকে ঘুম থেকে তুলে ছবিটি দেখানো হলে তিনি নিশ্চিত করেন থানায় আসা লাশটি আফসানার এবং আমাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে যেতে বলেন। পরে আমি এবং আফসানার মামা হাসানুজ্জামান মিন্টু সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করি।

গলায় ছাড়া অন্য কোথাও ক্ষত ছিল না

আফসানার মামা মিন্টু বলেন, আমার ভাগ্নির লাশে গলায় একটা দাগ ছাড়া আর কোনও দাগ দেখিনি। দেখে মনে হয় রশি জাতীয় কিছু দিয়ে তার শ্বাসরোধ করা হয়েছে। আমরা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই হত্যা মামলা করবো। পুলিশ সেরকমই পরামর্শ দিয়েছেন। আফসানার মা বলেন, আমার ভাই ও ভাতিজা আফসানার লাশ ভালমতো দেখেছে। মেয়ের কোথাও কোনও ক্ষত ছিল না। তাদের মুখ থেকে তিনি শুনেছেন, গলার দাগটা রশি দিয়ে শ্বাসরোধের মতো দেখায়।

রাত ৯টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আমাদের ঘুরিয়েছে

আফসানার মা সৈয়দা ইয়াসমিন বলেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে সৌরভ পরিচয় দিয়ে একজন ফোন (০১৬২২৪০৬৭১৩) করে জানান, আফসানা অসুস্থ তাকে নিয়ে যান। কী হয়েছে জানতে চাইলে বলে, মাত্র ৬ মাস আগে আপনার স্বামী মারা গেছে, কীভাবে বলি কথাটা। আপনার পাশে কে আছে তাকে দিন। পরে আমার ছেলেকে বলে আফসানা হাসপাতালে, তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এরপর আরও তিনবার কল করে তারা একবার ঢাকা মেডিক্যাল, একবার বাংলাদেশ মেডিক্যাল, একবার কাফরুল থানা বলে শেষে রাত দুইটার পর আল হেলাল হাসপাতালের কথা বলে। যারা ফোন করছিল তারা ফোন করেই অফ করে দিচ্ছিল বলে আমাদের দিক থেকে তাদের কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এবিষয়ে কাফরুল থানার ওসি সিকদার মোহাম্মদ শামীম হোসেন বলেন, আমরা তদন্তাধীন বিষয়ে কিছুই জানাতে পারব না। তবে আল হেলাল হাসপাতালের সামনের সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের হাতে আছে। আমরা সেগুলো দেখছি। তদন্তে উল্লেখযোগ্য কিছু অগ্রগতি হলে অবশ্যই জানানো হবে।

/ইউআই/টিএন/ 

আরও খবর:  অভিজিৎ-দীপন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সেলিমকে ধরিয়ে দিলেই ৫ লাখ টাকা

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এক থানা থেকে দুই এসআই তিন এএসআই ও এক কনস্টেবলকে প্রত্যাহার
এক থানা থেকে দুই এসআই তিন এএসআই ও এক কনস্টেবলকে প্রত্যাহার
সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ
সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ
করুণ ব্যাটিংয়ে আবার বাংলাদেশের বড় হার
চতুর্থ নারী টি-টোয়েন্টিকরুণ ব্যাটিংয়ে আবার বাংলাদেশের বড় হার
৬০ শতাংশ গাড়িচালক বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রতিবেদন৬০ শতাংশ গাড়িচালক বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া