শিশুর সামগ্রিক বিকাশে ও শিশুদের চাপমুক্ত লেখাপড়া শেখানোর লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করলো ‘সহজপাঠ’ নামের একটি স্কুল। শনিবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে স্কুলটির পরিচয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার, বাংলা একাডেমির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান, মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ফুলকির অধ্যক্ষ শিলা মোমেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পবিত্র সরকার বলেন, ‘সহজপাঠ বিষয়টি সহজ মনে হলেও কিন্তু কাজটি কঠিন। আমি আশা করি, সেই কঠিন কাজটি সহজপাঠ সহজেই করবে। কলকাতাতেও এই রকম কিছু বিদ্যালয় চালু করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পর সেটি পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘শিশুদেরকে আনন্দের সঙ্গে শেখানো খুবই দরকার। না হলে তারা শেখার বদলে সবই হারায়। জ্ঞানশুন্য হয়ে পড়ে। উৎসবের মধ্যদিয়ে সকলের অংশগ্রহণে শিশুরা শিখবে এটাই ভালো। তবে এই কাজটি চালিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন।’
এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমরা সবসময়ই চেয়েছি শিক্ষার সঙ্গে আনন্দের যোগ হবে, সংস্কৃতির যোগ হবে। কিন্তু আমরা উল্টোপথে হাঁটছি। কিন্তু সহজপাঠ যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। আশা করি, সহজপাঠ ভালো কিছু করে দেখাবে।’
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘এখনকার শিশুদের লেখাপড়ার জন্য এতটাই চাপ দেওয়া হয় যে, তারা চাপের মধ্যে থাকতে থাকতে মেধাশুন্য হয়ে পড়ে। তাদের চিন্তা করার শক্তি থাকে না। এখন তো জিপিএ পাঁচ পাওয়ার জন্য সব বাবা-মা তাদের বাচ্চাকে দৌড়ানি দেন। কিন্তু এটা করতে গিয়ে ওই শিশুর যে কী ক্ষতি করছে এটা তারা বোঝেন না। আমি আশা করি, সহজপাঠ এই আনন্দের সঙ্গে চাপমুক্ত লেখাপড়া শিখিয়ে আভিভাবকদের চোখ খুলে দেবে।’
প্রতিষ্ঠানের সদস্য সচিব বেলাল সিদ্দিক জানান, সহজপাঠ এর কার্যক্রমের জন্য ইতোমধ্যে শিক্ষক বাছাই করা হয়েছে, যারা শিশুদের আনন্দের মাধ্যমে শেখাবে। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা হলো- লালমাটিয়া, বি- ব্লক ৭/১৭।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সহজপাঠ স্কুল কেবলই লেখাপড়া শেখানো নয়, এটি একটি আন্দোলন। সবাই দোয়া করবেন, সহযোগিতা করবেন, আমরা যেন এই আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখতে পারি।
অতিথিদের বক্তব্যের মাঝে-মাঝে স্কুলটির শিশুরা গান পরিবেশন, নৃত্য ও নাটিকা প্রদর্শন করে।