বাংলাদেশের যৌথনদী কমিশনের সদস্য মোহাম্মাদ মোফাজ্জল হোসেন ও ভারতের সদস্য জে চন্দ্রশেখর আইয়ারের মধ্যে কারিগরি পর্যায়ে বৈঠক বসছে বৃহস্পতিবার (১৮ মে)। ওই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত অভিন্ন ছয়টি নদী থেকে ভারত কী পরিমাণ পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তা জানতে চাইবে বাংলাদেশ। এই ছয়টি নদী হলো মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতি, ধরলা ও দুধকুমার। পানিসম্পদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ছয়টি নদীর ওপরে কোনও বাঁধ আছে কিনা, ভারত পানি প্রত্যাহার করছে কিনা, দেশটির কাছে তা আগেও জানতে চেয়েছি। কিন্তু তারা এর কোনও উত্তর দেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সূত্র থেকে জেনেছি, মনু, মুহুরি, খোয়াই ও গোমতি নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে পানি সরিয়ে নিচ্ছে ভারত। তবে কী পরিমাণ পানি প্রত্যাহার করছে, তা আমাদের জানা নেই। এবারের বৈঠকে আমরা বিষয়টি আবার তুলব।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে এ ছয়টি নদী নিয়ে দুই দেশ তথ্য-উপাত্ত দেওয়া-নেওয়া করে। পরবর্তী সময়ে এ নদীগুলোর ওপর বাঁধ আছে কিনা বা পানি উত্তোলন করা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে বাংলাদেশ একাধিকবার জানতে চেয়েছে। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি।
২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চারটি শীর্ষ সম্মেলন হয়েছে। ২০১০ ও ২০১১ সালে শেখ হাসিনা ও মনমোহন সিং-এর মধ্যে এবং ২০১৫ ও ২০১৭ সালে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই চারটি শীর্ষ সম্মেলনে যে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, ওই বিবৃতিগুলোতেই এই ছয়টি নদীর পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে বলা হলেও তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি।
গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন বৈঠক
আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য দুই দেশের মধ্যে কারিগরি পর্যায়ের বৈঠকের আগের দিন বুধবার বাংলাদেশের যৌথনদী কমিশনের সদস্য মোহাম্মাদ মোফাজ্জল হোসেন ও ভারতের সদস্য জে চন্দ্রশেখর আইয়ারের মধ্যে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করার জন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৯৬ সালে গঙ্গা চুক্তি হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর তিন বার দুই দেশের মধ্যে বৈঠক হয়। গত বৈঠকটি কোলকাতায় মার্চ মাসে হয়েছে বলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান।
ভারতের প্রতিনিধি দলসহ দুই পক্ষ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি কী পরিমাণ আছে, তা পরিমাপ করবে মঙ্গলবার। এরপর বুধবার এ বৈঠক হবে।
/এমএনএইচ/