X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন শিক্ষকেরা!

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৮ এপ্রিল ২০১৮, ২৩:৩২আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০১৮, ২৩:৪১

 

শিক্ষকদের অনশন (ফাইল ছবি) বেসকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবিতে আবারও আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকেরা। সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও তা বাস্তবায়নের কোনও উদ্যোগ দৃশ্যমান না হওয়ায় আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকার সমর্থিত শিক্ষক নেতারা।
শনিবার (২৮ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হক।
ঢাকাসহ সারাদেশে আগামী ১০ মে ও ২৫ জুন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে অবহিত করার জন্য স্মারকলিপি পাঠানো হবে।
শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হক বলেন, ‘গত ১৪ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কয়েক লাখ শিক্ষকের সমাবেশে সাতদিনের সময় নিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়নে কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। তাই আমরা ঘরে বসতে থাকি পারি না।’

শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে রাজনীতি করা হতে পারে এমন তথ্য থেকে গত ৪ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে একটি নির্দেশনা পাঠানো হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালকের কাছে। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে শিক্ষক আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মাউশিকে ব্যবস্থা নিতে এই পত্র দেওয়া করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর আন্দোলন ঠেকাতে গত ১৩ মার্চ রাতে সরকার সমর্থিত এই শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ আসাদুল হককে শাহবাগ থানা পুলিশ তুলে নিয়ে যান। অনুমতি ছাড়া শহীদ মিনারে শিক্ষকদের সমাবেশ না করার শর্তে আসাদুল হকসহ আরও দুই নেতাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। নির্ধারিত ওই কর্মসূচি পালনে পরদিন ১৪ মার্চ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে সময় বেঁধে দিয়ে সমাবেশের অনুমতি দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন বলেও আশ্বস্ত করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলে শিক্ষকদের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকদের এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের নেতাদের দিকে পানির বোতল ছুড়েও মারেন।

এই ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর শনিবার (২৮ এপ্রিল) শিক্ষকদের ১০টি সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে, আমলারা সরকারকে দাবির বিষয়ে বিভ্রান্ত করছেন। সরকারকে মিসগাইড করছেন।

শিক্ষকরা জানান, আন্দোলন নিয়ে শিক্ষকরা রাজনীতি করবেন না। কেউ রাজনীতি করলে তার বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হক ছাড়াও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দীক, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ কারিগরি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি ফকরুদ্দীন জিগার, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহসীন রেজা, মহাসচিব ইয়াদ আলী খান, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ এম এ আওয়াল সিদ্দিকী, বিলকিস জামান, সৈয়দ জুলফিকার আলম, মো. আজিুল ইসলাম, মো. আবুল কাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষকদের ১১ দফা
১) শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ;
২) পাঁচ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও বাংলা নববর্ষ ভাতা দেওয়া ও পূর্ণাঙ্গ উৎসবভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান;
৩) ইউনেসকোর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষা খাতে জিডিপির ৬ শতাংশ এবং জাতীয় বাজেটে ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা;
৪) নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা;
৫) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ পেনশন চালু করা;
৬) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সরকারি শিক্ষকদের সমান বেতন স্কেল প্রদান;
৭) শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব দফতরে বেসরকারি শিক্ষকদের ৩৫ শতাংশ প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া;
৮) সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা বাস্তবায়ন;
৯) অনুপাত প্রথা বিলুপ্ত করে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি;
১০) কারিগরি শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি কারিগরি ও ভোকেশনাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং
১১) জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন তরান্বিত করতে হবে।

 

/এসএমএ/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মামুনুল হকের জন্য কাশিমপুর কারাগারের সামনে ভক্তদের ভিড়
মামুনুল হকের জন্য কাশিমপুর কারাগারের সামনে ভক্তদের ভিড়
লন্ড‌নের মেয়র প‌দে হ্যাটট্রিক জ‌য়ের প‌থে সা‌দিক খান
লন্ড‌নের মেয়র প‌দে হ্যাটট্রিক জ‌য়ের প‌থে সা‌দিক খান
থ্রিলার বনাম হরর: প্রেক্ষাগৃহে নতুন দুই সিনেমা
এ সপ্তাহের ছবিথ্রিলার বনাম হরর: প্রেক্ষাগৃহে নতুন দুই সিনেমা
অপতথ্য ও অর্ধসত্যের মাঝে মুক্ত গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ
অপতথ্য ও অর্ধসত্যের মাঝে মুক্ত গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা