X
শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নদীবক্ষে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে সাঁতরে পৌঁছাতে চায় জনগণ

উদিসা ইসলাম
০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০৮:০০আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০৮:০০

ফিরে দেখা ১৯৭২ (বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ৩ ডিসেম্বরের ঘটনা।)

জনতা বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখার জন্য এত ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল যে অনেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে জাহাজের কাছে পৌঁছানোরও চেষ্টা করেছিল। বরিশাল থেকে ঝালকাঠিতে এসে পৌঁছালে আড়িয়ালখাঁ নদীর তীরে হাজার হাজার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য ভিড় করে। অগ্রসরমান ইনভেস্টিগেটর জাহাজের সঙ্গে সঙ্গে অগ্রসর হতে থাকে তারা। বাসস এ খবর প্রকাশ করে।

খবরে আরও বলা হয়, উপকূল অঞ্চল ও সুন্দরবন এলাকায় চার দিনব্যাপী সরকারি সফর। এরপর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় ফিরবেন।

উল্লেখ করা হয়, ঝালকাঠিতে যে জায়গায় দখলদার পাকিস্তান বাহিনী মানুষকে হত্যা করে একটি খালের মধ্যে নিক্ষেপ করেছিল বঙ্গবন্ধু সেখানে যান এবং শহীদদের আত্মার শান্তির জন্য ফাতেহা পাঠ করেন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাখার জন্য শহীদদের কঙ্কালগুলো অবিলম্বে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ঝালকাঠিতে জনগণ তাকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে এবং তার সঙ্গে সঙ্গে শত শত লোক জাহাজ পর্যন্ত এগিয়ে যায়। আবার ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকায় ফেরার জন্য প্রধানমন্ত্রী রওনা দেন। বঙ্গবন্ধু ঝালকাঠি পৌঁছালে স্থানীয় এমসিএ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা তাকে সংবর্ধনা জানান।

দৈনিক বাংলা, ৪ ডিসেম্বর ১৯৭২ উপমহাদেশের স্থায়ী শান্তি স্থাপনে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী দৃঢ়তার সঙ্গে আবার একথা ঘোষণা করেন যে উপমহাদেশে স্থায়ী শান্তি স্থাপনে বাংলাদেশ ও ভারত পরস্পর পরস্পরের সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, এই উপমহাদেশকে চির শান্তির নীড় রূপে গড়ে তোলার জন্য একে অপরকে সহযোগিতা করবো। রাষ্ট্রপ্রধান আবু সাঈদ চৌধুরী কলকাতায় তার সম্মানে আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন। কলকাতায় রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় তাকে প্রদত্ত মানপত্রের জবাবে রাষ্ট্রপ্রধান আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এই আশা করে যে ভারত-বাংলাদেশ তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও নিবিড় করে তোলার জন্য যে কেবল পারস্পরিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে তা নয়, বরং এ দুটি দেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আসবে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মানবতাবাদী ঐতিহ্যসমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও ভারত বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন প্রেরণা পাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি এবং এই কারণে এই উপমহাদেশ তথা সারা বিশ্বের শান্তির পথে পরিচালিত হবে।

দৈনিক ইত্তেফাক, ৪ ডিসেম্বর ১৯৭২ পাকিস্তান শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা দিচ্ছে

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে পাকিস্তানও বাংলাদেশের স্থায়ী শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করছে। পাকিস্তান উপমহাদেশের বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করে এবং অন্যায়ভাবে পাঁচ লাখ বাঙালিকে আটকে রেখে উপমহাদেশে উত্তেজনা জিইয়ে রাখছে।

ভুট্টোর নয়া অর্ডিন্যান্স জারি

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলি ভুট্টো তার দক্ষিণপন্থী বিরুদ্ধবাদীদের প্রচারণা দমনের জন্য অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেন। জামায়াতে ইসলামীসহ প্রমুখ দক্ষিণপন্থী বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনকে হাঙ্গামা সৃষ্টির পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। ভুট্টো পাকিস্তান ফৌজদারি দণ্ডবিধি সংশোধন করে একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। দুইদিন আগে একটি জনসভায় গোলযোগের পরে এই অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়।

বাংলাদেশ অবজারভার, ৪ ডিসেম্বর ১৯৭২ সরকার সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ করেছে

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোস্তফা সরওয়ার ধামরাইতে অনুষ্ঠিত জনসভায় বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সোনার বাংলা পুনর্গঠিত হবে। সরওয়ার আরও বলেন, জাতি নিজের মনোভাব ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশকে মুক্ত করেছে। এই দুই জিনিসের ওপর নির্ভর করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবে রূপায়িত করা যাবে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করার জন্য জনগণের নিকট আবেদন জানান তিনি। যেসব রাজনৈতিক দল স্বাধীনতা নসাৎ করতে কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে গঠনতান্ত্রিক পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করার আহ্বানও জানান।

 

/এফএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
মুজিব বর্ষ উদযাপনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের খরচ ১২৬১ কোটি
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
সর্বশেষ খবর
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ৪৬ ঘণ্টা পর লঞ্চ চলাচল শুরু
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ৪৬ ঘণ্টা পর লঞ্চ চলাচল শুরু
আলোচনার বিষয়ে রাশিয়াকে ধোঁয়াশায় রেখেছে ইউক্রেন
মস্কোকে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রেরআলোচনার বিষয়ে রাশিয়াকে ধোঁয়াশায় রেখেছে ইউক্রেন
গাজীপুরে আগুনে পুড়েছে সাতটি দোকান
গাজীপুরে আগুনে পুড়েছে সাতটি দোকান
দ্য আর্ট অব ফিকশন : নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গো
সাক্ষাৎকারদ্য আর্ট অব ফিকশন : নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গো
সর্বাধিক পঠিত
ভুয়া কাগজপত্রে আমেরিকা যাওয়ার চেষ্টা, ইমিগ্রেশনে ধরা বিমানের কেবিন ক্রু
ভুয়া কাগজপত্রে আমেরিকা যাওয়ার চেষ্টা, ইমিগ্রেশনে ধরা বিমানের কেবিন ক্রু
ইসলামী ধারার ব্যাংক একীভূতকরণে এনবিএল থাকছে না: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ইসলামী ধারার ব্যাংক একীভূতকরণে এনবিএল থাকছে না: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক নেত্রীকে  রাস্তায় ফেলে মারধর
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক নেত্রীকে  রাস্তায় ফেলে মারধর
ফারুকের দেশ ছাড়ার গুঞ্জন
ফারুকের দেশ ছাড়ার গুঞ্জন
গ্রিন রোডে নারীকে শারীরিক হেনস্তা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ
গ্রিন রোডে নারীকে শারীরিক হেনস্তা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ