‘পৃথিবীর বুকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই হয়তো সৃষ্টিকর্তা শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে শেখ হাসিনা একে একে জাতির পিতার স্বপ্নগুলো বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অচিরেই আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে পারবো।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উত্তরা সোনারগাঁ জনপথে ৭৪টি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে ‘পরম্পরা কানন’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রাজধানীর উত্তরা সোনারগাঁ জনপথ রোডের জমজম টাওয়ার এলাকায় দুদিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটি শুরু করেছিলেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সপরিবারে নিহত হন তিনি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের শিরায় কি রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে না! এই বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুকে খুন করতে পারে এটা আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি। তবে পৃথিবীর বুকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই হয়তো সৃষ্টিকর্তা শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। তিনি যখন দেশে ফেরেন, বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি কেঁদেছিলেন। তখন মানুষ বলছিল, শেখের বেটি আসছে, দেশ এবার ঘুরে দাঁড়াবে। সেটিই হয়েছে। দেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। একে একে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করে চলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি যখনই বিদেশে গিয়েছি, আমাকে শুনতে হয়েছে তোমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাবিটা কী? কীভাবে এত দ্রুত দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন? আমি বলেছি তার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত, তিনি দেশকে ভালোবাসেন, দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এটাই তার মূল শক্তি। বাংলাদেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে চারবার নির্বাচিত করেছেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও সিদ্ধান্তে শেখ হাসিনা ব্যর্থ হননি। সব সিদ্ধান্তে সফলতা পেয়েছেন। রোহিঙ্গাদের প্রধানমন্ত্রী আসতে অনুমতি দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ১৭ কোটি মানুষ যদি ভাত খাবার পায় তবে রোহিঙ্গারাও পাবে। যে কারণে আজ তিনি বিশ্ব মানচিত্রে মাদার অব হিউমিনিটি।’
করোনাও আমাদের আটকাতে পারেনি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বলার চেষ্টা করেছে এই করোনাকালে আমাদের পারক্যাপিটাল, জিডিপি কমে যাবে। কিন্তু কোনোটাই কমেনি। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা, নেতৃত্ব ও গুণাবলির কারণে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যতদিন আছেন, ততদিন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। আর অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে না। ঝুড়িবিহীন তলার দিন শেষ।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ৭৪তম জন্মবার্ষিকীতে আমরা আজ ৭৪টি বৃক্ষরোপণ করবো। গ্রিন ঢাকা গড়তে বৃক্ষরোপণের কোনও বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করে মীর জাফররা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছিল। রাজাকারদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল। আওয়ামীপন্থীদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। শেখ হাসিনা সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরেন, ভোটের ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম শুরু করেন। আজ শেখ হাসিনা শুধু দেশের নেত্রী নন, তিনি বিশ্বনেত্রী।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সংরক্ষিত ৩ আসনের সংসদ সদস্য শবনম শারমিন শিলা প্রমুখ।