X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

অবস্থান সংহতের চেষ্টা করছে ইরান

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৫ জানুয়ারি ২০২০, ০২:০৭আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:৩৬

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ( ছবি: সংগৃহীত) ইরানের আল কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাশেম সোলাইমানি যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় গত ৩ জানুয়ারি ইরাকে নিহত হন। ওই হামলার পর কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল ইরান। কিন্তু ৮ জানুয়ারি ইরানে ইউক্রেনের একটি বাণিজ্যিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৮০ জন নিহত হওয়ার পর কিছুটা বিপাকে পড়ে দেশটি। নিজেদের রকেট হামলায় ওই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করে নেয় ইরান এবং একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতেও সম্মত হয়। এরমধ্যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয় ইরানে। এই প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে টেনশন কিছুদিন চলবে এবং ইরান নিজেদের অবস্থান সংহত করার চেষ্টা করবে।

এদিকে, ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার পর কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও নিজ দল রিপাবলিকানের মধ্যেই ইরান ইস্যুতে ট্রাম্পের প্রতি অসন্তোষ আছে।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মাদ তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘টেনশন কিছু দিন চলবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কীভাবে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে তার ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি।’

ইউক্রেনের বাণিজ্যিক বিমান দুর্ঘটনায় ইরান কতটুকু বিপাকে পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক ধাক্কা তারা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে। দোষ স্বীকার করে তারা প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে। কারণ, এর ফলে বিষয়টি স্বচ্ছ হয়েছে।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ইরানের শাসকগোষ্ঠী বিক্ষোভের মুখোমুখি হচ্ছে এটি ঠিক, কিন্তু ইরান সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দেবে বলেও মনে হয়।’

ইরানের নিউক্লিয়ার চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই স্বাভাবিক। ইরান ২০১৫ সালে এই চুক্তিতে রাজি হয়েছিল, কারণ সেখানে তাদের স্বার্থ ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র একতরফা চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়ে পুনরায় অবরোধ আরোপ করেছে। এতে ইউরোপের দেশ বা তাদের কোম্পানিগুলোর পক্ষে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’ এ পরিস্থিতিতে চুক্তি থেকে ইরানের বের হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না বলে মনে করেন সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।

লিবিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ‘ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্তের পুরো পয়েন্ট যুক্তরাষ্ট্র পাচ্ছে না, কারণ অনেকে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র গোটা বিষয়টি শুরু না করলে এ ঘটনা ঘটতো না।’ ইরান রক্ষণাত্মক কূটনীতির বদলে প্রজ্ঞার সঙ্গে গোটা বিষয়টিকে মোকাবিলা করছে বলেও মনে করেন সাবেক ওই রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, ‘ইরান নিজেদের দোষ লুকায়নি এবং তারা এর সঙ্গে জড়িত ৩০ জনের বেশি লোককে গ্রেফতার করেছে।’

ইউক্রেনিয়ান বা কানাডিয়ানদের প্রতিক্রিয়া জোরালো নয় জানিয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘ইরান বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া এবং পরবর্তী পদক্ষেপ ভালোভাবে নিয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।’

ঘটনাপ্রবাহ কোনদিকে যাচ্ছে জানতে চাইলে সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, ‘পর্দার অন্তরালে অনেক কিছু হচ্ছে। তবে এর পরিণতি কী হবে, সেটি বলা মুশকিল। কাতারের আমির ইরান সফর করেছেন এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরান সফরের পর সৌদি আরব সফর করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘৮ জানুয়ারি ইরাকে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছিল ইরান। এর ফলে ওই আক্রমণে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
গোটা ঘটনায় ইরানি জনগণের দুর্ভোগ বাড়বে, কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের যে দুর্বলতাগুলো আছে, সে বিষয়ে ইরান সরকারের পরিষ্কার ধারণা আছে এবং পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে ইরান সম্ভবত ওই দুর্বল জায়গাগুলোতে আক্রমণ করতে দ্বিধা করবে না বলে মনে করেন সাবেক এই রাষ্ট্রদূত।

/আইএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র
এক উপজেলায় ১৩ প্রার্থীর সবাই আ. লীগের
এক উপজেলায় ১৩ প্রার্থীর সবাই আ. লীগের
শিরোপাজয়ী দল কি কোটি টাকা পাবে?
ফিরছে সুপার কাপশিরোপাজয়ী দল কি কোটি টাকা পাবে?
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে ইউক্রেন: গোয়েন্দা কর্মকর্তা
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে ইউক্রেন: গোয়েন্দা কর্মকর্তা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ