একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান আল সৌদ এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামিদ আল থানি। পরস্পর বিপরীত বলয়ে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের এই দুটি দেশের ক্ষমতাসীন নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই ভূমিধস বিজয়ের জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করাকে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবেই দেখছেন কূটনীতিবিদরা।
সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নসহ বিভিন্ন অভিযোগে কাতারের সঙ্গে এখন সাপে-নেউলে সম্পর্ক সৌদি আরবের। এসব অভিযোগে ২০১২ সালে সৌদি আরব তার রাষ্ট্রদূত কাতার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। সম্পর্কের এই অবনতি আরও বৃদ্ধি পেয়ে গত বছর মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় দেশ সৌদি আরব কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। এরপর সৌদি আরবের আহ্বানে মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বেশ কিছু দেশ কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করে। দেশটির পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও অবস্থান না নেওয়ায় প্রকারান্তরে কাতারের সঙ্গে আগের সম্পর্ক অটুট থাকে বাংলাদেশের। এ কারণে উভয় দেশ থেকেই অভিনন্দন ও সমর্থন জানিয়ে শেখ হাসিনাকে ফোন করা হয়।
এ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য কূটনীতি বিষয়ে অভিজ্ঞ একজন কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য। আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে যেমন সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছি তেমনি কাতারের খারাপ সময়ে আমরা পাশে ছিলাম।’
তিনি বলেন, গত আড়াই বছরে প্রধানমন্ত্রী চারবার সৌদি আরব সফর করেছেন এবং এরমধ্যে দুটি সফর ছিল দ্বিপক্ষীয়। সৌদি আরবের আগ্রহ আছে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করার এবং সন্ত্রাস দমনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।
তিনি বলেন, সৌদি আরব যখন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে তখন সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিশর, লিবিয়া, ইয়েমেন, মালদ্বীপ, মরিশাস, মৌরিতানিয়া ও কমোরোসও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। জর্ডান তার দূতাবাসের আকার ছোট করে ফেলে এবং ফিলিপাইন ঘোষণা দেয় তারা কাতারে আর কোনও শ্রমিক পাঠাবে না। তবে সেই সময়ে কাতারের পক্ষে বাংলাদেশ কোনও অবস্থান না নিলেও নেতিবাচক কোনও অবস্থানও নেয়নি, কাতার সেটি মনে রেখেছে।
মঙ্গলবার সৌদি আরবের বাদশা ও ক্রাউন প্রিন্স টেলিফোনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাওয়া নিরঙ্কুশ বিজয়ের জন্য অভিনন্দিত করেন। তারা উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার যুদ্ধে শেখ হাসিনার সাফল্য কামনা করেন।
আর সন্ধ্যায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান কাতারের আমির। তিনিও জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। দুই নেতা পরস্পরের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।