X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘের সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৪আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:৫৫

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত বাসস্থানের জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইসের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে গুয়েন লুইস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, যেহেতু খুব শিগগিরই রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কোনও নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত ভাসানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘনবসতিপূর্ণ জীবনযাপন করছে। যদি রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য জীবিকার ব্যবস্থাসম্পন্ন ভাসানচরে স্থানান্তর করা যায় করা যায়, তাহলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। কারণ সেখানে লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। ভাসানচরে উন্নতমানের জীবনযাপন ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হলেও তারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গারা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং জঙ্গিবাদেও জড়িত। কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠে পরিণত হয়েছে।

বৈঠকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এমডিজি’র লক্ষ্য অর্জন ও এসডিজি অর্জনে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।

গুয়েন লুইস আরও বলেন, বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ কিছু চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে হবে। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ অতীতেও বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে জলবায়ু সহিষ্ণু করতে এর আগে অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ উপকূলীয় অঞ্চল ও সবুজ বেস্টনি জলবায়ু সহিষ্ণু আবাসন নির্মাণ করছে। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে ‘ক্লাইমেট ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করেছে। তবে তিনি জলবায়ু প্রতিশ্রুতি নিয়ে ধনী দেশগুলোর কর্মকান্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ধনী দেশগুলো শুধু প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছে। কিন্তু তারা সেগুলো পালন করছে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এসডিজি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

শিশু শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, তাঁর সরকার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, বৃত্তি, বিনামূল্যে পাঠ্য বই বিতরণ এবং স্কুল ফিডিং ব্যবস্থা চালু করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারী শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর পদ সৃষ্টি করে নারীদের রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায়ন করেছে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আমলের আইন সংশোধন করে বিচার বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগে নারীদের নিয়োগের পথ তৈরি করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি তাহলে মেয়েরা শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হবে এবং অভিভাবকরাও তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহিত হবে।

বাংলাদেশে শিশুশ্রমের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক খাতে কোনও শিশুশ্রম নেই।

প্রধানমন্ত্রী একটি মানুষকেও জমি ও গৃহহীন না রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, সরকার প্রত্যেক ভূমিহীন ও গৃহহীনকে বিনামূল্যে বাড়ি দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস।

/এফএস/
সম্পর্কিত
গাজায় পানিশূন্যতায় ভুগছেন দেড় লক্ষাধিক অন্তঃসত্ত্বা নারী
লাইনে দাঁড়িয়ে ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখ পরীক্ষা করালেন প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত
সর্বশেষ খবর
মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে বিচারের হুমকি
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে বিচারের হুমকি
রোগীকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসে সড়কে প্রাণ গেলো ৩ জনের
রোগীকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসে সড়কে প্রাণ গেলো ৩ জনের
তীব্র গরমে বেড়েছে রিকন্ডিশন্ড এসির চাহিদা
তীব্র গরমে বেড়েছে রিকন্ডিশন্ড এসির চাহিদা
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বগি লাইনচ্যুত
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বগি লাইনচ্যুত