X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন শেখ রেহানা

জুলফিকার রাসেল, নিউ ইয়র্ক থেকে
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:২৯আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৫২

ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার ছোট বোন শেখ রেহানা বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। শেখ রেহানা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, ‘তুমি ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারো, আর ১০ লাখ মানুষকে খাওয়াতে পারবা না?’ এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার বোনকে বলেন, ‘ঠিকই তো। ১৬ কোটি মানুষকে পারলে, ১০ লাখকে কেন খাওয়াতে পারবো না?’
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পর নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্য পাঠ করার পর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এসময় এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দরিদ্র দেশ হলেও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় তিনি বাংলাদেশের ভূঁয়সী প্রশংসা করেছেন। উনি আশ্বাস দিয়েছেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণের পদক্ষেপ নেবেন। এ বিষয়ে যথাসাধ্য করার চেষ্টা করবেন তিনি।’
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, চীনের সঙ্গে কি কোনও আলোচনা হয়েছে? এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব রাষ্ট্রদূতরা স্পটে গেছেন। সবাই সহানুভূতিশীল হয়েছেন। ভারত-চীন সবাই এগিয়ে এসেছে। তারা ত্রাণ পাঠিয়ে সহায়তা করেছে। মিয়ানমারের সঙ্গে ৫টি দেশের সীমান্ত রয়েছে। প্রত্যেকের সঙ্গে শরণার্থী নিয়ে সমস্যা আছে। তারাও সবাই সহানুভূতিশীল।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় দুর্যোগ কমিটি আছে। তারা কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রশিক্ষিত ৪শ ভলেনটিয়ার ও বিএনসিসি'র একশ সদস্যসহ মোট ৫শ ভলেনটিয়ার আছে তারা সেখানে দিনরাত পরিশ্রম করছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দলের পক্ষ থেকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জয়েন্ট সেক্রেটারি নানক অনেকে সেখানে আছেন। তারা সার্বক্ষণিক কাজ করছে। দলের পক্ষ থেকে ৪শ ভলেনটিয়ার কাজ করছে। আমাদের দলের অনেকেই ওখানে যাচ্ছে কাজ করছে। লঙ্গরখানায় তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদের আমরা খাদ্য দিচ্ছি, ওষুধ দিচ্ছি। আমাদের যেসব রিলিফ আসছে তা চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আসছে। সেনাবাহিনী সেগুলো রিসিভ করে ডিসির কাছে দিচ্ছে। এছাড়া নেভি, কোস্টগার্ড দিনরাত কষ্ট করে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় কাজ করছে। কিন্তু এত লোক আসলে ওখানে ধারণ করার মতো জায়গা নেই। একটা দ্বীপ ঠিক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমি টাকা দিয়েছি সেখানে শেল্টার করার জন্য। যে যেখান থেকে পারছে সাহায্য করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে ঢুকছে তাদের আইডি কার্ড ও নামের তালিকা করা হচ্ছে। ৫০টি বুথ বসিয়ে এ কাজ করা হচ্ছে। যাতে তারা বলতে না পারে যে যারা এসেছে তা মিয়ানমারের না। আজ সকালেও আমি গোয়েন্দা বাহিনীল সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, আজও ১৫শ জন এসেছে। লোক আসার পরিমাণ কমলেও প্রতিদিনই কিছুসংখ্যক মানুষ আসছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানের আরও উন্নতি করতে পারবো। তখন বিমান এখানে আসার সুযোগটা পাবে। আমরা আপনাকে বলতে পারি, আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এর আগে তো এয়ারপোর্টে কার্গো ভিলেজ ছিল না, কার পার্কিং ছিল না। ১৯৯৬ সালে আমি সরকারে এসে একে একে সব করি। সেই কার্গো ভিলেজে কয়েক বছরের পুরনো মালপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। এমনকি, মাল রাখার ট্রেগুলোও ছিল না, র‌্যাকগুলো ছিল না। তারা ক্ষমতায় থাকতেই সব শেষ করে গেছে। এসব আবার গুছিয়ে নিয়ে কাজ করতে হয়েছে আমাদের। একদিকে আমরা এসব কাজ করছিলাম, অন্যদিকে ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে বিএনপির খুন-মারামারি, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা, গাড়ি পোড়ানো, সারাদেশে অরাজক অবস্থা তৈরি করা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মোকাবিলার কাজও আমাদের করতে হয়েছে। পাশাপাশি দেশের উন্নয়নও করে যেতে হচ্ছে। আমরা আশা করি, এটা (নিউ ইয়র্কে বিমান ফ্লাইট) হয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী আত্মজীবনী লিখবেন কিনা, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের বিষয়ে বলব, আমার জীবনটাই তো নাই। আমরা তো খরচের খাতায়। ’৭৫-এ আমার পরিবারের সবাইকেই হত্যা করেছে। আমরা দুই বোন বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গেছি। এখন আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের জন্য কাজ করতে। এই জীবনে কী পেলাম বা না পেলাম, তা নিয়ে চিন্তা করি না; এটা আমাদের চিন্তাও নাই। আমরা কেবল কতটুকু করতে পারলাম, দেশকে কতটুকু দিতে পারলাম তাই চিন্তা করি। আত্মজীবনী লেখাটেখার চিন্তা-ভাবনা আমার নাই।’
ছবি: নাসিরুল ইসলাম

আরও পড়ুন-



‘শান্তি-নিরাপত্তায় বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে’

/এমএ/টিআর/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মেসির জোড়া গোলে মায়ামির আরেকটি জয় 
মেসির জোড়া গোলে মায়ামির আরেকটি জয় 
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ৫ ইউনিয়নে চলছে ভোট গ্রহণ
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ৫ ইউনিয়নে চলছে ভোট গ্রহণ
যাদের স্যালাইনে বাঁচে প্রাণ, তাদের মজুরি বাড়ে না
১৬ শ্রমিকের উৎপাদিত স্যালাইন দিয়ে চলছে ৯ জেলার হাসপাতালযাদের স্যালাইনে বাঁচে প্রাণ, তাদের মজুরি বাড়ে না
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
সর্বাধিক পঠিত
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে