অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা শুধু শারীরিক বিষয়েই সীমাবদ্ধ নয়, এর সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে জড়িত। ক্যান্সার রোগীদের মানসিক চাপ ও হতাশা কাটিয়ে উঠতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ভূমিকা অপরিহার্য। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্যান্সার চিকিৎসায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব উপলব্ধি করে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সোমবার (১৪ অক্টোবর) গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সভাকক্ষে ‘ক্যান্সার চিকিৎসায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তা ও করণীয়: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে সেন্টার ফর ক্যান্সার কেয়ার ফাউন্ডেশন (সিসিসিএফ) এই সেমিনারের আয়োজন করে
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সাবেক এই পরিচালক বলেন, ‘ক্যান্সার রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা না পেলে তাদের চিকিৎসা প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং তাদের সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কমে যায়। এজন্য ক্যান্সার চিকিৎসার প্রতিটি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।’
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী বলেন, ‘ক্যান্সার এখন চিকিৎসার মাধ্যমে জয় করা সম্ভব। চিকিৎসা মানে উপশম, চিকিৎসা মানে প্রশান্তি, চিকিৎসা মানে সামাজিকভাবে সুখী থাকার উপায়। ওষুধ দিয়ে শরীর সুস্থ করাকে চিকিৎসা বলে জানি এবং মানি।’
সেমিনারে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রফেসর মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ক্যান্সারের জন্য মানসিক সহায়তা লাগবে এটা স্বীকৃত। কাউন্সিলিং সেবা যেন সবার জন্য সহজলভ্য হয়।’
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ‘ক্যান্সার হলে নো আনসার-এই ধারণাই আগে ছিল। ক্যান্সার হলে একেক ডাক্তার একেক কথা বলেন। এর সমাধান হলো সব বিষয়ের চিকিৎসক একসঙ্গে বসবেন। সবার কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া। রোগীর স্বার্থে চিকিৎসার শুরুতে বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা শুরু করবে। একজন রোগীর যে কষ্ট সেটা দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তির পক্ষে বোঝা সম্ভব না।’
রোকেয়া পদকজয়ী জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হালিদা হানুম বলেন, ‘ঘর থেকে বের হলে পয়সা লাগে। সমাজ নারীর জন্য পয়সা খরচ করতে চায় না। ক্যান্সারের জন্য এটা আরও ভয়াবহ। ক্যান্সারকে ঘৃণা করার কিছু নেই। যে কারও ক্যান্সার হতে পারে। তাই মানসিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে।’
সিসিসিএফ এর সভাপতি রোকশানা আফরোজের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শাহনূর, চলচ্চিত্র পরিচালক মসিহ উদ্দীন শাকের, ডা. সাইদুর রহমান অপু, সংগঠনের নির্বাহী সদস্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল প্রমুখ।