তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ জন্য সরকারি-বেসরকারি সংগঠন, সুশীল সমাজ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রবিবার বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, আগামী ৩১ মে ২০১৬ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ বছর বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় নির্বাচন করেছে ‘সাদামাটা মোড়ক-তামাক নিয়ন্ত্রণে আগামী দিন’। তামাকের ব্যবহার কমাতে প্লেইন প্যাকেজিং বা সাদামাটা মোড়ক অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি। এতে সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের মোড়কের রং একই রকম হয়। কোম্পানির লোগো, রং কিংবা ব্র্যান্ডের ছবি এবং কোনও প্রকার প্রচারণামূলক তথ্য থাকে না। ভবিষ্যতে পৃথিবীর অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও সাদামাটা মোড়কের প্রচলন করতে পারব।
স্বাস্থ্যসচিব আরও বলেন, সারাবিশ্বে তামাক নিয়ন্ত্রণের দু’টি প্রমাণিত কার্যকর উপায় হচ্ছে কর বৃদ্ধি ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তামাক পণ্যের কর বৃদ্ধির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।
সারাবিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ দিবসটি উদযাপন করবে। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপনের লক্ষ্য হলো তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট রোগগুলো, আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতি সম্পর্কে জনসচেনতার মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করা।
Global Adult Tobacco Survey-(GATS) ২০০৯ অনুসারে, বাংলাদেশে ৪৩% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন। এ হিসেবে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ১৩ লাখ, যার মধ্যে ২৩% (২ কোটি ১৯ লাখ) ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন এবং ২৭.২% (২ কোটি ৫৯ লাখ) ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন। ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের প্রবণতা নারীদের বেশি। বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৬৩% লোক অর্থাৎ ১ কোটি ১৫ লক্ষ কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। ৪৫% অর্থাৎ প্রায় ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন।অপরদিকে, দ্য টোব্যাকো এটলাস অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৪.৬% পুরুষ ও ৫.৭ % নারী তামাক ব্যবহারের কারণে মারা যায় যা অন্যান্য নিম্ন আয়ের দেশের গড় থেকে বেশি।
জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে সরকার ২০১৩ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটি সংশোধন করে এবং ২০১৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রকাশ করে। আইন ও বিধি বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি, তামাক চাষ নিরুৎসাহিতকরণ নীতি, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি ইত্যাদি প্রণয়নের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়তে পারেন: শিক্ষাখাতে বড় বাজেট আসছে: শিক্ষামন্ত্রী
/জেএ/এমএনএইচ/