X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

কেন সেদিন সাক্ষাৎকার দেননি বঙ্গবন্ধু

উদিসা ইসলাম
২৬ মার্চ ২০২২, ০৮:০০আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২২, ০৮:০০

১৯৭২ সালের মার্চের ২৫ ও ২৬ তারিখ ছিল একটু অন্যরকম। দেশ পুনর্গঠনের নানা পরিকল্পনার মাঝেই আগের বছরের স্মৃতি তখনও জ্বলজ্বলে। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের নিজের অনুভূতি জানাতে চাননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৫ ও ২৬ মার্চ যে নৃশংসতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে সেই স্মুতি তখনও তাড়া করছিল তাঁকে।

প্রথম স্বাধীনতা দিবসে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার না দেওয়ার কী কারণ থাকতে পারে? ২৬ তারিখের দৈনিক বাংলা পত্রিকার খবরে বলা হয়, আগের দিন বঙ্গবন্ধু কারওর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, আজকের দিনটি আমি একা অনুভব করছি। 

এদিন, একটি সাক্ষাৎকার পাওয়ার আশায় বঙ্গবন্ধুর সামনে হাজির হন হাসিনা আশরাফ। বঙ্গবন্ধু বলেন, আজকের দিনটিতে কথা বলার অবস্থা আমার নেই। আমার সোনার বাংলার বুকের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই অসভ্য নগ্নতাকে আমি একান্তভাবে অনুভব করতে চাই। 

হাসিনা আশরাফ লিখেছেন, প্রচণ্ড ব্যথা স্পষ্ট হয়ে উঠছে বঙ্গবন্ধুর সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখটিতে। ঠিক এমনই মুহূর্তে শহীদ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোয়াজ্জেমের স্ত্রী ঢোকেন। পরনে সাদা কাপড়। বঙ্গবন্ধু তাকালেন কয়েক মুহূর্ত। তারপর যেন আপন মনে বললেন, আমি সেদিন সকালেই বলেছিলাম এখান থেকে পালিয়ে যেতে। 

হাসিনা আশরাফ আরও লিখছেন, বেগম মোয়াজ্জেমের উত্তরের পূর্বেই আমি বলে উঠলাম আপনিও তো পাঠাতে পারতেন। আমার কথার উত্তরে তিনি মাথা ঝাঁকালেন- না পারতাম না। সাড়ে সাত কোটি সন্তানসহ কে আমাকে আশ্রয় দিতো বলো? তাই ঠিক করেছিলাম বাংলার মানুষের বদলে ওরা যদি আমার প্রাণ বন্দি করে আমি তাই এগিয়ে দেবো। কথা বলতে বলতে উত্তেজিত দেখালো তাঁকে। বললেন ওরা আমাকে মারেনি। আজ দুঃখ হয় আমার দেশের শহীদ ভাইদের বিশ্বস্ত বঙ্গবন্ধু ছিলাম আমি। তবে কেন আমার লাশ মিশে গেলো না ওদের লক্ষ শহীদের লাশের সঙ্গে। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তবে আমার আত্মা সান্ত্বনা পেতো। এখন লাখ লাখ শহীদের মাঝে আমার বেঁচে থাকাটাই অপরাধ বলে মনে হয়।

ততক্ষণে পাঁচটা বেজে গেছে। উঠে দাঁড়ালেন বঙ্গবন্ধু। বেগম মোয়াজ্জেম তার স্বামীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলে বঙ্গবন্ধুকে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জিজ্ঞাসা করলেন তার সন্তানদের কথা, তার কথা। পরে জানালেন, ২৬ মার্চ রবিবার রাতে তাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে কাটাতে হবে। তবু তিনি এক মুহূর্ত সময় করতে পারলে সেখানে যাবেন। 

এরপর হাসিনা আশরাফের দিকে তাকিয়ে হেসে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘সাড়ে তিনটায় ফিরি, ঘণ্টাখানেকের জন্য। ওদিকে সাড়ে ১১টার আগে ফেরা সম্ভব হয় না। তবুও শান্তি পেতাম দেশের লোকগুলোকে যদি দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে পারতাম।’

/এফএ/
সম্পর্কিত
খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি: প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল আজ
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ গিনেস বুকে ওঠানোর উদ্যোগ
সর্বশেষ খবর
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
সারা দেশে আরও ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
সারা দেশে আরও ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি