প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে দুটি বিষয়কে জোর দেবেন। তার একটি হচ্ছে মানবসম্পদ এবং আরেকটি হচ্ছে বিনিয়োগ। মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত, আড়াই দিনের সফরে আজ মঙ্গলবার রাতে জাপানের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধান উপদেষ্টা।
শফিকুল আলম বলেন, ‘‘এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সফর। উনি সেখানে নিকেই ফোরাম—যেখানে এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় নেতারা আসেন, সেখানে কথা বলবেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। এটি ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা জাপানের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। জাইকা এবং জেট্রোর প্রধানদের সঙ্গে ওনার বৈঠক হবে। এছাড়া উনি দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে কথা বলবেন। একটি হচ্ছে মানবসম্পদের ওপরে, সেখানে পুরোটাই ফোকাস হচ্ছে জাপানে কীভাবে আরও দক্ষ জনশক্তি পাঠানো যায়। সে অনুযায়ী সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ‘নাগরিক সেবা’ নিয়ে মিটিংয়ে বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এক লাখ বাংলাদেশিকে জাপানে পাঠানো। সেটা কীভাবে পাঠানো হবে এবং কত দ্রুত পাঠানো যায়, এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হবে। এক্ষেত্রে কোথায় কোথায় আমাদের সমস্যা আছে, সেগুলো কীভাবে খুব দ্রুত দূর করা যায় এবং আপাতত এক লাখ হলেও পরে আরও কত বেশি লোককে পাঠানো যায়, সেক্ষেত্রে একটা বড় জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে যে ভাষা প্রশিক্ষণ। দেখা যাচ্ছে যে আমাদের এখান থেকে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপান যাচ্ছেন সেটি অপর্যাপ্ত। ফলে তারা দক্ষ কর্মী হিসেবে কাজ পাচ্ছেন না। সেজন্য এখানে ভাষা শিক্ষা কীভাবে দ্রুত দেওয়া যায়, জাপানে প্রয়োজন এন ৪, আমাদের এখানে যারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন সেটা এন ৫। আমরা যাতে এন ৪ ভাষা প্রশিক্ষণ দিয়ে জাপানে বিপুল জনগোষ্ঠী পাঠাতে পারি, সেটার ওপরে প্রধান উপদেষ্টার মানবসম্পদ বিষয়ে যে সেমিনার—সেখানে এটি নিয়ে অনেকগুলো মিটিং হবে। এটা ওনার একটা প্রায়োরিটি এরিয়া।’’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘এই বিষয়ে উনি একটা টাস্কফোর্স করে দিয়েছেন। এই টাস্কফোর্স কাজ করছে। সেখানে একটি জিনিস চিহ্নিত করা হয়েছে যে আমাদের জাপানিজ ভাষা প্রশিক্ষক তেমন নেই। দ্রুত এক লাখ লোককে ভাষা প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠাতে প্রশিক্ষক আমাদের নেই। এ জন্য বাইরে থেকে আরও প্রশিক্ষক আনা লাগবে কিনা, জাপান আরও প্রশিক্ষক পাঠাবে কিনা বা আমাদের আশেপাশের দেশে, যেমন- নেপালে কিছু বেশ ভালো প্রশিক্ষক আছেন, সেখান থেকে আনবো কিনা, সেই বিষয়টা এই সফরে বড় আকারে প্রাধান্য পাবে।’
তিনি বলেন, ‘ দ্বিতীয় সেমিনার হচ্ছে বিনিয়োগ নিয়ে। জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের বিষয়ে খুবই আগ্রহী। সেই লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হয়েছে। সেখানে যাতে আরও বেশি জাপানি বিনিয়োগকারী আসে, তাদের জন্য কী কী সুযোগ সুবিধা দেওয়া যায়, সেটি নিয়ে কথা বলবেন। সেখানে আমরা আশা করছি, ৩০০-এর মতো জাপানি বিনিয়োগকারী থাকবে। এটাকেও উনি প্রাধান্য দিচ্ছেন। আমরা জাপানের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ১ বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট আশা করছি। তার মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের জন্য। এছাড়া একটা ইউনিভার্সিটি থেকে প্রধান উপদেষ্টা পুরস্কার পাবেন।’