‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’ থিম নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার পঞ্চম দিনের আয়োজন জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২১ মার্চ) প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা। সংগীত, নৃত্য, কোরিওগ্রাফি আর নাটক সবকিছু জুড়েই ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান ও সঞ্চালনা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে দেশকে পুনর্গঠন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশকে বিরানভূমিতে পরিণত করেছিল। তিনি সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবনের জয়গান গেয়েছিলেন।’
থিমভিত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
আলোচনা পর্বে জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহর পক্ষে ভিডিও বার্তায় কথা বলেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আল সাদাফি। তিনি জানান, স্বাধীনতার পর পাঁচ দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী, শান্তি বজায় রাখা, আরও উন্নয়ন এবং জনগণের সক্ষমতা কাজে লাগানোর মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও বেশি অগ্রগতি অর্জন করবে বাংলাদেশ।’
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে চীনের শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চীনা অর্কেস্ট্রা এবং ড্যান্স কোরিওগ্রাফি প্রদর্শন করেন তারা। ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যের ওপর টাইটেল অ্যানিমেশন ভিডিও ছাড়াও ১০০ শিল্পীর আঁকা ক্যানভাসে ‘বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর: শূন্য থেকে মহাশূন্যে কাব্য, সুর ও ছন্দে’ কোরিওগ্রাফি পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধুর নবজীবনের ডাক: ধূসর বাংলা থেকে সবুজ বাংলা’ পরিবেশন করা হয় পালা, জারি ও গম্ভীরা পরিবেশনের মাধ্যমে।
‘নারীর জাগরণ ও ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা’ শীর্ষক থিয়েটারিক্যাল পারফরম্যান্সে নারী জাগরণের রূপকার রাজকন্যা লিলাবতি থেকে শুরু করে কবি চন্দ্রাবতী, রাজসুন্দরী দেবী, নবাব ফয়জুন্নেসা, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, ইলা মিত্র, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা, সুফিয়া কামাল, জাহানারা ইমামের সংগ্রামের কথা এক-একটি চরিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
বিশ্বনেতা ও বিশ্বনাগরিকের সঙ্গে মেলবন্ধনে একটি মিউজিক কোরিওগ্রাফি এবং ‘শিশু বিকাশে বঙ্গবন্ধু: আলো আমার আলো’ পরিবেশন করা হয়। ১০০ জন শিশুশিল্পী সংগীত পরিবেশনা করে। শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নবজাগরণ, শিল্পের সকল বাহনের উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাটক ‘২৮৮ দিন’ মঞ্চায়িত করা হয়। আন্তর্জাতিক সংগীত ধারার সঙ্গে সমন্বয় রেখে ব্যান্ড সংগীতের জাগরণ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।