X
রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫
২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কোনও নিরাপত্তা বলয়ে নেই, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৩ জানুয়ারি ২০২১, ১১:০০আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ১১:০০

সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে চললেও কোনও ধরনের নিরাপত্তা বলয়ে এখনও যোগ দেয়নি বাংলাদেশ। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব ক্রমশ স্নায়ুযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। উভয় দেশই তাদের শক্তিবলয় বাড়াতে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে। এ অবস্থায় কোনও ধরনের নিরাপত্তা ছাতার ভেতর না ঢোকাটা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে সম্পদ রক্ষা ও বৈরী শক্তির হাত থেকে সার্বভৌমত্ব সংহত রাখাও এ শতাব্দির বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে একজন সাবেক পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে উন্নয়ন ও নিরাপত্তাকে আলাদা করে দেখা জটিল বিষয়। বাংলাদেশ এখন ৩০ হাজার কোটি ডলারের অর্থনীতি। যা ক্রমে বাড়ছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে সে বিষয়ে বাংলাদেশের পরিষ্কার ধারণা আছে। নিরাপত্তার ইসুতে বড় শক্তির সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রেখে চলার বর্তমান নীতি বজায় রেখে চলাও একটা চ্যালেঞ্জ।’

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দুটি বড় শক্তি বিআরআই এবং আইপিএস নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে এবং উভয়েরই এ নিয়ে উচ্চাশা আছে। এই দুই শক্তির প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার। নেপাল ধীরে ধীরে তার অবস্থান পরিবর্তন করছে। শ্রীলংকা দোদুল্যমান। বাংলাদেশ এখনও সমদূরত্ব নীতি বজায় রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বাংলাদেশ কতদিন ধরে রাখতে পারবে তা সময়ই বলবে। তবে বর্তমান নেতৃত্বের সামনে এটা বড় আকারেই উপস্থাপিত হবে।’

বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমার কাছে মনে হচ্ছে বঙ্গোপসাগরের সম্পদ রক্ষা। কারণ সমুদ্র-অর্থনীতি নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের কৌশলগত পরিবর্তন হচ্ছে।’

বাংলাদেশের আগ্রাসী মনোভাব নেই। কিন্তু নিজের সম্পদ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করা হবে না বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, সমুদ্রের সম্পদ রক্ষার জন্য ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর প্রয়োজন আছে। এর জন্য সাবমেরিন, যুদ্ধজাহাজ ও আকাশে উড্ডয়নে সক্ষম ড্রোন বা উড়োজাহাজের প্রয়োজন হবে নেভির।

দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটিও বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে। সেটা হচ্ছে জাহাজ চলাচলে সুমদ্রপথ অবাধ ও মুক্ত রাখা। এটি বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘কারো সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক বা অন্য দুই শক্তির দ্বন্দ্বে আমরা পড়ে যেতে পারি। সেজন্য সমুদ্রপথ অবাধ রাখতেই হবে।’

রোহিঙ্গা ইসুটি নিরাপত্তার জন্য আরেক বড় সমস্যা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার ও সিলেটে দুটি ডিভিশন মোতায়েন করাটা ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের ছোট বা বড় যে ধরনের চ্যালেঞ্জই হোক, সেটিকে উপক্ষো করার সুযোগ নেই বলে তিনি জানান।

তৃতীয় চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে এই উপমহাদেশে ভূ-রাজনীতিক পরিবর্তন। এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে নেপালকে চীনের বলয় থেকে বের করতে। এর ফলেও একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আমরা রাখব। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্বে আঘাত করতে আসে, প্রতিঘাত করার মতো সক্ষমতা যেন আমরা অর্জন করতে পারি সেভাবেই আমাদের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি থাকতে হবে।’

 

 

 
 
/এসএসজেড/এফএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঈদের দ্বিতীয় দিন টিভি পর্দায় যত নাটক
ঈদের দ্বিতীয় দিন টিভি পর্দায় যত নাটক
জাতীয় নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিতে কতটা প্রস্তুত পুলিশ
জাতীয় নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিতে কতটা প্রস্তুত পুলিশ
লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনায় বসছে সোমবার
লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনায় বসছে সোমবার
সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্যমুক্ত হলো চট্টগ্রাম
সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্যমুক্ত হলো চট্টগ্রাম
সর্বাধিক পঠিত
ঈদ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সস্ত্রীক সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান
ঈদ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সস্ত্রীক সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান
মায়ের কবরে আবেগঘন শুভ: আকাশটাও কাঁদছিলো…
মায়ের কবরে আবেগঘন শুভ: আকাশটাও কাঁদছিলো…
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সস্ত্রীক নৌবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সস্ত্রীক নৌবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
অবশেষে জুলাইয়ে চালু হচ্ছে ভূমি মালিকানা সনদ
অবশেষে জুলাইয়ে চালু হচ্ছে ভূমি মালিকানা সনদ
অধিকাংশ পুলিশ ছুটিতে, আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা
বৈরাতি হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রঅধিকাংশ পুলিশ ছুটিতে, আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা