জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইনের খসড়া তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অনুমোদনের জন্য রবিবার (২৭ আগস্ট) কমিশনের সভায় খসড়াটি তোলা হয়। কমিশনারদের মতামত পাওয়ার পর আগামী ১৫ দিনের মধ্যে খসড়াটি চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ রবিবার এ তথ্য জানান।
হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘কমিশনারদের এবং একজন আইন বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়ার পর খসরাটি জাতীয় সংসদে পাশের জন্য আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’ খসড়া আইনে প্রথমে সিটি করপোরেশন এলাকা ও পরে জেলাগুলোতে আসন বণ্টনের বিধান রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ইসি’র কর্মকর্তারা জানান, খসড়া আইনে ভোটার সংখ্যা, মোট জনসংখ্যা ও প্রশাসনিক কাঠামোর ভিত্তিতে সংসদীয় আসন পুনর্নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। তবে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে আয়তন বিবেনায় না রেখে শুধু ভোটার ও জনসংখ্যাকে বিবেচনায় নেওয়ার প্রস্তাব আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলমান অবস্থায় তাদের মতামত ছাড়াই এ আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের নেতৃত্বাধীন ‘আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটি’ এই সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত আইনের খসড়া প্রস্তুত করেছে। ওই কমিটির সদস্যরা ৮টি সভা করেছে। এর মধ্যে দুটি সভায় সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম অংশ নেন।
খসড়া আইনের ৬ ধারায় বলা হয়েছে, সংসদের আসনসমূহ ভোটার সংখ্যা এবং জনসংখ্যার সমবিভাজনের ভিত্তিতে প্রথমে জেলা পর্যায়ে (জেলা পর্যায়ের সংজ্ঞায় ‘সিটি করপোরেশন’ উল্লেখ করা হয়েছে) বণ্টন করা হবে এবং এরপর জেলাসমূহে বরাদ্দকৃত আসনসমূহের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
জেলা পর্যায়ের আসন বণ্টন প্রসঙ্গে খসড়া আইনের ৮ ধারায় বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলায় ন্যূনতম একটি আসন হবে। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যে কোনও সর্বনিম্ন প্রশাসনিক ইউনিট সংযোজন করা যাবে।
সীমানা পুনর্নির্ধারণ প্রসঙ্গে খসড়া আইনের ৯ ধারায় বলা হয়েছে, সর্বশেষ আদমশুমারি প্রতিবেদনে উল্লেখিত জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও মোট আয়তনের ভিত্তিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে জেলার জন্য বণ্টনকৃত আসনের সীমানা পুননির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন প্রশাসনিক ইউনিটের ভৌগলিক অখণ্ডতা, আয়তন, প্রশাসনিক সুবিধা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যতদূর সম্ভব অক্ষুন্ন রাখার বিষয়ে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে। খসড়া আইনে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের পর তা জনসম্মুখে প্রকাশ এবং এর ওপর মতামত ও আপত্তি জানানোর বিধান রাখা হয়েছে।