করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়াতে গত বছরের মতো এবারও মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছিল, সংগঠন পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচ জন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে দুজন একসঙ্গে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবেন। শ্রদ্ধা জানাতে আসা সবাইকে করোনা টিকার সনদও সঙ্গে রাখতে হবে। তবে এসব নিয়মের ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি একুশের প্রথম প্রহরে। যারা নিয়ম মেনে এসেছেন তারা প্রকাশ করেছেন হতাশা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান জানিয়েছিলেন, চলমান করোনা মহামারিতে জনসমাগম এড়াতে গত বছরের মতো এ বছরও সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচ জন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ দুজন একসঙ্গে শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও মাস্ক পরিধান করতে হবে। সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখতে হবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সবাইকে টিকার সনদ সঙ্গে রাখতে হবে।
তবে এসব নিয়ম মানানো কিংবা টিকার সনদ দেখতে চাওয়ার কোনও ব্যবস্থা শহীদ মিনার এলাকায় পাওয়া যায়নি। বরং বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই জনসমাগম হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অনীহা দেখা যায় শ্রদ্ধা জানাতে আসা সংগঠনগুলোর মধ্যে। কারও মুখে মাস্ক থাকলেও তা ঝুলছিল থুতনির নিচে। কোনও সংগঠনের পক্ষে ২০ জন এমনকি ৩০ জনও এসেছেন ফুল দিতে। করোনার টিকা সনদ খোঁজ করে পাওয়া যায়নি অনেকের কাছে।
এসময় পুরো এলাকা ঘুরে কাউকে টিকা সনদ দেখতে চাওয়া কিংবা লোক সমাগম কমানোর বিষয়ে উদ্যোগও নিতে দেখা যায়নি।
সুশৃঙ্খলভাবে ফুল দেওয়ার জন্য দায়িত্ব পালন করছে স্কাউটস, বিএনসিসির সদস্যরা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা শুধু শৃঙ্খলার বিষয়টি দেখছেন। কেউ মাস্ক ছাড়া বেদিতে প্রবেশ করলে তা পরতে বলছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শুধু নিরাপত্তা তল্লাশি করছেন এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যরা মাস্ক ও হাত ধোয়ার বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজে নিয়োজিত আছেন। ভিড় সামলানো কিংবা সীমিত মানুষ আসছে কিনা তা তদারকির জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি।
শহীদ মিনার এলাকায় এমন অব্যবস্থাপনা দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন মিরপুর থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা আসলাম হোসেন। তিনি বলেন, বিধিনিষেধ শুনে ভেবেছিলাম ভিড় কম হবে। কিন্তু বেদিতে আর বাইরে সেই আগের দশা।