X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়ছে সেনাবাহিনীর দেওয়া আগুনে : অ্যামনেস্টি

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০০:৪৬আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০০:৫০

অ্যামনেস্টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী যে পরিকল্পিতভাবেই রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে, তার অনেক প্রমাণ তাদের কাছে আছে।
স্যাটেলাইট থেকে তোলা রাখাইন রাজ্যের অনেক ছবি বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি বলছে, সেখানে গত তিন সপ্তাহে আশিটিরও বেশি স্থানের বিশাল এলাকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের সহযোগী স্থানীয় গোষ্ঠীগুলো এই কাজ করছে বলে অ্যামনেস্টি তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাখাইনে মিয়ানমার সরকারের পোড়ামাটি নীতির ওপর সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করে যে রিপোর্ট দিয়েছে তা পড়লে বেশ বিচলিত হতে হয়।
স্যাটেলাইটে তোলা ছবি এবং স্যাটেলাইটে আগুন শনাক্ত করতে পারে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া ছবি ও মানুষের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি দেখতে পেয়েছে যে, গত ২৫ আগস্টের পর থেকে মোট ৮০টি জায়গায় ব্যাপক মাত্রায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এমন সংঘবদ্ধ দলগুলো একসঙ্গে মিলে এই জ্বালাও পোড়াও চালাচ্ছে।
তারা গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে এবং পলায়নপর মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে।
অ্যামনেস্টির একজন কর্মকর্তা তিরানা হাসান বলেছেন,  ‘এটা পরিষ্কার যে সুপরিকল্পিতভাবে এসব সহিংসতা চালানো হচ্ছে।’ প্রমাণ হিসেবে অ্যামনেস্টি বলছে, যেসব জায়গায় আগুন দেওয়া হয়েছে, সেই জায়গাগুলোর আগের চার বছরের স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে তারা কোনও অগ্নিসংযোগের ঘটনা দেখতে পাননি। বেছে বেছে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতেই আগুন দেওয়া হয়েছে।
যেসব গ্রামে রোহিঙ্গা এবং রাখাইনরা পাশাপাশি বাস করে, সেখানে রাখাইন বাড়িগুলো আগুনের হাত থেকে বেঁচে গেছে বলে অ্যামনেস্টি এই রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।
ওদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আজ আরও  একদফা বেড়েছে।
লন্ডনে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বর্মী বাহিনীর সহিংসতা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে হবে।’
টিলারসন বলেছেন, ‘অং সান সু চি যে কঠিন এবং জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। জাতিগত পরিচয়ে বাইরে গিয়ে মানুষের সঙ্গে আচরণ কী হবে, আমরা সবাই সেটা জানি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাই সমর্থন করে। কিন্তু এই সহিংসতা অবশ্যই থামাতে হবে, মানুষের ওপর এই নির্যাতন থামাতেই হবে।’ অনেকেই বলছেন এটা জাতিসত্ত্বা নির্মূলের ঘটনা, একেও থামাতে হবে বলে টিলারসন উল্লেখ করেন।
লন্ডনে এই সংবাদ সম্মেলনে টিলারসনের পাশে ছিলেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। 
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে মিয়ানমারের কার্যত সরকারের প্রধান নেতা অং সান সু চি-কেই তার নৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অং সান সু চি যেসব মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন, যেভাবে তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, সেই জন্য তার প্রতি আমার প্রশংসা কারও কথায় কমে যাবে না। আমি জানি, বিশ্বব্যাপী বহু মানুষও একইভাবে তার গুণমুগ্ধ। কিন্তু রাখাইনের মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্য মিস সু চি-কে এখন তার নৈতিক কর্তৃত্ব ব্যবহার করতে হবে।’

সূত্র: বাসস

আরও পড়ুন:

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বের নেতা হতে চান এরদোয়ান?

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এক উপজেলায় ১৩ প্রার্থীর সবাই আ. লীগের
এক উপজেলায় ১৩ প্রার্থীর সবাই আ. লীগের
শিরোপাজয়ী দল কি কোটি টাকা পাবে?
ফিরছে সুপার কাপশিরোপাজয়ী দল কি কোটি টাকা পাবে?
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে ইউক্রেন: গোয়েন্দা কর্মকর্তা
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে ইউক্রেন: গোয়েন্দা কর্মকর্তা
আ.লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার
আ.লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ