X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১
পর্দা নামলো মুজিবশতবর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তীর বিশেষ আয়োজনের

গানে-কথায় বঙ্গবন্ধু আর স্বদেশ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৬ মার্চ ২০২১, ২৩:৫৪আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২১, ২৩:৫৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের সুবর্ণদিন গেলো আজ। শুক্রবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসে সন্ধ্যা সাতটায় সব আলো জ্বলে উঠেছিলো ঢাকার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাজনীতি আর সংস্কৃতি-বিনোদনের দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিরা জানিয়েছেন বিনীত নিবেদন আর গান-কথার শ্রদ্ধার্ঘ। দশ দিনের রাষ্ট্রীয় বিশেষ এই আয়োজনের শেষদিনের সাংস্কৃতিকপর্বে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের প্রতি নিবেদিত গানে-সুরে-নৃত্যে অনুরাগভরা পরিবেশনায় সুসজ্জিত মঞ্চ আপ্লুত করেছেন বাংলাদেশ-ভারতের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পীরা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা ও স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরব অনুরণিত হয়েছে এই উদযাপনে। 

অজয় চক্রবর্তী গাইছেন শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানমালা’র ১০ম দিনের প্রতিপাদ্য ছিলো ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’। এই দিনের সাংস্কৃতিক পর্বে ছিলো নানামাত্রিক আয়োজন। সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মঞ্চে গাইতে উঠেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একে-একে গেয়ে শোনান সংস্কৃত, হিন্দি ও বাংলা ভাষায় তিনটি রাগ— যেগুলো নিয়ে তার বয়ান, ‘এই রাগ ভারতীয় সংগীতে গাওয়া হয়নি, এবারই প্রথম।’ যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরিন্দম চক্রবর্তীর রচনায় ঢোল-তবলা আর হারমোনিয়ামে সুর তুলে ‘সংস্কৃতি রাগ’টি গেয়ে অজয় চক্রবর্তী বললেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপহার এই গান।’

মঞ্চে গাইছেন অজয় চক্রবর্তী বঙ্গবন্ধুকে ‘নদীমাতৃক, অতিথিপরায়ণ, সুরুচিপূর্ণ, সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সঙ্গীতপ্রেমি, বাংলাদেশের রূপকার’ হিসেবে উল্লেখ করে অজয় চক্রবর্তী যোগ করেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বপ্রথম আমার স্বশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই তার জন্মশতবর্ষে। তিনি আজ এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে স্বশরীরে না থাকলেও অবশ্যই উপস্থিত আছেন।’ ধন্যকণ্ঠে বিশেষজ্ঞ এই শিল্পী এও বলেন, ‘বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আমার পিতা-মাতার জন্মস্থান। ময়মনসিংহ সঙ্গীতের জন্য প্রসিদ্ধ, সুতরাং আমিও বাংলাদেশের একজন।’ তার কথা শুনে মঞ্চের সামনের সারিতে বসা রাষ্ট্রীয় অতিথিরা হাততালি দিয়ে অভিনন্দিত করেন অজয় চক্রবর্তীকে। মঞ্চে তিনি ‘মৈত্রী’ রাগটি হিন্দি ও বাংলা ভাষায়ও পরিবেশন করেন; জানান, হিন্দি গানটি রচনা করেছেন সুস্মিতা বসু মজুমদার ও সুর দিয়েছেন হিন্দি অধ্যাপক রবি বর্মণ। ‘‘আজ আবার অতীত বেয়ে/ইতিহাস ছুঁয়ে দেখার, অর্ধশতকবর্ষে/দুচোখে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার’’ বাংলা গানটি রচনা করেছেন অজয় চক্রবর্তীর শিক্ষার্থী ও পুত্র সুরকার শ্রী অনল চ্যাটার্জী। তিনটি গানেরই সংগীতায়োজন করেছেন পণ্ডিত অজয়।

মুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় সঙ্গীতের প্রণিধানযোগ্য শিল্পী অজয় চক্রবর্তীর পরিবেশনা শেষ হওয়ার পরই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তীর উপলক্ষে মঞ্চে বেজে উঠে অস্কার বিজয়ী সঙ্গীত শিল্পী এ আর রহমানের কণ্ঠে গাওয়া বাংলাদেশের খ্যাতনামা গীতিকবি জুলফিকার রাসেলের রচনায় ‘‘আমার সোনার বাংলা, হে লাল হারায়ে বাংলা/ বলো জয় বঙ্গবন্ধু, বলো জয় জয় বাংলা, বাঙলা/এক দোস্ত মুজিব হে, দিল মে বাঙলা’ বিশেষ আয়োজনের সজ্জিত মঞ্চের বড় পর্দায় এ গানের তালে দুহাতে তাল মিলিয়েছেন অনুষ্ঠানের অতিথি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর ডানহাতে নাড়িয়ে সুর মেলাচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা। গানের মাঝে আপ্লুতচোখে মনোযোগী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। গানশেষে সবিশেষ হাততালিও দিয়েছেন তারা।

এক ধৃতি নর্তনালয়ের আয়োজন এ আর রহমানের পরিবেশনার পর ‘পিতা দিয়েছে স্বাধীন স্বদেশ, কন্যা দিয়েছে আলো’ শীর্ষক থিমেটিক কোরিওগ্রাফির যাত্রা। দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণ ও অতুল রানিংগার অকেস্ট্রার সমন্বয়ে এই আয়োজনও মাতিয়ে রাখে বিশিষ্ট দর্শকদের। এ পর্বে দেশের গুণী অভিনয়শিল্পী তারিক আনাম খান, তনিমা হামিদ। এরপর ওয়ার্দা রিহাবের নৃত্য পরিকল্পনা ও পরিচালনায় পরিবেশিত ধৃতি নর্তনালয়ের আয়োজন। এরপর আরেকটি পর্বে অভিনয় করেন শতাব্দি ওয়াদুদ, সানজিদা প্রীতি।

সৈয়দ আবদুল হাদির পরিবেশনা মঞ্চে আসেন সৈয়দ আবদুল হাদী, নৃত্যশিল্পীদের নৃত্যের তালে তিনি গেয়ে শোনান ‘দে না, তোর দে না, সে মাটির অঙ্গে মাখিয়ে দে না’ শীর্ষক গানটি। তিনি গেয়ে শোনান ‘মা গো ভাবনা কেনও, আমরা তোমার শান্তি প্রিয়, শান্ত ছেলে’ গানটিও। এ পর্বে যৌথ আবৃত্তি করেন ইন্তেখাব দিনার, নাফিসা জারিন মৌমি। দেশাত্মোবোধক গানের পর আবারও আবৃত্তি করেন খ্যাতিমান আবৃত্তিশিল্পী আসাদুজ্জামান নূর ও অভিনয়শিল্পী মিথিলা রশীদ। এরপর সমন্বিত আবৃতি করেন সবাই। সাংস্কৃতিক পর্বের শেষ দিকে জনপ্রিয় কয়েকটি গান করেন সাংসদ মমতাজ।

খ্যাতিমান শিল্পীদের আবৃত্তি পরিবেশনা বিন্দু থেকে সিন্ধু’ শীর্ষক তিনটি কালজয়ী গানের পর ঢাক-ঢোলের সমবেত বাদ্য ও কোরিওগ্রাফি সহযোগে ‘বাংলাদেশের গর্জন : আজ শুনুক পুরো বিশ্ব’ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। পরে ফায়ার ওয়ার্কস ও লেজার শো’ হয়। লাল-সবুজ আর রঙিন আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে প্যারেড গ্রাউন্ডের আকাশ।

পরিশেষে ‘‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরে শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দৃপ্ত অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকার’’ ঘোষণা দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানমালা’র বিশেষ আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন উপস্থাপক মিথিলা ফারজানা ও ইমতিয়াজ উদ্দিন।

 

 

 

 

 

 

 

/এসটিএস/এফএএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগপিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?