ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশনের (আইএমও) সেক্রেটারি জেনারেল পদে নির্বাচনে বাংলাদেশের সমর্থনের বিষয়টি ফিলিপাইন সরকার বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী জেইমি জে বাউতিস্তা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মেরিন সেক্টরের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ফিলিপাইন সবসময় সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৬ জুন) ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে এ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় হোটেল কনরেডে আজ ‘ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং সামিট’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের শুরুতেই নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিপাইনেরর সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের সুসম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশকে প্রথমের দিকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ফিলিপাইন অন্যতম।’ এজন্য ফিলিপাইনের সরকার ও জনগণের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই ফিলিপাইনে সংক্ষিপ্ত সফর করেন।’
প্রতিমন্ত্রী মেরিটাইম সেক্টরে ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার খাতসমূহ আরও জোরদার করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ২০২৪-২০২৭ মেয়াদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশনের (আইএমও) সেক্রেটারি জেনারেল পদের প্রার্থী মনোনীত হয়েছে। এই পদে নির্বাচনের জন্য ফিলিপাইনের সমর্থন কামনা করেন তিনি। ‘ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং সামিটে’ আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রতিমন্ত্রী ফিলিপাইনের যোগাযোগমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, মেরিন সেক্টরের উন্নয়নে বাংলাদেশে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিচ্ছে। অনেকে মেরিন সেক্টরে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে মেরিটাইম সেক্টরে দক্ষ মেরিনার ও সিফেয়ারার তৈরিতে নতুন চারটি মেরিন অ্যাকাডেমি এবং একটি ন্যাশনাল মেরটাইম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মেরিনারদের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ফিলিপাইনের যোগাযোগ সচিব এলমার ফ্রান্সিসকো ইউ সারমিয়েনতো, ম্যানিলাস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এফ এম বোরহানউদ্দিন, নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম, আইএমওতে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর স্পেশাল এনভয় ক্যাপ্টেন মঈন উদ্দিন আহমেদ এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
‘ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং সামিট’-এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে 'শেপিং দ্য ফিউচার অব শিপিং-সিফেয়ারার ২০৫০'। ২০৫০ সালে নাবিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উপলব্ধি করে ফিলিপাইন এ সম্মেলনের আয়োজন করে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম এমপ্লয়ার্স কাউন্সিল এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন এর যৌথ আয়োজক।
ফিলিপিনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র ‘ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং সামিট’ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত এবং মেরিন সেক্টরের বিশ্বনেতারা উপস্থিত ছিলেন।