X
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫
২২ বৈশাখ ১৪৩২

বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি চাপ আসছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৫ মে ২০২৫, ১৫:৫৮আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ১৭:৫৫

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানির চাপ আসছে বার বার। তবে দেশের লাখ লাখ গরু-ছাগল খামারিদের কথা বিবেচনা করে আমি আমদানির পক্ষে নই।

সোমবার (৫ মে) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রাণ-প্রকৃতি সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে ‘কৃষকের ন্যায্যতা’ শীর্ষক সেমিনারে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ফরিদা আখতার বলেন, ‘গত আগস্ট মাসে বন্যার কারণে অক্টোবরে ডিমের সরবরাহে একটু ঘাটতি হয়। তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে হুট করে ঘোষণা করা হলো, ডিম আমদানি করা হবে। এতে আমাদের ক্ষুদ্র খামারিরা কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তা চিন্তা করা হয়নি। এ নিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য কেউ কষ্ট করতে চান না।’

তিনি বলেন, ‘মাংস আমদানি করতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার অ্যাম্বাসেডররা প্রায়ই এসে বসে থাকেন। তারা নাকি কম দামে সরবরাহ করবেন। আমি বলি, তাহলে আমাদের যে লাখ লাখ খামারি আছেন; যারা গরু ও ছাগল পালন করছেন, তাদের কী হবে? বিষয়টি চিন্তা করে আমরা এ মুহূর্তে আমদানির পক্ষে নই। আমাদের খামারিরা এবার কোরবানির ঈদের জন্য ১ কোটি ২৪ লাখেরও বেশি গরু-ছাগল প্রস্তুত করছেন। প্রায় ২২ লাখের মতো উদ্ধৃত আছে। তাই কোনোভাবেই আমরা আমদানির পক্ষে না।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল যে প্রোডাকশন করতে যাচ্ছি, কিছু তো আমরা করবোই। এতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু এটিও নিরাপদভাবে করতে হবে। মাটির পাশাপাশি পানিরও উর্বরতা আছে। সেটি আমাদের ভাবতে হবে। কারণ পানির উর্বরতার ওপর মাছের স্বাদ নির্ভর করে। কাজেই সাগর ও নদীর পানি যাতে দূষিত না হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে।’

খাদ্য উৎপাদনকারীদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘মুনাফাকে প্রাধান্য না দিয়ে খাদ্যের যোগানের প্রাধান্য আগে দিতে হবে। এখানে আমাদের নিয়ন্ত্রণ দরকার। মুরগি খামারের ওপর অনেক কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ থাকায় প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের সমস্যায় পড়তে হয়।’

নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রে ভোক্তার স্বার্থ দেখতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কৃষিকে অতিরিক্ত যান্ত্রিকীকরণ করতে গিয়ে আমরা কোনও ক্ষতির সম্মিুখীন হচ্ছি কিনা সেটাও ভাবতে হবে। কৃষকের স্বার্থে দেখতে হবে, তারা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পান।’

কৃষি সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর কৃষি ক্ষেত্রে আমরা যতটুকু এগিয়েছি, পরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে এর সাফল্যের পরিধি আরও বাড়তো। আমাদের কৃষির আধুনিকায়ন সময়ের দাবি। সে অনুযায়ী ২৫ বছর মেয়াদি কৃষি পরিকল্পনা করছে সরকার।’

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে সবচেয়ে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে কৃষি সেক্টরে। স্বাধীনতার পর খাদ্য শষ্য এক কোটি টন, যা বর্তমানে ৫ কোটি টনে ছাড়িয়েছে। তারপরও সংকট আছে। কারণে এখনও আমাদের বিভিন্ন খাদ্য পণ্য আমদানি করতে হয়। বিভিন্ন সময়ে বলা হয়ে থাকে, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি। এটি একটি রাজনৈতিক কথা, যার কোনও ভিত্তি নেই।

ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উৎপাদনে প্রয়োজনীয় আমদানি ও বেশকিছু ক্ষেত্রে কৃষকসহ উৎপাদন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সংকটে রয়েছে। এ থেকে উত্তরণে কৃষি কমিশন গঠন করা দরকার।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন– বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, টিকে গ্রুপের গ্রুপ ডিরেক্টর মোহাম্মদ মোস্তাফা হায়দার।

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রান্তিক কৃষক, খামারি ও কৃষিও মৎস্য সংগঠকরা অংশ নেন। প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষি ক্ষেত্রে সমস্যা ও সমম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তারা।

/এমকে/আরকে/
সম্পর্কিত
ভারতের পেট্রাপোলে সার্ভারে সমস্যা, বেনাপোলে পণ্য আমদানি ব্যাহত
ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থও দেখতে হবে: ফরিদা আখতার
অবৈধ পথে গবাদি পশু ঢুকতে দেওয়া হবে না: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
সর্বশেষ খবর
১০ মাসের মধ্যে এপ্রিলে রফতানি আয় সর্বনিম্ন, ধাক্কা গার্মেন্ট খাতেও
১০ মাসের মধ্যে এপ্রিলে রফতানি আয় সর্বনিম্ন, ধাক্কা গার্মেন্ট খাতেও
নিষেধাজ্ঞার পর এখন মুক্ত রাবাদা
নিষেধাজ্ঞার পর এখন মুক্ত রাবাদা
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ
রাশিয়ার গ্যাস বর্জনের পরিকল্পনা ইউরোপের, বাধ সেধেছে আইনি জটিলতা
রাশিয়ার গ্যাস বর্জনের পরিকল্পনা ইউরোপের, বাধ সেধেছে আইনি জটিলতা
সর্বাধিক পঠিত
এবার আড়াই হাজার ভোট পাওয়া আরিফুরকে মেয়র ঘোষণা করলেন আদালত
এবার আড়াই হাজার ভোট পাওয়া আরিফুরকে মেয়র ঘোষণা করলেন আদালত
ইসলামি ব্যাংকগুলো একীভূত করার প্রস্তাব: সমাধান নাকি নতুন সংকট?
ইসলামি ব্যাংকগুলো একীভূত করার প্রস্তাব: সমাধান নাকি নতুন সংকট?
ঝকঝকে ত্বক পেতে যেভাবে ব্যবহার করবেন চিয়া সিড
ঝকঝকে ত্বক পেতে যেভাবে ব্যবহার করবেন চিয়া সিড
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জানাজা পড়ালেন ছেলে, প্রিয় আইনাঙ্গন থেকে শেষ বিদায়
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জানাজা পড়ালেন ছেলে, প্রিয় আইনাঙ্গন থেকে শেষ বিদায়
বিদেশে পড়াশোনা ও চিকিৎসা খরচ পাঠানো সহজ হলো
বিদেশে পড়াশোনা ও চিকিৎসা খরচ পাঠানো সহজ হলো