বাংলাদেশসহ বিশ্বনেতারা সম্প্রতি আসেম শীর্ষ সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদকে নিন্দা জানিয়ে একটি ঘোষণা দিয়েছেন। এ মাসের ১৫-১৬ জুলাই মঙ্গোলিয়াতে অনুষ্ঠিত এশিয়া ইউরোপের শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত সন্ত্রাসবাদকে নিন্দা জানিয়ে ঘোষণায় বলা হয়, এশিয়া, ইউরোপ ও অন্যান্য স্থানে সংঘটিত ঘটনা যেমন, শীর্ষ সম্মেলন শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সের নিস শহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ ধরনের কাপুরোষচিত ও ঘৃণ্য সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা করি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আসেম শীর্ষ সম্মেলনে তিনটি ঘোষণা গৃহীত হয়েছে এবং এর মধ্যে একটি সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত।
আসেম শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আরও অন্তত ৩২ জন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান অংশগ্রহণ করেন। এশিয়া ও ইউরোপের ৫৩টি দেশ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আসিয়ান এর সদস্য।
ওই কর্মকর্তা বলেন, জাপান এ বিষয়ে প্রথম প্রস্তাব করার পর বাংলাদেশ এটিকে সমর্থন জানায় এবং পরবর্তীতে অন্যান্য দেশ বিশেষ করে ফ্রান্স ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এটিতে জোরালো সমর্থন দেয়।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগে জানানো হয়, জাপান ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুলাই ৪ এক টেলিফোন আলাপে আসেম শীর্ষ সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদবিরোধী পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আলোচনা করার জন্য একমত হয়েছেন এবং সন্ত্রাসবাদ সহ্য করা হবে না মর্মে আসেম থেকে একটি বার্তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছানোর বিষয়েও একমত হয়েছেন তারা।
১৫ জুলাই ফ্রান্সের নিস শহরে একজন সন্ত্রাসী বাস্তিল উৎসব চলাকালে একটি ট্রাক মিছিলের ওপর উঠিয়ে দিলে ৮৪ জন নিহত হন। এর কয়েক ঘণ্টা পরে শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয় এবং ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়।
বর্তমানে সন্ত্রাসবাদ চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে এ বার্তা সব দেশের জন্য প্রযোজ্য বলে মনে করেন কর্মকর্তাটি।
তিনি বলেন, ঘোষণায় বলা হয়, আমরা, এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলির রাষ্ট্র এবং সরকার প্রধানরা, ইউরোপিয়ান কমিশনের সভাপতি এবং আসিয়ানের মহাসচিব ১৫-১৬ জুলাই মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরের শীর্ষ সম্মেল থেকে এ ধরনের সন্ত্রাসবাদের চরম নিন্দা জ্ঞাপন করি।
আসেম শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, সুইজারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জোহান স্নেইডার-আম্মান, মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি তিন কাও, ভারতের উপরাষ্ট্রপতি এম হামিদ আনসারি ও ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সভাপতি ডোনাল্ড টাস্ক ও ইউরোপিয়ান কমিশনের সভাপতি জিন ক্লদ জাঙ্কারের সাথে বৈঠক করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক নিউইয়র্কে জাতিসংঘে গত সোমবার বলেন, সন্ত্রাসবাদকে বিবেচনায় রেখে জন্য বড় পরিসরে এবং নতুন ধারণা নিয়ে যুব সম্প্রদায়ের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, সহিংস উগ্রবাদ ও চরম মতাবলম্বী যার প্রভাব যুব সম্প্রদায়ের ওপর পড়েছে, সে চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকবিলা করতে হবে।
বাংলাদেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বয়স ২৫ বছরের নিচে এবং ২০৩০ নাগাদ এর মোট জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশ অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম হবে। বিশ্বে কী ঘটছে, সে বিষয়ে ধারণা রাখবে এবং আন্তর্জাতিক মূল্যবোধ ও উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।একই সাথে ২০৩০ সাল নাগাদ ৪৮ শতাংশ জনগণ শহরে বাস করবেন।
তিনি বলেন, শহরে যে যুব সম্প্রদায় বাস করেন, তাদের আকাঙ্ক্ষা,মূল্যবোধ ও প্রবণতা কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।
- সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত: মোদি
- বাংলাদেশ-ভারতের অর্থনীতি মজবুত ভিত্তি পাবে: প্রধানমন্ত্রী
/এসএসজেড/এবি/আপ-এমও