উপকূলীয় এলাকার অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে মৎস্যজীবী জেলেদের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী ও দাতাসংস্থার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
সোমবার (২৬ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘মিড-টার্ম প্রোগ্রেস রিভিউ ওয়ার্ক ওয়ার্কশপ অন ফিশারিজ লাইভহুড ইনহেজমেন্ট প্রোজেক্ট ইন দ্য কোস্টাল এরিয়া অফ দ্য বে অফ বেঙ্গল (এফআইএলইপি)’ ও ‘(বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যবর্তী অগ্রগতি পর্যালোচনা)’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে মৎস্যজীবীসহ মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা আসার ফলে সৃষ্ট স্থানীয়দের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে শুঁটকি (শুকনো মাছ) প্রক্রিয়াকরণ ও তেলাপিয়া মাছ চাষ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে বাংলাদেশ সরকার ও জাপান ইন্টারন্যশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, মাছে-ভাতে বাঙালী। খাদ্য উৎপাদনে ধান উৎপাদনের পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা পূরণে মাছ ও প্রাণিসম্পদের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। স্থানীয় মৎস্যজীবী বা জেলেদের সহায়তা প্রদান ও তাদের উৎসাহিত করার মাধ্যমে উপকূলবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে সব উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এই প্রকল্পের প্রাথমিক সাফল্য এবং শক্তিশালী সম্ভাবনা বিবেচনা করে উপদেষ্টা জাইকাকে বাংলাদেশের সব উপকূলীয় জেলায় প্রকল্পের আওতা সম্প্রসারণের কথা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত করার মাধ্যমে আমরা এর সুবিধাগুলো বৃদ্ধি করতে; জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে স্থিতিস্থাপকতা জোরদার এবং টেকসই ব্লু-ইকোনোমি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবো।
উপদেষ্টা সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোনও ক্ষুদ্র জেলে যেন পিছিয়ে না পড়ে এবং উপকূলীয় সম্প্রদায়গুলোর মর্যাদা বৃদ্ধিসহ টেকসই উন্নয়ন করতে পারি তা নিশ্চিত করতে হবে।
মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফের সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সুরিয়া আখতার জাহান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অনুরাধা ভদ্র, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ মিস মিওরা মারি, এফআইএলইপি প্রজেক্টের প্রধান উপদেষ্টা সুগিয়ামা শুঞ্জি। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন প্রকল্পের পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান। এসময় মৎস্য অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।