রাজধানীর বনানীতে কড়াইল বস্তির আগুনের ঘটনায় অন্তত পাঁচ শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে লাবনী আক্তার (২৩) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছে কয়েকটি শিশু। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস।
রবিবার বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত। প্রায় সোয়া এক ঘন্টা পর বিকাল ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি মো. আবদুল হালিম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের বারিধারা, কুর্মিটোলা, মোহাম্মদপুর ও ফুলবাড়িয়া সদর দফতর থেকে ১৪টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে বস্তিতে ডাম্পিং ও সার্চিং চলছে। ঘটনাস্থলে কেউ আটকে পড়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বা অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেননি তিনি।
বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, বউবাজার লেপ-তোশকের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। পরে আগুন দ্রুত বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে পাঁচ শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় বস্তির অধিকাংশ বাসিন্দা কাজের জন্য বাসার বাইরে ছিলো।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হবে। আগুনের কারণও ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান বলেন, ‘আমরা একজন আহত হওয়ার তথ্য পেয়েছি। অন্তত চার থেকে পাঁচশ ঘর পুড়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের পাঁচদিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বস্তির ভেতরে পানির গাড়ি প্রবেশ করানো যায় না। তারপরও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।’
২০১২ সালে কড়াইল বস্তির জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। এসময় চারশতাধিক ঘর উচ্ছেদ করা হয়। এর প্রতিবাদে বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করলে পরবর্তীতে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়। কড়াইল বস্তিতে সব নিম্ন আয়ের মানুষ বসবাস করে। তবে একটি প্রভাবশালী মহল তাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে থাকে।
/এআরআর/এএআর/আপ-এসএনএইচ/