X
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশফেরত কর্মীদের জন্য ৩০ জেলায় চালু হচ্ছে ওয়েলফেয়ার সেন্টার

সাদ্দিফ অভি
৩০ জুলাই ২০২৩, ০৯:০০আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৩, ১৩:২২

করোনা মহামারিতে বিদেশ থেকে কাজ হারিয়ে ফিরে এসেছেন প্রায় পাঁচ লাখ কর্মী। প্রত্যাগত এসব কর্মীর বেশিরভাগই কর্মহীন। তাছাড়া পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা অর্থকষ্টসহ সমাজে নানা ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিদেশফেরত বিপুল সংখ্যক কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হলে সমাজে অস্থিরতাসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাই তাদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফর্মাল সেক্টর (রেইজ) প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩০ জেলায় চালু হচ্ছে ওয়েলফেয়ার সেন্টার। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই কাজ বাস্তবায়ন করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।

রবিবার (৩০ জুলাই) বিকাল ৩টায় ওয়েলফেয়ার সেন্টারগুলোর উদ্বোধন করবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। এদিন বিমানবন্দরের কাছে খিলক্ষেত এলাকায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু ওয়েজ আর্নার্স সেন্টারের ভেতরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও গাজীপুর জেলার অন্তর্গত জেলা ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এই উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।

২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে কোভিডের কারণে বিদেশফেরত কর্মীদের রিইন্টিগ্রেশন প্রজেক্টের সাবসিডি চুক্তি সই হয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও গাজীপুর জেলার জন্য একটি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও নারায়ণগঞ্জ জেলার জন্য একটি ওয়েলফেয়ার সেন্টার হবে। এছাড়া  টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, নওগাঁ, বগুড়া, পাবনা, বরিশাল, কুষ্টিয়া, যশোর, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, পটুয়াখালী, খুলনা, রাঙামাটি এবং কুমিল্লায় ওয়েলফেয়ার সেন্টার হবে।

কল্যাণ বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ৪২৭ কোটি টাকার এ প্রকল্প থেকে স্থাপন করা ওয়েলফেয়ার সেন্টারে কোভিডকালে ফেরত কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে যাচাই-বাছাই করে ২ লাখ কর্মীকে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে বয়স্ক, নারী ও খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন যাদের, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এছাড়া এই প্রকল্প থেকে ২৫ হাজার ৫০০ বিদেশ ফেরত কর্মীকে দেওয়া হবে রিকগনিশন অব প্রাইম লার্নিং সার্টিফিকেট অর্থাৎ দক্ষতার সনদ।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ওয়েলফেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে বিদেশফেরত কর্মীদের নগদ প্রণোদনা, আত্মকর্মসংস্থানে সহযোগিতা, ঋণ প্রাপ্তিতে সহযোগিতা, কাউন্সেলিং, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহযোগিতা, দক্ষতা সনদ প্রদান, কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহযোগিতা এবং কল্যাণমূলক অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়া হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রত্যাগত কর্মীদের রেজিস্ট্রেশনের পর মনো-সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলিং প্রদান করা হবে। এর মাধ্যমে কর্মী কী ধরনের কাজের জন্য উপযুক্ত এবং আত্মকর্মসংস্থানে কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া  প্রকল্পের মাধ্যমে একটি সার্ভিস ম্যাপিং করা হবে। যাতে করে কর্মীরা জানতে পারে কোন এলাকায় কোন কোন প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে।

এছাড়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিদেশফেরত কর্মীদের একটি তথ্যসমৃদ্ধ ডাটাবেইজ তৈরি হবে, যা বাংলাদেশে ফেরত কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রথম। ২০২০ সাল থেকে করোনার কারণে ফেরত কর্মীদের প্রকল্প সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে। তবে ২০১৫ সাল হতে ফেরত কর্মীরাও প্রকল্প সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হবেন বলে প্রকল্পের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের উপকারভোগী হিসাবে ২ লাখ কর্মীর প্রত্যেককে এককালীন ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ২৭০ কোটি টাকা নগদ প্রণোদনা দেওয়া হবে। এছাড়া বিদেশফেরত কর্মীদের একটি ডাটাবেইজ প্রথমবারের মতো করা হবে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বিদেশফেরত কর্মী যারা অত্যন্ত ঝুঁকিতে আছেন কাজ হারিয়ে তাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, রেফারেলের আওতায় কর্মীর চাহিদা অনুযায়ী  সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা হবে। যাতে করে তাঁরা সমাজে নিজেকে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রশিক্ষণ/আর্থিক কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নিজেই নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে। এ লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হবে।

এছাড়া যে সব কর্মী বিদেশে গিয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও সনদ নেই, এ ধরনের ২৩ হাজার ৫০০ প্রত্যাগত কর্মীকে দক্ষতা সনদের ব্যবস্থা করা হবে। দক্ষতা সনদপ্রাপ্ত কর্মীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি প্রাপ্তিতে সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। যাতে করে সে সকল প্রতিষ্ঠান চাকরি প্রদানের প্রদানের ক্ষেত্রে প্রত্যাগত কর্মীদের অগ্রাধিকার প্রদান করেন।

প্রকল্পের তথ্য বলছে, মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং সাব-কনসালট্যান্ট হিসাবে আছে সাতটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে—ব্র্যাক, অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ), ওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু),  কাটনারপাড়া, বিএনএসকে এবং প্রত্যাশী। 

/এমএস/
সম্পর্কিত
৪৮ বছরে বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ
ইংল্যান্ডের লিডস শহরে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
সৌদি আরবের সড়কে আহত প্রবাসীর হাসপাতালে মৃত্যু
সর্বশেষ খবর
চোখের জলে পাইলট জাওয়াদকে বিদায়
চোখের জলে পাইলট জাওয়াদকে বিদায়
‘মালা’র জন্য ঢাকার মঞ্চে ‘আবার’ অঞ্জন
‘মালা’র জন্য ঢাকার মঞ্চে ‘আবার’ অঞ্জন
শেষের দিকে সোহেলের ভুলে আবাহনীর ড্র
শেষের দিকে সোহেলের ভুলে আবাহনীর ড্র
মা দিবসে কী উপহার দেবেন মাকে?
মা দিবসে কী উপহার দেবেন মাকে?
সর্বাধিক পঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ভুল লিখলো সওজ, চলছে সমালোচনা
৫ জনকে হারিয়ে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান সেই সুইটি
৫ জনকে হারিয়ে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান সেই সুইটি
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
দেশের ব্যাংকগুলো ধ্বংস হচ্ছে, তার উদাহরণ এনআরবিসি: জিএম কাদের
রাশিয়াকে ঠেকাতে আরও অস্ত্র চাইলেন জেলেনস্কি
রাশিয়াকে ঠেকাতে আরও অস্ত্র চাইলেন জেলেনস্কি
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক