রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত এই দিনটিকে সাড়ম্বরে উদযাপন করেন মুসলমানরা। ঈদের দিন সকালেই দলবেঁধে শুরু হয় ঈদগাহযাত্রা। ঈদের নামাজ আদায় করে পরিবার, স্বজন আর এলাকাবাসীর সঙ্গে চলে কোলাকুলির আনন্দ। মুসলমানদের এই উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ ঈদের জামাত। রাজধানীর প্রতিটি ঈদগাহ ও অধিকাংশ মসজিদে ঈদের জামাতের আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে।
রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠেয় এই জামাতে ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে বেঁচে থাকলে ঈদের জামাত পড়াবো। ঈদের মহোত্তম আদর্শ আর ত্যাগের কথা তুলে ধরবো।’
তবে খতিব রুহুল আমিন জানান, বৃষ্টি বা আবহাওয়াজনিত কোনও সমস্যা হলে প্রধান জামাত বায়তুল মোকাররম মসজিদে হবে।
ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনসহ রাজধানীর আপামর মুসলমান। প্রধান জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান বিকল্প ইমাম হিসেবে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকার মূল উপস্থাপক, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন কারি মো. ইসহাক মূল কারি হিসেবে প্রধান ঈদ জামাতে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত ৮টায়, তৃতীয়টি ৯টায়, চতুর্থটি ১০টায় এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানায়, প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক; দ্বিতীয় জামাতে মাওলানা মুহীউদ্দিন কাসেম; তৃতীয় জামাতে ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী; চতুর্থ জামাতে জামেয়া আরাবিয়া মিরপুরের মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান; পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইমামতি করবেন ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। এই ৫টি জামাতে কোনও ইমাম উপস্থিত না থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাইকোর্ট মাজার মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. আশরাফুল ইসলাম।
ঢাকা উত্তর সিটি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও ঈদের জামাতের আয়োজন করেছে। ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়।
ডিএনসিসি থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি করে ঈদের জামাত আয়োজন করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ২৭০টি ঈদের জামাত আয়োজন করা হচ্ছে ডিএনসিসির উদ্যোগে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো মিরপুর গোলারটেক মাঠে ডিএনসিসির ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার টানেলের নিচে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদুল ফিতরের জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ, সংসদ সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা এই জামাতে অংশ নেবেন।
এসব জায়গা ছাড়া আরও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মসজিদের উদ্যোগেও ঈদের জামাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৮টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদে সকাল ৭টায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে সকাল ৮টায় ও ফজলুল হক মুসলিম হলের পূর্ব পাশের খেলার মাঠে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত হবে।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) খেলার মাঠে সকাল ৭টায় ও আজিমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার বায়তুন নূর জামে মসজিদে জামাত হবে সকাল ৮টায়।
পুরান ঢাকার লালবাগ শাহী মসজিদে ঈদ জামাত সকাল ৮টা ও ৯টায়। আজিমপুর ছাপরা মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়, সাড়ে ৮টায় ও সাড়ে ৯টায় এবং কবরস্থান মসজিদে সকাল ৭টায়, ৮টায়, ৯টায় ও ১০টায় চারটি জামাত হবে।
গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ ও ঈদগাহে একাধিক জামাত হবে। এছাড়া, ধানমন্ডির সোবাহানবাগ মসজিদ, ধানমন্ডি ৩ নম্বর রোডের এনায়েত মসজিদ, ৭ নম্বর রোডের বাইতুল আমান মসজিদ, ১২-এ রোডের তাকওয়া মসজিদে ঈদের জামাত হবে।
এছাড়া রাজধানীর অধিকাংশ মসজিদে ঈদের জামাত হবে।
