X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

ইভিএম বিনষ্টের সিদ্ধান্ত ইসির

এমরান হোসাইন শেখ
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৫৬আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:৫৬

 

ইবিএম (ছবি: সংগৃহীত) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংরক্ষণে থাকা ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনগুলো (ইভিএম) বিনষ্ট করা হচ্ছে। ইভিএমগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় সেগুলো ধ্বংস বিনষ্ট করার পদ্ধতি ঠিক করতে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।তবে, ইভিএমগুলোর মধ্যে থেকে সচল কয়েকটি দিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে। মঙ্গলবার আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছেদ। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশন কেএম নূরুল হুদা।

কমিশন সভার কার্যপত্রে দেখা গেছে, ইভিএমগুলো আর কোনও নির্বাচনে ব্যবহার না করার পক্ষে বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইভিএমগুলো ৬ বছরেরও বেশি সময়ের পুরনো হওয়ায় এগুলোর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহারের সময় সৃষ্ট কারিগরি ত্রুটিগুলোরও সমাধান করা হয়নি। ভবিষ্যতে ইভিএম ব্যবহারে কোনও কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তা সমাধান করা কঠিন হতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই মেশিনগুলো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। এসব কারণে ইভিএম নষ্টের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ইভিএমগুলো অনেক আগের কেনা। যেগুলো ভালো পাওয়া যাবে, সেগুলো কমিশন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের একটি ওয়ার্ডে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। অচলগুলো কোনও কাজেই লাগবে না। এ জন্য বিনষ্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘এখনপর্যন্ত নতুন করে কোনও ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের প্রায় ১ হাজার ২০০-এর মতো ইভিএম রয়েছে। এর ৮০ শতাংশই নষ্ট। এগুলো ধ্বংস করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।’

ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইভিএমগুলো পুরনো হয়ে গেছে। বেশিরভাগই অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে। তাই মেশিনগুলো বিনষ্ট করার পদ্ধতি ঠিক করতে কমিশন একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী মেশিনগুলো বিনষ্টের পদ্ধতি ঠিক করা হবে।’

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সহায়তায় প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার ১০০টি ইভিএম যন্ত্র তৈরি করে শামসুল হুদা কমিশন। তবে, সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার হয়নি। দেশের ভোটারদের সঙ্গে ইভিএমের প্রথম পরিচয় ঘটে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এরপর নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার পরিষদের বেশ কিছু নির্বাচনে এই প্রযুক্তির ব্যবহার হয়। কয়েকটি নির্বাচনে ইভিএমে ত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কয়েকটি ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার হয়। এর মধ্যে রাজশাহীতে ইভিএম হ্যাক করলে নতুন বিতর্ক ওঠে। পরে প্রস্তুতকারী বুয়েটের সঙ্গেও তুমুল দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে এ ইস্যুসহ নানা বিষয়ে রকিব কমিশন। যে কারণে কমিশন ইভিএম ব্যবহার স্থগিত রাখে। ইভিএমের পরিবর্তে ডিভিএম (ডিজিটাল ভোটিং মেশিন) প্রবর্তনের উদ্যোগ নেয়। সেটাও বেশি দূর আগায়নি।

বর্তমান কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ২১ মে ডিভিএম/ইভিএম নিয়ে বৈঠক করে। তবে, কমিশন এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। পরে তারা ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি রাজনৈতিক দলের হাতে ছেড়ে দেয়। কমিশন থেকে বলা হয়, তাদের প্রস্তুতি রয়েছে তবে রাজনৈতিক দল না চাইলে তারা ইভএম ব্যবহার করবে না।

সরকারি অর্থায়নে নতুন স্মার্টকার্ড প্রকল্প

সূত্র জানায় মঙ্গলবারের কমিশন বৈঠকে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সরকারি অর্থায়নে নতুন প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব উঠেছে কমিশনে।  চলমান  স্মার্ট কার্ড প্রকল্প ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যান্স একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ)’ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ হাওয়ায় এ প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত আইডিইএ প্রকল্প আগামী ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে।

সরকারি অর্থায়নের নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ২০১৮ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যোগ্য সব নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ, ডাটাবেজ হালনাগাদকরণ, নিবন্ধিত ও নিবন্ধন যোগ্য নাগরিকদের দশ আঙুলের ছাপ ও আইরিশ গ্রহণের মাধ্যমে ডাটাবেজ শক্তিশালীকরণসহ বেশ কিছু উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের জনবল দেখানো হয়েছে, ২ হাজার ২৪ জন।

জানা গেছে কমিশন সভায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহা-পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম নতুন প্রকল্প গ্রহণের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কমিশনাররা নতুন প্রকল্পের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।’

 

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘যুক্তরাষ্ট্রে ৯০০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনা বিএনপির অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়’
‘যুক্তরাষ্ট্রে ৯০০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনা বিএনপির অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়’
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতির শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতির শ্রদ্ধা
বেসিস নির্বাচন: তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনে নারীর অংশগ্রহণ
বেসিস নির্বাচন: তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনে নারীর অংশগ্রহণ
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ