প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জনগণের সেবক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ৬০তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মেধাবী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন।
সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির উর্ধ্বে থাকতে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবসময় জনগণের সেবা করা প্রজাতন্ত্রের প্রতিটি সদস্যের কর্তব্য। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে প্রত্যেকের দায়িত্ব কিভাবে এই দেশকে আমরা উন্নত করব, সেই চিন্তা করা। জনগণের অর্জিত অর্থ থেকে বেতনভাতা সব কিছু আসে। ওই কৃষক, সাধারণ মানুষ থেকে আসে। সাধারণ মানুষকে কখনও অবহেলা করা যাবে না।
দুর্নীতি দুর করার পাশাপাশি কাজে গতি আনতে ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারে যে বেতন বাড়ানো হয়েছে, পৃথিবীর কোনও দেশে কোনও সরকার এত বেতন এক সঙ্গে বাড়াতে পারে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মানসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিয়েছি, বেতন, প্রমোশনসহ নানা ধরনের অসুবিধা দূর করেছি। প্রশাসনিক বিভিন্ন জটিলতা দূর করে সবাই যেন আত্মতুষ্টি নিয়ে কাজ করতে পারেন, সে ব্যবস্থা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা দুর্নীতির যে বিস্তার দেখছি, এটা মিলিটারি রুল যখন কোনও দেশে থাকে, তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিতে এসেই সেই দুর্নীতির ওপরই আশ্রয় নেন ও দুর্নীতির প্রসার ঘটান, দুর্নীতিকেই তারা নীতি হিসেবে গ্রহণ করেন। একটা স্বাধীন দেশের অগ্রযাত্রা যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবে হয়নি। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা দেখি, মুষ্ঠিমেয় গোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশ এগুতে পারেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে যখন কেউ ক্ষমতা দখল করেন অস্ত্র হাতে নিয়ে, তখন ওই সামরিক জান্তার ক্ষমতা রক্ষা করাই তার মূল কাজ হয়ে দাঁড়ায়। তার কাছে ক্ষমতার চেয়ারটা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, দেশের মানুষ নয়।
প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদের প্রশিক্ষণ জরুরি। প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনও কাজের উৎকর্ষ সম্ভব নয়। এ সময় তিনি বলেন, পড়াশোনার কোনও বয়েস নেই। যত বেশি পড়াশুনা হবে, তত বেশি ভালোভাবে কর্মসম্পাদন করা সম্ভব হবে। এতে দেশ উপকৃত হবে, মানুষ উপকৃত হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদিক।
/পিএইচসি/এমএনএইচ/