X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

'করোনার সঙ্গে বসবাস, মাস্কেই সুরক্ষা'

জাকিয়া আহমেদ
২৮ অক্টোবর ২০২০, ১৩:০০আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২০, ১৩:৪৬

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন করোনা সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকি থাকার পরেও সারাদেশে মাস্ক ব্যবহারে চরম অনীহা দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাস্ক ছাড়া সেবা দেওয়া বন্ধের আদেশ দিয়েছে সরকার। এছাড়া গণপরিবহন ও জনসমাগম হয় এমন স্থানেও মাস্কের ব্যবহারের বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত এর বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সরকার এতদিন চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ কাজে জনসম্পৃক্ততা অর্জনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এর দায় জনগণের নয়, সরকারের। এ বিষয়ে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করার বিকল্প নেই। জনগণকে বোঝাতে হবে, এই মহামারি থেকে বাঁচতে ‘মাস্ক মাস্ট’। করোনা নিয়ন্ত্রণে মাস্ক ব্যবহারের কোনও বিকল্প নেই।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কথা শুরু থেকে জানিয়ে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশেও জনস্বাস্থ্যবিদ থেকে শুরু করে সরকার এ কথা বলে আসছেন। তবে গত আট মাসের মধ্যে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও তারপর থেকেই এতে অনাগ্রহ তৈরি হয় সর্বসাধারণের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি মানুষ সুরক্ষিত নয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ সুরক্ষিত নয়।’ অথচ রাস্তায় বের হলে খুব কম মানুষ পাওয়া যাবে, যারা নিয়ম করে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরছেন।

এক্ষেত্রে রাজধানীর বাইরের চিত্র বেশি ভয়াবহ। কেউই স্বাস্থ্যবিধির কোনও তোয়াক্কা করছেন না। সবাই করোনার আগের সময়ের মতো জীবনযাপন করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সভা, সেমিনার, বাজার, খেলার মাঠ কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠান কোথাও সচেতনতামূলক মাস্কের ব্যবহার নেই। অথচ করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন ৪২ জন। জেলা প্রশাসন বলছে, গত সাত মাসে স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ে এক হাজার ৮২২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এক কোটি ৪২ হাজার ৩২০ টাকা জরিমানা আদায় করা হলেও চারপাশে যাদেরই দেখা যায় কারও মুখেই মাস্ক নেই।

পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা রিকশাচালক আবদুর রশিদ মাস্ক কিনেও পরছেন না। তিনি বলেন, ‘৯০ ভাগ লোক মাস্ক ব্যবহার করছেন না। মোরা যেমন-তেমন, অনেক ভদ্দর লোকরাও মাস্ক ব্যবহার করেন না।’ পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানান, করোনা পরিস্থিতি অনেক দিন বিরাজ করার কারণে মানুষের উদাসীনতা দেখা দিয়েছে।

দিনাজপুরেও মাস্কের ব্যবহার নেই। আবার কারও মুখে থাকলেও তা রয়েছে থুতনির নিচে। গত দুই মাস আগেও যেখানে মাস্ক পরা না থাকলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করলেও এখন এসবের কিছুই নেই।

গোপালগঞ্জে মাস্ক পরলে লোকজন তার দিকে একটু অন্য দৃষ্টিতে তাকায়। সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না কোথাও। মাস্ক পরছে না ১০ ভাগ মানুষও।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভায় জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে শৈথিল্য নিয়ে আলোচনা হয় জানিয়ে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোভিড-১৯ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে এক ধরনের শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে। আর মানুষকে সচেতন করতে এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মাস্ক বিষয়ক ক্যাম্পেইন দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়।’

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনায় তিন জন শনাক্তের কথা জানায় সরকার। তার ঠিক ১০ দিন পর গত ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর কথা জানায়।  গত ২৪ ঘণ্টায় (২৪ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে ২৫ অক্টোবর সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনা শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৩০৮ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮১৫ জন শনাক্ত হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৩ জন, এ নিয়ে করোনায় মোট ৫ হাজার ৮০৩ জনের মৃত্যু হলো। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৫৪৪ জন, এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ১০৭ জন। রবিবার (২৫ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে চাইলে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘যার লক্ষণ ও উপসর্গ নেই, তাকে আক্রান্ত বলে ধরছি না। তাই কে আক্রান্ত আর কে আক্রান্ত নন, সেটা না ধরে প্রত্যেকের মাস্ক পরা উচিত এবং সঠিকভাবে পরা উচিত।’

‘বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে কোভিড নিয়ন্ত্রণ আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হবে’—বলেন অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা।

সামনে শীতের মৌসুমে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে বলে যখন জনস্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তখনই মাস্ক ছাড়া কোনও সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। রবিবার (২৫ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘চারদিকে ম্যাসিভ ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হয়েছে, সব স্তরেই। আমাদের যতগুলো ইনস্টিটিউশন আছে, লোকাল বা অর্গানাইজেশনাল প্রতিষ্ঠান সব জায়গায় নির্দেশনা দিয়েছি “নো মাস্ক নো সার্ভিস”।’

তিনি বলেন, ‘সব প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, শপিংমল, স্কুল, সামাজিক বা ধর্মীয় সম্মেলনে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে–এই নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি আমরা। সরকারি-বেসরকারি অফিসের বাইরে বড় একটা পোস্টার দেওয়া থাকবে– মাস্ক ছাড়া প্রবেশ এবং সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন না।’ একই সঙ্গে সব মসজিদে অন্তত দুবার নামাজের পর মাস্ক পরার বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আদেশ প্রচার করতে হবে, আলেম-ওলামারাও এর সঙ্গে একমত বলে জানান তিনি।

সচিব বলেন,  ‘এছাড়া গণপরিবহনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সড়ক, নৌপরিবহন ও রেল সচিবের সঙ্গে কাল-পরশুই বসবো। সেখানে একটা সিদ্ধান্ত নেবো। “নো মাস্ক নো সার্ভিস” এটা অলরেডি কনভে করা হয়ে গেছে।’

এটির বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার নানাভাবেই চেষ্টা চালাচ্ছে। একাধিকবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে জোর জবরদস্তি না করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাস্ক ছাড়া সেবা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন হলে মাস্কের ব্যবহার অনেকটা নিশ্চিত হবে।’

‘করোনা তেমন কোনও রোগ নয়, আমরা খুব ভালো করছি– বলার পাশাপাশি রোগী শনাক্ত, রোগীর সংস্পর্শে আসাদের ট্রেসিং না করা, অ্যান্টিবডি-অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু না করাসহ বিভিন্ন কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যার কারণে মানুষ করোনা নিয়ে ভয় হারিয়েছে, অসচেতন হয়েছে।’ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তবে এ সিদ্ধান্ত ভালো, কিন্তু একে বাস্তবায়িত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ আতঙ্কে থাকলেই কেবল নিয়ম মানবে। তাই এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগের তৎপরতা বাড়াতে হবে, মনিটরিং-সুপারভিশন করতে হবে। জনসম্পৃক্ততা এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’

ঢাকা সিটিতে কেউ মাস্ক ছাড়া বাইরে যেতে পারবে না– এ ঘোষণা দেওয়া দরকার দুই মেয়রের মন্তব্য করে অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘এর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পুলিশ বিভাগ, রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এলাকার কাউন্সিলরদের কাজে লাগতে হবে। আর দুই মেয়রের এমন ঘোষণার পর ঢাকাবাসীর সাধ্য হবে না মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে।’

বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘আর সারাদেশের মানুষকে চিন্তা করে ইউনিয়ন কাউন্সিল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয় রাজনীতিকদের কাজে লাগিয়ে পুরো দেশের প্রতিটি গ্রামে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিটি পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রকে কাজে লাগাতে হবে শহরের মানুষকে বাধ্য করতে। পাশাপাশি সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, নির্মূল ও প্রতিরোধ আইন বাস্তবায়নে পুলিশকে ব্যবহার করতে হবে, তাহলেই মানুষ মাস্ক পরবে।’

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এতদিন কেন মানুষ মাস্ক পরার নির্দেশনা মানেনি– সেটা খোঁজার জন্য সময় নষ্ট না করে এখন কীভাবে মানানো যায় সে বিষয়ে কথা বলা দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন এ নিয়ে সামাজিক আন্দোলন করা উচিত। আর সরকারের জন্য যদি বসে থাকতে হয় তাহলে আগেও হয়নি, এখনও হবে না। সিভিল সোসাইটি, এনজিও, গ্রাম পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে সামাজিক এ আন্দোলনের জন্য। তবে বিনা পয়সায় মাস্ক তৈরি করে বিতরণ করার কার্যক্রম নিতে হবে সামাজিক আন্দোলনে।’

‘আমাদের প্রায় চার হাজার পোশাক কারখানা রয়েছে। প্রতিটি কারখানাকে যদি উলেন কাপড় ছাড়া ওয়েস্ট কাপড় দিয়ে তিন পরতের এক হাজার মাস্ক বানাতে বলা হয় তাহলে ৪০ লাখ মাস্ক তৈরি হয়। অথচ এই সিম্পল ম্যাথমেটিক্স’টাতে কাজ করতে কেউ আগাচ্ছে না’- বলেন আবু জামিল ফয়সাল।

তিনি বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তিনি প্রতিটি পোশাক কারখানাকে এক হাজার না হোক অর্ধেক তৈরি করতে বললেও সেটি হবে সামাজিক আন্দোলনের একটি অংশ। এভাবেই শুরু হোক।’

‘পুলিশ যতই পেটাক অথবা ফাইন করুক, তাতে খুব একটা কাজ হবে বলে আমি মনে করি না’ উল্লেখ করে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সবার এগিয়ে এসে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই এখানে।’

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতি থেকে শুরু করে প্রথম থেকেই সরকার সঠিক সময়ে কোনও সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়নি মন্তব্য করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক প্রতিনিধি অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক বলেন, ‘যেকোনও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে যথেষ্ট সমন্বয়হীনতাও ছিল। করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রতি নির্দেশনা ছিল। ওষুধ আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এই স্বাস্থ্যবিধি মানা অবশ্য কর্তব্য। আবার ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেও সেটা সবার মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা নিশ্চিত করবে না।’

‘আমাদের কোভিডকে নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মানানো নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের’- বলেন অধ্যাপক মুজাহেরুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, করেনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য একাধিকবার স্বাস্থ্য বিভাগ নির্দেশনা দেয়। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর গত ৩০ মে স্বাস্থ্য অধিদফতর বাইরে চলাচলের সময় মাস্কসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানায়। সেই তারিখ রাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত ‘ঘোষণা’ শিরোনামে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক/যথাযথ কর্তৃপক্ষ সতর্কভাবে এটি বাস্তবায়ন করবেন।

আবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ২১ জুলাই সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়্ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেখানে আসা সেবাগ্রহীতাদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে বলে ১১টি ক্ষেত্রে নির্দেশনা দেয়। তারপরও মাস্ক ব্যবহারে মানুষ উৎসাহিত হয়নি, উদাসীন থেকেছে বরাবরের মতোই।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এখন থেকে মাস্ক ব্যবহারের কথা বেশি করে বলা হবে। তিনি বলেন, ‘সেকেন্ড ওয়েভের কথা বিশ্বজুড়ে আলোচিত হচ্ছে, মানুষ আক্রান্তও হচ্ছে অনেক বেশি। এসব কারণে দেশে একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সব মন্ত্রণালয়কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে যে, সরকারি সেবা নিতে হলে মাস্ক পরে নিতে হবে। “মাস্ক পরে সেবা নিতে হবে”– এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছি যেন সব থানাতে এ ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এলজিআরডি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে তারা যেন ইউনিয়ন-উপজেলা পরিষদে ঝুলিয়ে দেয়। কোর্টে থাকবে। এভাবে সরকারি-বেসরকারি সব জায়গায় এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে।’

তিনি জানান, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, এটা একটা ক্যাম্পেইনের মতো। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সম্পর্কে সব জায়গায় চিঠি দেওয়া হয়েছে।

 

/এমএএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশুর ত্বকের যত্নে বাজারে এলো ‘সিওডিল বেবি ক্রিম’
শিশুর ত্বকের যত্নে বাজারে এলো ‘সিওডিল বেবি ক্রিম’
এই গরমে ক্রিকেট খেলা অমানবিক: সাকিব
এই গরমে ক্রিকেট খেলা অমানবিক: সাকিব
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
মৌসুমের চতুর্থ হ্যাটট্রিকে রেকর্ডের কাছে রোনালদো  
মৌসুমের চতুর্থ হ্যাটট্রিকে রেকর্ডের কাছে রোনালদো  
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি