মঙ্গলবার সকাল থেকেই ৩০০ ফিট রাস্তার পাশে সাদা রঙের এক্স করোলা গাড়িটি পড়ে ছিল। আশেপাশে কোনও দোকানপাট নেই। পথচারীরা ধরেই নিয়েছিলেন মালিক হয়তো আশেপাশে কোনও কাজে রয়েছেন। তাই গাড়ি নিয়ে কারও মাথাব্যথাও ছিল না। সন্ধ্যায় ৩০০ ফিট রাস্তায় টহল দিচ্ছিলেন খিলক্ষেত থানার এসআই এম এ জাহেদ। বিকালে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে একটি গাড়ির নম্বরসহ এক ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনেছিলেন তিনি। তাই গাড়িটি দেখে তার কাছে গিয়ে আগে তিনি মালিকের খোঁজ করেন। কাউকে না পেয়ে থানায় ডিউটি অফিসারকে ফোন করে কন্ট্রোল রুমের মেসেজটি পুনরায় শোনেন এসআই। এর গাড়ির নম্বর মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত হন এটাই সেই গাড়ি। এভাবেই উদ্ধার করা হয় নিখোঁজ সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামানের গাড়িটি।
ধানমন্ডি এলাকা থেকে সাবেক এই রাষ্ট্রদূত নিখোঁজ হয়েছেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।
খিলক্ষেত থানার এসআই জাহেদ বলেন, ‘গাড়িটি অক্ষত অবস্থায় রাস্তার পাশে পার্কিং করা ছিল। কোনও দুর্ঘটনা বা অন্য কিছু হয়নি। লকড অবস্থায় ছিল। লোকজনের উপস্থিতিতে গাড়িটি খুলে ভেতরে শুধু গাড়ির কাগজপত্র পাওয়া গেছে। পরে সেসব জব্দ তালিকা করে খিলক্ষেত থানায় নেওয়া হয়েছে।’
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ধানমন্ডির ৯/এ বাসা থেকে বিমানবন্দর যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হন মারুফ জামান। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে তার মেয়ে সামিহা জামান ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা ও ধানমন্ডির থানার এসআই তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তার গাড়িটি ৩০০ ফিট এলাকায় পাওয়া গেছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার সর্বশেষ লোকেশন উত্তরা ও দক্ষিণখান এলাকায় পাওয়া গেছে।’
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, অক্ষত অবস্থায় গাড়িটি পাওয়া গেছে মানে তিনি কোনও দুর্ঘটনায় পড়েননি। অথবা গাড়ি চোর বা ছিনতাই চক্রের হাতেও পড়েননি। তাহলে তারা গাড়িটি রাস্তার ধারে ফেলে রাখতো না। এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে।
নিখোঁজ ফারুক জামানের ছোট ভাই রিফাত জামান বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না আসলে কী হচ্ছে? আমার ভাই নিজেই ড্রাইভ করে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। তিনি দুর্ঘটনায় পড়েছেন-এমন আশঙ্কা করেছিলাম প্রথমে। এখন তো অন্য কিছু মনে হচ্ছে। লোকজন বলাবলি করছে, ফোর্স ডিজ-অ্যাপিয়ারেন্স হতে পারে। কিন্তু আমার ভাই তো কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত না।’
প্রসঙ্গত, মারুফ জামান ২০০৮ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি কাতারে রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাজ্যে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি অবসর নেন।
আরও পড়ুন:
সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান নিখোঁজ, গাড়ি উদ্ধার