X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৭ জুনের সমাবেশে কী বলবেন বঙ্গবন্ধু তা নিয়ে চলে জল্পনা-কল্পনা

উদিসা ইসলাম
০৬ জুন ২০২০, ০৮:০০আপডেট : ০৬ জুন ২০২০, ০৮:০০

৭ জুনের পত্রিকায় প্রকাশিত আগের দিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত মশাল মিছিলের ছবি ১৯৭২ সালের ৭ জুন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন, তা নিয়ে  ক’দিন ধরে শহরে নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা চলছিল। ৭ জুনের  দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়, শহরে চলমান এই জল্পনা-কল্পনা প্রত্যেকেই নিজ নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে করছিলেন। ব্যবসায়ী মহল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন সবচেয়ে বেশি। তারা ভাবছেন, বঙ্গবন্ধু হয়তো তার ভাষণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হ্রাস করার পদক্ষেপ হিসেবে দ্রব্যমূল্য নির্দিষ্ট করে দেওয়ার নির্দেশ দেবেন। তার ফলে তাদের অতিমুনাফা করার পথ হয়তো বন্ধ হবে। ফলে অসাধু ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক বিরাজ করছিল।

৭ জুনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি ততক্ষণে শেষ হয়েছে। ছয় বছর আগে ১৯৬৬ সালের ৭ জুনের সঙ্গে এবারের ৭ জুনের পার্থক্য হলো— আজ  থেকে ছয় বছর আগে মহান বিপ্লবের সেই দিনটি ঘুরে ফিরে এসেছে। শোষণের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত নির্যাতিত বাঙালি জাতি উচ্চকিত হয়ে স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতার বজ্রকণ্ঠের সংকল্পে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের সেই দিন ছিলেন স্বৈরাচারী আইয়ুবের কারাগারে বন্দি। কিন্তু আজ চিরভাস্বর দেশ বাংলার প্রাণ প্রিয় মানুষের মধ্যে অনন্ত কর্মের প্রেরণা হিসেবে উপস্থিত হবেন তিনি। যে স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে এনেছেন, সেই মুক্ত দেশে তিনি জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছেন, উদ্যানের সমাবেশে তিনি নতুন কথা শোনাবেন।

৭ জুন প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকার খবর জনসভা সার্থক করে তুলতে নেওয়া প্রস্তুতির শেষ পর্বে  ৬ জুন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমের সামনে বিরাট মশাল মিছিল বের হয়। মিছিলে প্রায় অর্ধশতাধিক নারী ছাড়াও গণ্যমান্য অনেক গণপরিষদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। মশাল মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান আব্দুর রাজ্জাক, গণপরিষদ সদস্য  সাজেদা চৌধুরী, বদরুন্নেসা আহমেদ, আইভি রহমান এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বর অনেকেই। এই মিছিলে মশাল ছাড়াও বেশকিছু প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— ‘দুষ্কৃতকারীরা হুঁশিয়ার’, ‘এবারের সংগ্রাম দেশ গড়ার সংগ্রাম’, ‘৭ জুনের জনসভায় যোগ দিন’।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর গৃহীত জাতীয়করণ কর্মসূচি নিয়ে তখনও দ্বিধাবিভক্ত আমলাসমাজ। ব্যাংক ব্যবসায় স্থবিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছিল, যার কারণ হিসেবে সরকারের জাতীয়করণ নীতিকে অলাভজনক বলে প্রমাণ করার ষড়যন্ত্রকে উল্লেখ করা হয়। একত্রিত হয়ে ব্যাংকের এক শ্রেণির আমলারা উঠে পড়ে লেগেছেন বলে পূর্বদেশের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। জানা গেছে, ইতোমধ্যে রূপালী ব্যাংকের কর্মচারী ও অফিসারদের মধ্যে বিক্ষোভ এবং ব্যবসায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

৭ জুন প্রকাশিত পূর্বদেশ পত্রিকার প্রথম পাতায় ছিল জনসভাকে ঘিরে আয়োজন

পহেলা মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত জাতীয়করণ নীতির ভিত্তিতে সাবেক মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, অস্ট্রেলিয়া ব্যাংক লিমিটেড এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড একত্রিত করে রূপালী ব্যাংক গঠন করা হয়। এই তিনটি ব্যাংককে একত্রিত করা সত্ত্বেও পূর্ব থেকে বিরাজিত বেতন স্কেলের বৈষম্য এখনও বহাল রাখা হয়েছে। ফলে একই পদে কর্মরত অফিসার ও কর্মচারীদের মাঝে বেতনের তারতম্যে চাপা বিক্ষোভ ধুমায়িত হচ্ছিল। রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা নিয়োগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন অফিসারদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। সাবেক মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেই একীভূত ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও  জেনারেল ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ দুটো ব্যাংকের অনুরূপ অভিজ্ঞ কর্মদক্ষতাপূর্ণ যেসব অফিসার আছেন, তাদের সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগানোর কোনও ব্যবস্থা তখনও করা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর সবসময় শঙ্কার জায়গা— কোথাও ষড়যন্ত্র চলছে কিনা, সেই প্রশ্ন আবারও সামনে এনে দিয়েছিল দৈনিক পূর্বদেশের এই প্রতিবেদন।

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
রাহমানের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’, ভিডিও করলেন মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!